আন্তর্জাতিক
পদ্মা সেতুর নাট খুলে দুর্বিষহ জীবন, ক্ষমা চাইছেন বাংলাদেশি টিকটকার

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: একটা নাট বোল্টু তাঁর জীবনে এইভাবে ঝড় বইয়ে দেবে, তা কল্পনাও করতে পারেননি টিকটকার। গত ২৫ তারিখ উদ্বোধন হওয়া বাংলাদেশের গর্বের পদ্মা সেতুর নাট বোল্টু খোলার অপরাধে ইতিমধ্যেই বাংলাদেশ পুলিশ গ্রেফতার করেছে সেই দেশের টিকটকার বায়োজিদ তালহাকে। ‘সামান্য’ এই বিষয়টি এত বড় আকার নেবে, তা তিনি কল্পনাও করতে পারেননি। তাই দেরীতে বোধোদয় হওয়ায় গোটা ঘটনার জন্য অনুতপ্ত এবং ক্ষমাও চেয়ে নিয়েছেন তালহা।
বাংলাদেশের এক স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের খবর অনুযায়ী তালহা গোটা ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে বলেছেন, ‘নেহাত শখের জন্য আমি মাঝেমধ্যেই টিকটক ভিডিও তৈরি করতাম। ঘটনার আগের রাতে একটি গাড়ি নিয়ে পদ্মা সেতুতে গিয়েছিলাম। সেতুর উপরে যাওয়ার সময় কাতার নিবাসী প্রবাসী এক বন্ধুও আমার সঙ্গে ছিল। আবেগের বশেই কাজটা করে ফেলেছিলাম। গোটা ঘটনার জন্য আমি খুবই দুঃখিত। এবং ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।’ কিন্তু ক্ষমা চাইলেও এত তাড়াতাড়ি তিনি যে রেহাই পাবেন না, তা জানিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ। তারা জানিয়েছে, পুরো বিষয়টিই আদালতের বিচারাধীন। এই ব্যাপারে আদালতই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।
উল্লেখ্য গত ২৫ তারিখ পদ্মা সেতু উদ্বোধন হওয়ার পরই নাট বোল্টু খোলার ভিডিও ভাইরাল হয়ে যায়। যা নিয়ে বাংলাদেশ তো বটেই, গোটা বিশ্বেই শোরগোল পড়ে যায়। সদ্য উদ্বোধন হওয়া পদ্মা সেতুর নাট বোল্টু একজন যুবক কী করে হাতে করে খুলে ফেললেন, সেই নিয়ে গোটা বিশ্বে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। সেই ভাইরাল ভিডিওর উপর ভিত্তি করেই তালহাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে, হাতে করে নয়, গাড়িতে থাকা টুলবক্সের সরঞ্জাম দিয়েই তিনি সেতুর নাট বোল্টু খুলেছিলেন। জানা যায় তিনি প্রথমে সেতুর রেলিঙের নাট বোল্টু ঢিলে করেছিলেন। তারপর টিকটক ভিডিও করার জন্য হাতে করে তিনি সেটি খোলেন। তাছাড়া সেতু নির্মাণকারী সংস্থার পক্ষ থেকেও জানিয়ে দেওয়া হয়, হাতে করে সেতুর নাট বোল্টু খোলা কোনভাবেই সম্ভব নয়।
যদিও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ দাবি করেছেন, এই ঘটনার পিছনে বড় কোনও চক্রান্ত রয়েছে। বিরোধী নেত্রী খালেদা জিয়া এবং নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ মহম্মদ ইউনুসকে আক্রমণ করে তিনি বলেছেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা এবং পদ্মা সেতু অনেকেই চাননি। তাই এই ঘটনার পিছনে কোনও অপশক্তির ষড়যন্ত্র রয়েছে বলেই আমার দৃঢ় বিশ্বাস।’