দেশের খবর
‘FIR’ পর্নগ্রাফি সাহিত্য নয়, হাইকোর্টের মন্তব্যে বিতর্কের ঝড়
বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: ‘এফআইআর’ (FIR)। যে কোনও ঘটনায় পুলিশের কাছে প্রথমে অভিযোগ জানাতে গিয়ে যে ডায়রি করা হয় তাকে আমাদের দেশে এফআইআর বা ফার্স্ট ইনফর্মেশন রিপোর্ট বলা হয়। আর এই FIR নিয়ে এক মন্তব্যের জেরে দেশজুড়ে ছড়াল বিতর্ক। সৌজন্যে এলাহাবাদ হাইকোর্ট।
জানা গিয়েছে, সম্প্রতি একটি গার্হস্থ্য হিংসার মামলা চলছিল কোর্টে। সেই মামলার শুনানিতে এলাহাবাদ হাইকোর্ট যা বলল তা নিয়ে রীতিমত তোলপাড় শুরু হয়ে গিয়েছে দেশে। এফআইআর করুন কিন্তু তাতে বিশাল বর্ণনা করে আপনার বিরুদ্ধে ঘটা ঘটনার বিবরণ না দিলেও চলবে।
এই কথা বলতে গিয়ে আদালত যা বলেছে তা অত্যন্ত বিতর্কিত। একটি ডোমেস্টিক ভায়োলেন্সের মামলা করেছিলেন এক মহিলা। তাতে স্বামী ও তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাকে কীভাবে অত্যাচার করেছে সেই কথা বলে এক বিশাল এফআইআর দায়ের করেন। তা নিয়েই কথা বলতে গিয়ে আদালত বলেছে ‘এফআইআর কোনও পর্ণগ্রাফির সাহিত্য’ নয় সেখানে এত বিষদ বিবরণ না দিলেও চলবে। স্বাভাবিকভাবেই এ নিয়ে তৈরি হয়েছে বিতর্ক।
আরও পড়ুন: টাকা দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী, কিছু বুঝে ওঠার আগেই অ্যাকাউন্ট থেকে গায়েব ৪ লাখ
ঘটনাটি এলাহাবাদ হাইকোর্টের। উত্তরপ্রদেশের হাপুর জেলা থেকে একটি গার্হস্থ্য হিংসার মামলা চলছিল সেখানে। ঘটনায় অভিযুক্তের গ্রেফতারির কার্যকর করতে অস্বীকার করেছে আদালত।
জানা গিয়েছে, অভিযোগকারী মহিলা তার স্বামী, শ্বশুর এবং দেওর বিরুদ্ধে তার উপর যৌন হয়রানি এবং যৌতুকের জন্য চাপ দেওয়ার অভিযোগ করেন। এফআইআর-এ শাশুড়ির নামও দিয়েছেন তিনি। অভিযোগকারী পিলখুয়া থানায় একটি এফআইআর দায়ের করেছেন, যেখানে তিনি ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৮-এ, ৩০৭(খুনের চেষ্টা), ১২০-বি (অপরাধী ষড়যন্ত্র), ৩২৩ (স্বেচ্ছায় আঘাত করা) সহ একাধিক ধারার অধীনে তাদের এফআইআর দায়ের করেন।
এই মামলায় বিচারপতি রাহুল চতুর্বেদী বলেন, “এফআইআর-এ আপনার উপর বা আপনার বিরুদ্ধে কি অত্যাচার হয়েছে তা বলবেন কিন্তু বিশাল বিবরণ করে সবকিছু লেখার প্রয়োজন নেই। এটি পর্গ্রাণফিক সাহিত্য নয়”।
অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করার পর, নিম্ন আদালতে বিচার শুরু হয়, যেখানে অভিযুক্তরা এই মামলা নিষ্পত্তির আবেদন করেন। এলাহাবাদ হাইকোর্ট অন্যদের মুক্তির আবেদন গ্রহণ করে নেয় তবে অভিযোগকারীর স্বামীর আবেদন খারিজ করে দেয় এবং তাকে নিম্ন আদালতে বিচারের জন্য হাজির হতে বলে।
আরও পড়ুন: লাভ ম্যারেজে বাধ্যতামূলক হচ্ছে বাবা-মায়ের সই, আইন আসছে খুব শীঘ্রই
মামলার তদন্তকালে দায়রা আদালতে অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে প্রমাণিত হয়। এরপর রিভিউয়ের জন্য আবেদনকারীরা হাইকোর্টে আবেদন করেন। এর প্রতিক্রিয়ায়, এলাহাবাদ হাইকোর্ট আরও বলেছে যে যৌতুক-সম্পর্কিত অভিযোগের সঙ্গে যখন দাম্পত্য বিরোধের বিষয় উঠে আসে তখন অনেকক্ষেত্রেই বাড়িয়ে চড়িয়ে বলা হয়। আদালত নির্দেশ দেয় যে এফআইআর দায়েরের পরে দুই মাসের “কুলিং পিরিয়ড” এর মধ্যে কোনও গ্রেফতার করা উচিত নয়।