সংসার চালাতে করেছেন সাইকেল মেরামতের কাজ, সফল IAS অফিসারের হার না মানার গল্পকে কুর্নিশ জানাচ্ছে নেটপাড়া
Connect with us

দেশের খবর

সংসার চালাতে করেছেন সাইকেল মেরামতের কাজ, সফল IAS অফিসারের হার না মানার গল্পকে কুর্নিশ জানাচ্ছে নেটপাড়া

Parama Majumder

Published

on

Rate this post

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিসেস (UPSC) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া এবং আইএএস (IAS) অফিসার হওয়া কতটা কঠিন তা আমরা সবাই জানি। ইউপিএসসি পরীক্ষায় র‍্যাঙ্কের উপর ভিত্তি করে আইএএস, আইপিএস, আইইএস, বা আইএফএস অফিসারের পদ পাওয়া যায়।

ভারতের প্রশাসনিক বিভাগের উচ্চ পদস্থ এই আধিকারিক হতে শুধু মনের জোর, অদম্য ইচ্ছা থাকলেই হবে না। একজন যোগ্য আইএএস অফিসার হতে গেলে আপনাকে হতে হবে অত্যন্ত পরিশ্রমী এবং ধৈর্যশীল। ঠিক যেমন বরুণ কুমার বার্নয়াল। অত্যন্ত পরিশ্রম করে যিনি আজ একজন সফল আইএএস অফিসার হয়েছেন।

দেশের প্রশাসনিক বিভাগের শীর্ষ আধিকারিক পদে বসার জন্য তাঁকে কম চড়াই-উতরাই পেরোতে হয়নি। একজন IAS অফিসারের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ দেখতে যতটা উজ্জ্বল লাগে ঠিক ততটাই কঠিন সংগ্রাম থাকে তাঁর জীবনে সফলতার পিছনে।

আরও পড়ুন: ভালো কাজ করলেই এই হোটেলে মিলবে বিনামূল্যে এক বেলার খাবার!

Advertisement

কেমন ছিল IAS Varunkumar Baranwal-এর সফলতার পিছনের ইতিহাস? সম্প্রতি এই অফিসারের শেয়ার করা একটি ইউটিউব ভিডিয়ো ব্যাপক ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। মুহুর্তের মধ্যে ভাইরাল হওয়া ওই আইএএস অফিসারের জীবনের কঠিন সংগ্রামের ভিডিয়ো মন জিতে নিয়েছে অসংখ্য নেটনাগরিকদের।

ভাইরাল হওয়া ওই ইউটিউব ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, Varun Barnwal যিনি মহারাষ্ট্রের Boisar এলাকার একজন স্থায়ী বাসিন্দা। ভিডিয়োতে Varun Barnwal জানিয়েছেন, Boisar-এই তাঁর বাবার সাইকেল মেরামতির একটি ছোটো দোকান ছিল। সেই দোকান থেকে যা উপাজর্ন হত তা দিয়ে কোনও রকমে তাঁদের সংসার চলে যেত।

এত পর্যন্ত সবকিছু ঠিকঠাক থাকলেও বিপত্তি বাধে Varun এর মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়ার ১০ দিন পর। হঠাৎ মারা যান তাঁর বাবা। বাবা তথা পরিবারের একমাত্র রোজগেরেকে হারিয়ে মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে পরিবারের। জানা গিয়েছে, মাধ্যমিকে টপার হলেও বাবার আকস্মিক মৃত্যুতে ভেঙে পড়েন বরুণও। একসময় ঠিক করেই নিয়েছিলেন যে, তিনি আর পড়াশোনা করবেন না। কিন্তু ঈশ্বর হয়তো সেটা চাননি। তাইতো নানা প্রতিকূলতা পেরিয়েও নিজের লড়াই চালিয়ে গিয়েছিলেন বরুণ।

Advertisement

এমনকি স্কুলের পড়া শেষ করে কীভাবে কলেজে ভর্তি হবে তার জন্য তৈরি হয় অনিশ্চয়তা! সেই সময় কলেজে ভর্তির জন্য ১০ হাজার টাকা যোগার করতে ব্যর্থ হন বরুণ। তখন ত্রাতা হিসেবে এগিয়ে আসেন তাঁর বাবার চিকিৎসা যিনি করেছিলেন সেই ডাক্তার। তারপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি বরুণকে। কলেজে ভর্তি হওয়ার পর থেকে একের পর এক পরীক্ষায় দুর্দান্ত ফলাফল করে সে।

আরও পড়ুন: উর্ধ্বমুখী পেট্রোলের দাম! অভিনব উপায়ে বিয়ের মণ্ডপে হবু বর

তবে শুধু পড়াশোনায় চালায়নি সে, একই সঙ্গে বাবার দোকানও সামলাতো সে। দোকান থেকে যা আয় হতো তা দিয়ে নিজেদের বাড়ি সারাই করে বরুণ। তাঁর দিদিও সেই সময় প্রাইভেট টিউশন পড়ানো শুরু করেন। এরপর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে পড়ার জন্য ভর্তি হয় বরুণ। সেখানেও দেখা দেয় টাকার সমস্যা। যদিও স্কলারশিপের প্রাপ্ত টাকায় সেই সময় আর্থিক সঙ্কট কিছুটা মেটে তাঁর। শুধু তাই নয়, ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে পড়ার সময় কলেজের ফি, যাবতীয় বইপত্র কিনতে বরুণকে তাঁর শিক্ষক এবং বন্ধুরা সাহায্য করত।

জানা গিয়েছে, ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া শেষ করে একটি প্রাইভেট ফার্মে চাকরি পান Varunkumar Baranwal। তখন জীবনে কিছুটা আর্থিক স্বচ্ছলতা ফিরে আসলেও থেমে থাকেননি বরুণ। এরপর সে শুরু করে দেয় সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় বসার জন্য প্রস্তুতি। ২০১৩ সালে সে প্রথম UPSC পরীক্ষায় বসেন এবং ৩২ র‍্যাংক করেন।

Advertisement

বর্তমানে গুজরাটে কর্মরত বরুণ জানিয়েছেন, UPSC পরীক্ষায় বসার জন্য প্রস্তুতি হিসেবে তিনি কোচিং ক্লাস করতেন। কিন্তু তার জন্য তাঁকে এক পয়সাও খরচ করতে হয়নি। কারণ, তাঁর বাড়ির আর্থিক অবস্থার কথা জেনে কোনও শিক্ষকই তাঁকে টাকাপয়সা দেওয়ার জন্য কোনওরকম চাপ দিতেন না।

আরও পড়ুন:  অবিশ্বাস্য ঘটনা, পুরুষশাসিত সমাজে ছদ্মবেশে এই নারী

IAS Varunkumar Baranwal-এর এই সাফল্য আরও একবার প্রমাণ করে দেয় যে, কঠোর পরিশ্রম আর অধ্যাবসায়ের প্রতি টান থাকলে কোনও প্রতিকূলতাই জীবনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে না। প্রতিকূলতাকে জয় করার মানসিকতা থাকাটাই বড় কথা!

Advertisement
Ads Blocker Image Powered by Code Help Pro

Ads Blocker Detected!!!

We have detected that you are using extensions to block ads. Please support us by disabling these ads blocker.