খেলা-ধূলা
রেলকে বেলাইন করে ৪০ বছর পর কলকাতা লিগ চ্যাম্পিয়ন মোহনবাগান

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: গত চার দশক ধরে দর্শকরা মাঠে এসেছেন আর হতাশা নিয়েই বাড়ি ফিরেছেন। তবু ‘অলীক’ স্বপ্ন দেখা ছাড়েননি সর্মথক থেকে শুরু করে কর্মকর্তারাও। অবশেষে ৪০ বছর পর তাদের সেই স্বপ্ন বাস্তব হল। ৪০ বছর পর কলকাতা লিগ চ্যাম্পিয়ন হল মহমেডান স্পোর্টিং ক্লাব।
বৃহস্পতিবার যুবভারতীতে রেলওয়ে এফসি-কে ১-০ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হল সাদা-কালো ব্রিগেড। ম্যাচের এক মাত্র গোলটি করেন মার্কাস জোসেফ। এই নিয়ে ১২ বার কলকাতা লিগ জিতল মহমেডান। ১৯৮১ সালে শেষবার কলকাতা লিগ জিতেছিল মহমেডান। তার পর থেকে এতদিন খেতাব নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নিয়েছিল মোহনবাগান ও ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু দু’দলই আইএসএল খেলায় কলকাতা লিগে এবার দল নামায়নি। সেই সুযোগকেই কাজে লাগিয়ে ট্রফি নিজেদের তাঁবুতে নিয়ে গেল কলকাতার তৃতীয় প্রধান। ১৯৮১ সালে শেষবার লিগ জয়ী দলের তিন সদস্য প্রশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায়, অলোক মুখোপাধ্যায় এবং কৃষ্ণেন্দু রায় বৃহস্পতিবার মাঠে বসেই মহমেডানের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার দৃশ্য দেখতে দেখতে ফিরে যাচ্ছিলেন ৪০ বছর আগের দিনটিতে।
মহমেডান কর্তা কামরুদ্দিন বলছিলেন, ‘ক্লাবের প্রশাসনে আসার প্রথম দিন থেকেই লক্ষ্য ছিল লিগ চ্যাম্পিয়ন হব। কিন্তু বছরের পর বছর ধরে ব্যর্থ হতে হতে ভেবেছিলাম, মৃত্যুর আগে হয়তো লিগ জেতা আমার আর দেখে যাওয়া হবে না। সমর্থকদের সঙ্গে আমারও সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। আমি খুবই খুশি।’ যদিও বৃহস্পতিবার রেলওয়ে এফসি’র বিরুদ্ধে মাঠে নামার আগেই লিগ জয়ের আগাম প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিল সমর্থক থেকে শুরু করে সাদা-কালো কর্মকর্তারাও। ম্যাচের তিন মিনিটের মাথায় ত্রিনিদাদ টোবাগোর স্ট্রাইকার মার্কাস জোসেফ গোল করতেই বিজয় উল্লাস শুরু হয়ে যায়। ফয়জলের থেকে বল পান বৌমাস। ছোট্ট স্লাইডিঙে বল যায় মার্কাসের কাছে। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়েই যুবভারতীর সাদা-কালো গ্যালারিকে রঙিন করে তোলেন মার্কাস।
কিন্তু ম্যাচের বয়স যত এগিয়েছে ততোই পাল্টা আক্রমণে উঠেছে রেল। একাধিক গোলের সুযোগ পেয়েও গিয়েছিল তারা। সেই গোলের সুযোগ কাজে লাগাতে পারলে হয়তো এই বছরও ব্যর্থ হয়েই ফিরতে হত মহমেডানকে। তবে এবার আর কোনও অঘটন ঘটেনি। তবে বৃহস্পতিবার মহমেডান যে ফুটবল খেলেছে, সেই ধারা বজায় থাকলে আসন্ন শিল্ড ও আই লিগে কপালে দুঃখ আছে সাদা-কালো ব্রিগেডের। তবে এই মুহূর্তে ফুটবলার, কর্তা, সদস্য-সমর্থকরা এইসব নিয়ে ভাবতে রাজি নয়। বরং সেলিব্রেশনেই মেতে থাকতে চান তারা। খেলার শেষে ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস এবং দমকলমন্ত্রী সুজিত বসুর হাত থেকে পুরস্কার নেওয়ার সময় সমর্থকদের সঙ্গে ফুটবলার, কর্মকর্তারাও উচ্ছ্বাসে ভাসছিলেন। আর এই বহু প্রতীক্ষিত সাফল্যকে স্মরণীয় করে রাখতে শুক্রবার সকাল ১০টায় ক্লাব প্রাঙ্গণে পতাকা উত্তোলন করা হবে বলেও জানিয়ে দিয়েছেন কর্মকর্তারা।