দেশের খবর
বাঘের মুখে একরত্তি, সন্তানকে বাঁচাতে সাহসী পদক্ষেপ মায়ের
বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: কথায় বলে সন্তানের জন্য মায়ের থেকে বড় শুভাকাঙ্ক্ষী পৃথিবীতে আর কেউ নেই। সন্তানের ভালো-মন্দ থেকে শুরু করে সুখে-দুঃখে সবসময় ভরসার সাথ দেন মা। নিজের কোলের সন্তানকে বাঁচাতে একজন মা যে মৃত্যুরও পরোয়া করেন না ফের মিলল তার প্রমাণ।
বুধবার সর্বভারতীয় এক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর থেকে জানা গিয়েছে, ক্ষুধার্ত চিতাবাঘের সঙ্গে মরণ-বাঁচন লড়াই করে চিতার মুখ থেকে নিজের তিনবছরের শিশুকন্যাকে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরিয়ে আনলেন একজন মা। এমনই শিউরে ওঠার মতন ঘটনাটি ঘটেছে মহারাষ্ট্রের চন্দ্রপুর এলাকায়।
জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার মহারাষ্ট্রের চন্দ্রপুর এলাকার দুর্গাপুর কমপ্লেক্সে নিজের বাড়ির উঠোনে সবার সঙ্গে বসে রাতের খাবার খাচ্ছিল ওই বছর তিনের শিশু। আচমকা একটি চিতাবাঘ এসে তাকে মুখে তুলে নিয়ে জঙ্গলের দিকে যেতে থাকে। বাঘের মুখে একরত্তি! ভয়ানক এই দৃশ্য দেখে আর থেমে থাকতে পারেননি তার মা Jyoti Pupalwar। ঘটনার আকস্মিকতায় হতচকিত হয়ে গেলেও বিস্ময়ের ঘোর কাটিয়ে মেয়েকে বাঁচাতে লাঠি নিয়ে চিতাবাঘের পিছু ধাওয়া করেন ওই মহিলা। কিছুক্ষণের মধ্যেই বাচ্চাটিকে ছেঁড়ে জঙ্গলে পালিয়ে যায় চিতাবাঘটি। নিশ্চিন্তে মেয়েকে কোলে তুলে নেন তিনি।
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা নিয়ে বড় ঘোষণা সুপ্রিম কোর্টের
বর্তমানে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে ওই শিশুটি। তার অবস্থা স্থিতিশীল বলেই জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এই বিষয়ে ওই মহিলা বলেন, ”মঙ্গলবার রাতে মেয়েকে উঠোনে খেতে দিয়ে আমি স্নান করতে চলে গিয়েছিলাম। ফিরে এসে দেখি মেয়েকে মুখে করে তুলে নিয়ে যাচ্ছে চিতাবাঘ। এরপরই লাঠি নিয়ে আমি ওই চিতাবাঘের পিছু-পিছু ধাওয়া ককরি। ভয় পেয়ে চিতা মুখ থেকে আমার মেয়েকে ফেলে দিলেও আমি তারপরেও তাকে আক্রমণ করতে থাকি। যদিও চিতাবাঘটি পালটা আমায় আক্রমণ করতে আসেনি। ভয় পেয়ে সে জঙ্গলে পালিয়ে যায়।”
জানা গিয়েছে, বাঘে মানুষ তুলে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা এই প্রথম নয়। এর আগেও দুই শিশু সহ মোট ৪ জন বাঘের হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন। সবমিলিয়ে ১৫ জন তারমধ্যে রয়েছে ৬ শিশু যারা বাঘের হানা প্রাণ হারিয়েছেন। শুধু তাই নয়, স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন এই নিয়ে একই জায়গায় ১৬ বার বাঘের হামলার ঘটনা ঘটল।
আরও পড়ুন: জাতীয় প্রযুক্তি দিবস: পোখরাণ সফল উৎক্ষেপণে বিজ্ঞানীদের শ্রদ্ধা প্রধানমন্ত্রীর
এদিকে এই ঘটনায় বনদফতরের আধিকারিকদের দিকে গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এর আগেও বাঘের হানায় মানুষের প্রাণ হারানোর ঘটনায় প্রতিবাদে বনদফতরের আধিকারিকদের অফিসে ভাঙচুর চালানো হয়েছিল এবং মানুষখেকো বাঘ মেরে ফেলার দাবি তুলেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তারপরে কেটে গিয়েছে অনেকটা সময়। বারবার একই ঘটনা ঘটলেও প্রশাসনের নিস্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।