দেশের খবর
সোশ্যাল মিডিয়ায় নয়, রাস্তায় নেমে আন্দোলনের বার্তা অভিষেকের
বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: উত্তর-পূর্ব ভারত জয় এখন পাখির চোখ তৃণমূলের। আর সেই উদ্দেশ্য সফল করতে একদিনের অসম সফরে গিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
বুধবার একদিনের অসম সফরে গিয়ে উত্তর-পূর্বের এই রাজ্য থেকে BJP-কে উৎখাত করার ডাক দিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক (TMC All India General Secretary)। তিনি বলেন, ”বিজেপিকে হারানোই আমাদের লক্ষ্য। CAA নিয়ে বাংলা-অসমে ভিন্ন সুর শাহের। বিজেপির অন্দরেই CAA নিয়ে দ্বিমত রয়েছে। সিনেমাকে ট্যাক্স ফ্রি করেছে বিজেপি। অথচ দাম বাড়িয়েছে জীবনদায়ী ওষুধের। লোকসভা নির্বাচনে অসমে তৃণমূল ১০ পেলে দিল্লিতে কুর্শি নড়ে যাবে। বিজেপির অন্দরেই NRC,CAA নিয়ে দ্বিমত রয়েছে।”
একইসঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্য, ”চোখে চোখ রেখে কথা হবে। ২০২৪-এ মসনদ উলটাতেই হবে। যাই করে নিক, আমরা ভয় পাই না। মরণপন লড়াই হবে। শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত জান দিয়ে লড়াই করব। রাস্তায় নেমে লড়াই হবে। মার খাব কিন্তু মাথা নোয়াব না। তৃণমূল ঝুঁকবে না। সীমান্তে সেনাদের যেমন মানসিকতা, আমাদেরও তেমন মানসিকতা। তৃণমূল ময়দান ছেড়ে পালিয়ে আসে না।”
আরও পড়ুন: Breaking News: অর্জুন সিংয়ের বাড়ির সামনে বোমাবাজি
এদিন অসমের কর্মীসভা থেকে তিনি আরও বলেন, ”যতদিন না পর্যন্ত BJP সরকারকে উৎখাত করতে পারব, ময়দান ছেড়ে পালাব না। আপনারা যখন আমায় ডাকবেন পাশে পাবেন। খালি লড়াইয়ের জন্য অসমে পা রাখেনি তৃণমূল কংগ্রেস। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে কংগ্রেস ছেড়ে এসেছেন। টুইটার-ফেসবুকে লড়াই করি না আমরা। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ময়দানে নেমে, মার খেয়ে, তবেই লড়াই হবে। তবেই পেট্রল-ডিজলের দাম কমবে।”
এরপরই তিনি কংগ্রেস এবং তৃণমূল কংগ্রেসের মধ্যে তফাৎ ব্যাখ্যা করেন। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বলেন, ”একবার যখন কোথায় পৌঁছে যায় তৃণমূল কংগ্রেস সেখানে ঘাঁটি গেড়ে তবেই ছাড়ে। সোশ্যাল মিডিয়ায় লড়াই করে না তৃণমূল কংগ্রেস। মাঠে নেমে, ঘাম-রক্ত ঝরিয়ে লড়াই করে। মার খায়, রক্ত ঝরে, তাও মাথা ঝোঁকায় না তৃণমূল। কংগ্রেসের মতো আমাদের দমিয়ে রাখা যাবে না।”
এদিন প্রথমে কামাক্ষ্যাদেবীর মন্দিরে পুজো দেন তিনি। তারপর গুয়াহাটিতে পার্টির নেতা–কর্মীর সামনে ভাষণ দেন। সেখানে তিনি বলেন, ”এতদিনে প্রমাণ হয়ে গিয়েছে, ধমকে চমকে তৃণমূল কংগ্রেসকে শায়েস্তা করা যাবে না। দিল্লি থেকে বিজেপির নেতারা এলে এঁরা পায়ে পড়ে যায়। ওঁরা কোনও বড় ব্যাপার নয়। সবাই সমান। ফুলিয়ে–ফাঁপিয়ে দেখানো হচ্ছে। সুস্মিতা কেন কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে এসেছেন? কারণ কংগ্রেসে থেকে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করার সুযোগ নেই। বিজেপিকে গদিচ্যুত করা কোনও বিরাট কাণ্ড নয়। আসলে ওরা শক্ত চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েনি।”
আরও পড়ুন: অর্জুনের ময়নাতদন্তের রিপোর্টকে হাতিয়ার করে অমিত শাহের পদত্যাগ দাবি অতীন, ফিরহাদের
এখানে কী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আসবেন? নেতা–কর্মীদের এই প্রশ্ন অনেকদিনের। সেটা বুঝতে পেরে এদিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ”তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও কিছুদিনের মধ্যে অসমে আসবেন। বাংলায় কন্যাশ্রী হতে পারলে অসমে কেন হবে না? পশ্চিমবঙ্গে মহিলাদের আর্থিক সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। কেন অসমের মহিলারা তা পাবেন না?’”
আরও পড়ুন: আলুর দাম কমাতে মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের আর্জি কৃষিমন্ত্রীর
আগামী বছর মেঘালয়–ত্রিপুরায় বিধানসভার নির্বাচন। মেঘালয়ে এখন তৃণমূল কংগ্রেসই প্রধান বিরোধী দল। এই বিষয়ে তিনি বলেন, ‘’নির্বাচনের অঙ্কে ত্রিপুরায় তৃণমূল কংগ্রেস এখন দ্বিতীয় স্থানে আছে। ওই দুই রাজ্যে আগামী বছর সরকার গড়ার সংকল্প নিতে হবে। অসমের ১০টি লোকসভা আসন তৃণমূল কংগ্রেসের চাই। কাজটা মোটেই কঠিন নয়। বিজেপিকে জব্দ করা সম্ভব।”