বাংলার খবর
প্রাথমিকে চাকরি যাওয়ায় মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলেন প্রেমিক, অবশেষে এক হচ্ছে চার হাত
বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: প্রাথমিক নিয়োগে দুর্নীতি মামলায় গত সোমবারই বেআইনিভাবে চাকরি পাওয়া ২৬৯ জনকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। সেই তালিকায় প্রেমিকার নাম থাকায় তাঁর থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলেন ‘বয়ফ্রেন্ড’। তারপরই বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়ির সামনে ধর্নায় বসেন ওই যুবতী। বুধবার প্রবল ঝড় বৃষ্টির মধ্যেও প্রেমিকের বাড়ির সামনে বসেছিলেন তিনি। আর সেই দেখেই অবশেষে মন গলল বয়ফ্রেন্ড ও তাঁর পরিবারের। বুধবার বাড়ির বাইরে ধরনায় বসা ওই তরুণীকে বৃষ্টিতে ভিজতে দেখে ‘হবু শাশুড়িমা’ তাঁকে বাড়ির ভেতরে ডেকে নেন। অবশেষে চার হাত এক হতে চলেছে। সবকিছু ঠিক থাকলে, বৃহস্পতিবারই শুভ পরিণয় হয়ে যাবে। পরিবার সূত্রে জানা গেছে বৃহস্পতিবারই হবে রেজিস্ট্রি ম্যারেজ।
হাইকোর্টের নির্দেশে যে ২৬৯ জনকে প্রাথমিক শিক্ষককে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে, সেই তালিকায় নাম ছিল ওই যুবতীর। ফলে চাকরি চলে যায় কোচবিহারের নিশিগঞ্জ নিবাসী ওই যুবতীর। তারপরই তিনি অভিযোগ করেন, তাঁর চাকরি চলে যাওয়ার খবর শুনেই সমস্ত রকম যোগাযোগ বন্ধ করে দেন তাঁর বয়ফ্রেন্ড। পেশায় কলেজের অতিথি অধ্যাপক বয়ফ্রেন্ডের সঙ্গে তাঁর নাকি ৬ মাসের সম্পর্ক। বয়ফ্রেন্ড তাঁদের সম্পর্কের কথা অস্বীকার করায় বাধ্য হয়ে গত দু’দিন ধরে তাঁর বাড়ির সামনে ধর্নায় বসে ওই যুবতী।
যদিও প্রেমিকার এই অভিযোগ আগের দিন সম্পূর্ণ উড়িয়ে দিয়েছিলেন ওই যুবক। পেশায় কলেজের অস্থায়ী অধ্যাপক ওই যুবক দাবি করেছিলেন, এক ঘটকের মাধ্যমেই তাঁদের পরিচয় হয়েছিল। দুই বাড়ির মধ্যে বিয়ের কথা এগোচ্ছিল। কিন্তু ওই মহিলার সঙ্গে তাঁর প্রেমের কোনও সম্পর্ক ছিল না। তিনি বলেন, ‘ওই মহিলার সঙ্গে আমার প্রেমের কোনও সম্পর্ক ছিল না। তার কোনও প্রমাণ, ছবি বা মেসেজও দেখাতে পারবে না। ওঁর সঙ্গে আমার ফোনে বা মেসেজে কোনও কথাই হত না। এক ঘটকের মাধ্যমে আমাদের পরিচয় হয়েছিল। ঘটকই আমাকে ওই মহিলার ফোন নম্বর দিয়েছিলেন। মেয়ের বাড়ি থেকেই আমার বাড়িতে দেখাশুনার জন্য এসেছিল। আমি, আমার পরিবার বা প্রতিবেশী- আমারা কেউই এই মেয়েকে দেখেনি। ওই মহিলার চাকরি যাওয়া নিয়ে আমার কোনও আপত্তি নেই। চাকরি দেখে আমরা বিয়ের সম্বন্ধ এগোনোর বা পিছিয়ে আসার কথা ভাবিনি। আমাদের বাড়ি থেকে কেউ ওই মহিলাকে দেখতে যায়নি। এর আগে একবার ওঁর বাড়ির লোকজন আমার বাড়িতে এসেছিলেন। সেই দিন নিশিগঞ্জ বাজারে মেয়েটি আমার সঙ্গে দেখা করেন। তারপর বাড়ি ফিরেই আমার বাড়ির সামনে ধর্নায় বসে। আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না! আমার বাড়ি থেকে ওর বাড়িতে বিয়ের কথাবার্তা বলতে যাওয়ার কথা ছিল। তার আগেই ধর্নায় বসল। আমি পেশায় একজন অতিথি অধ্যাপক। আমার সম্পর্কে সকলের কাছে খোঁজ নিতে পারেন।’
অবশেষে সেই ঘটনার মধুরেণ সমাপয়েৎ হল। বৃহস্পতিবারই চার হাত এক হতে চলেছে দু’জনের। তবে এই নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হয়নি ওই যুবক ও পরিবার।