যন্ত্রণা সহ্য না করতে পারায় "ইচ্ছামৃত্যুর" আবেদন জানালেন, অস্ট্রেলিয়ার এক যুবতি
Connect with us

বিদেশের খবর

যন্ত্রণা সহ্য না করতে পারায় “ইচ্ছামৃত্যুর” আবেদন জানালেন, অস্ট্রেলিয়ার এক যুবতি

এই রোগে ত্বক অতিরিক্ত নমনীয় শুরু থেকে অস্থি সংযোগ গুলি অতিরিক্ত পরিমাণে সক্রিয় হয়ে পড়ে

Dwip Narayan Chakraborty

Published

on

ইচ্ছামৃত্যু
Rate this post

বেঙ্গল এক্সপ্রেস: “ইচ্ছা মৃত্যু” একটা মানুষ অনেকটা যন্ত্রণার মধ্যে থাকলে এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হন। হ্যাঁ ঠিক এমনটাই দুঃখ জনক ঘটনা ঘটেছে অস্ট্রেলিয়ার ২৩ বছরের লিলি তাই এর সাথে।

 

ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, লিলির দেহে সমস্যা শুরু হয়েছিল ১৭ বছর বয়স থেকেই। তার ওই কিশোরী বয়সে ইলার্স ড্যানলোস সিনড্রোম ( ই.ডি.এস) ধরা পড়েছিল তার। এই রোগে ত্বক অতিরিক্ত নমনীয় শুরু থেকে অস্থি সংযোগ গুলি অতিরিক্ত পরিমাণে সক্রিয় হয়ে পড়ে। ছাড়াও এই রোগের কারণে রক্তনালিত সমস্যা দেখা দেয়। ইডিএস রোগ ধরার বছর খানেক এর মধ্যে লিলি তাই এর শ্বাসযন্ত্রের একাংশ সংক্রমণ ধরা পড়ে। এইরকম অসুবিধার কারণে তিনি প্রাকৃতিকভাবে মল এবং মুত্র ত্যাগ করতে পারতেন না।

Advertisement

আর এইসবের কারণে তিনি যদি কোন খাবার কিংবা পানিও পান করতেন তাহলে সঙ্গে সঙ্গে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়তেন। শেষ কিন্তু না, এত কিছু ঘটার পর তার মেরুদন্ডের ভেতর থেকে তরল পদার্থ বার হওয়া শুরু হয়। আর এইসবের কারণে তার হাঁটাচলা পুরোপুরি ভাবে বন্ধ হয়ে যায়। এইসব রোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য চিকিৎসা শুরু হলেও লিলির শারীরিক অবস্থা বিশেষ কোনো উন্নতি হয়নি। দক্ষিণ অ্যাডিলেড এর ফ্লিন্ডার্স মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসা হওয়ার জন্য ভর্তি হন তিনি। এবং সেখানে, ই. ডি. এস এর পাশাপাশি অটো- ইমিউন অটোনমিক গেগলিওনোপ্যাথি ( এ.এ.জি) সমস্যায়ও ভুগছিলেন লিলি। এই রোগের মূল উদ্দেশ্য রোগীর স্নায়ুতন্ত্র কে আঘাত করা যার কারণে রোগী ধীরে ধীরে শয্যাসাঁই হয়ে পড়েন।

 

ব্যথা এবং যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য লিলিকে অ্যাডিলেডের হাসপাতালে প্যালিয়েটিভ এ রাখা হয়েছিল। তাতেও অবস্থার বেশি কিছু হেরফের হয়নি। লিলির শরীর আরো খারাপ হতে থাকে।আর এত কিছু সহ্য না করতে পারার জন্য লিলি “সেচ্ছামৃত্যুর” আবেদন জানায়। লিলি বলেন যে,”এই যন্ত্রণা এতটাই অসহ্য যে, বেঁচে থাকার কোন অর্থ নেই। তা ছাড়া, নিজের হাতে নিজেকে শেষ করতে চেয়েছিলেন লিলি”।

Advertisement

আরও পড়ুনদেওয়ালে টাকার টোপ! তৃণমূল প্রার্থীর প্রচার ঘিরে সরগরম ভাতার

 

“ডেলি মেল” এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই বছর জানুয়ারি থেকে ২৮ জন নাগরিককে স্বেচ্ছামৃত্যুর অনুমতি দিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার সরকার। তবে মৃত্যুর আগে যদি সে নিজের সিদ্ধান্ত বদলাতে চায় তাহলে সে সেটি করতে পারবে। এছাড়া মৃত্যুর আগে আর শেষ ইচ্ছে গুলো পূরণ করবার জন্য সরকার অনুমতি দিয়ে থাকেন। তার এই স্বেচ্ছামৃত্যুর আগে কিছু শেষ ইচ্ছে ছিল যার মধ্যে তিনি চেয়েছিলেন যে সমুদ্র সৈকতে ঘুরতে যাবেন। লিলির ইচ্ছা অনুযায়ী অ্যাম্বুলেন্সে পরে হসপিটালের বেডেই সমুদ্রের ধারে নিয়ে গিয়েছিল হসপিটাল কর্তৃপক্ষ এবং তার পরিবারেরা। সেই গাড়ির মধ্যে থেকেই তিনি সমুদ্র দেখেন এবং ফ্রেঞ্চ ফ্রাই খেয়েছিলেন। তার সাথে তার পছন্দমত নরম পানিও পান করেছিলেন। তার এই সিদ্ধান্ত, তার পরিবারেরর কাছে যথেষ্ট নয়। কিন্তু মেয়েকে তিলে তিলে মরে যাওয়া দেখার থেকে তার এই সিদ্ধান্ত সকলের মেনে নিয়েছে। কারণ তারা চায় না লিলি আরো যন্ত্রণা পাক। তাই লিলিকে কষ্ট পেতে দেখার চেয়ে এই সিদ্ধান্তই ঠিক বলে মনে করেছেন তার পরিবারের লোকেরা।

Advertisement
Ads Blocker Image Powered by Code Help Pro

Ads Blocker Detected!!!

We have detected that you are using extensions to block ads. Please support us by disabling these ads blocker.