বাংলার খবর
বাংলার পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়! কুণালের ফেসবুক পোস্টে শোরগোল

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: বাংলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের তৃতীয় বর্ষপূর্তিতে রাজ্যের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রীর নাম নিয়ে ভবিষ্যৎবাণী শোনা গেল রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের গলায়। সোমবার তৃণমূলের বর্ষপূর্তির দিনে ফেসবুক পোস্টে কুণাল ঘোষ জানালেন জ্যোতি বসুর রেকর্ড ভেঙে ২০৩৬ সালে কে হতে চলেছেন বাংলার পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী।
সোমবার দীর্ঘ এক ফেসবুক পোস্ট বার্তায় কুণাল ঘোষ বলেন, ”আগামী ২০৩৬ সালে বাংলার পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেদিনও অভিভাবকের মতন উপস্থিত থাকবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।” সোমবার নিজের ফেসবুকে একটি পোস্ট করে এমনটাই লেখেন কুণাল ঘোষ। তাঁর এই পোস্ট রীতিমতো শোরগোল ফেলে দিয়েছে বাংলার রাজনীতিতে।
তৃতীয়বারের জন্য বাংলার মসনদে বসার বর্ষপূর্তির দিন একটি বিস্তারিত পোস্ট করেন কুণাল ঘোষ। ফেসবুকে তিনি একাধিক বিষয় নিয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা করেছেন। যার মধ্যে রয়েছে তিনটি টার্মে তৃণমূলের ক্ষমতায় আসার নানা খুঁটিনাটি দিক। ফিরে দেখেছেন সরকারের সাফল্যের খতিয়ানগুলি। একইসঙ্গে দলবদল করে অন্য দলে যাওয়া এবং ফের একবার দলে ফিরে আসা নেতাদেরও বিশেষ বার্তা দিয়েছেন কুণাল। বার্তা দিয়েছেন অন্য দল থেকে আসা রাজনীতিবিদদেরও। পাশাপাশি, তারুণ্যের জয়গানও শোনা গিয়েছে কুণাল ঘোষের এই লম্বা ফেসবুক পোস্টে।
বেশ কয়েকটি পয়েন্ট এদিন নিজের ফেসবুক পোস্টে উল্লেখ করেছেন কুণাল। তার মধ্যে অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ভাবী মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে প্রজেক্ট করার কথাটি। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর পদের জন্য আগাম শুভেচ্ছা জানিয়ে কুণাল লিখেছেন, ”তৃণমূল কংগ্রেসের এক সৈনিক হিসেবে বলতে পারি, ২০৩৬ সাল পর্যন্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী থাকবেন মমতাদি। আর সেই ২০৩৬ সালে তিনি অভিভাবকের মত উপস্থিত থাকবেন এমন অনুষ্ঠানে, যেখানে মুখ্যমন্ত্রীর পদে শপথ নেবেন অভিষেক। মুখ্যমন্ত্রিত্বে জ্যোতি বসুর রেকর্ড ভেঙে ভারতে নজির গড়বেন মমতাদি।” এর পাশাপাশিই অবশ্য কুণাল দিল্লি জয় নিয়েও আশাবাদী। তিনি লিখেছেন, ”যদি দিদিকে দিল্লির এবং দেশের দায়িত্ব নিতে হয়, তাহলে পরিস্থিতি আরেকরকম তো হবেই।”
আরও পড়ুন: হাঁসখালি ঘটনায় উল্টে বিপাকে বিজেপি, হাইকোর্টে জোড়া জনস্বার্থ মামলা
তিনি লিখেছেন, ”মনে রাখুন, BJP-র শীর্ষ নেতাদের ডেইলি প্যাসেঞ্জারি, সব নখ দাঁত বার করা আক্রমণ, চার আনার BJP কর্মীদের বারো আনা ঔদ্ধত, অসভ্যতাকে হারিয়ে জয়। মনে রাখুন, CPIM, কংগ্রেসকে শূন্যে নামিয়ে দিয়ে জয়। মনে রাখুন, কিছু সুবিধেবাদীর হঠাৎ তৃণমূল ছাড়ার বিশ্বাসঘাতকতা ও হুজুগের বিরুদ্ধে জয়। মনে রাখুন, দিদির নেতৃত্বে এবং অভিষেকের সেনাপতিত্বে তৃণমূল কর্মীদের জেদের আর আনুগত্যের লড়াইতে জয়। মনে রাখুন, একদিকে সরকারের কাজ এবং সঙ্গে সাংগঠনিক এক দক্ষ পরিচালনপদ্ধতির মধ্যে দিয়ে জয়। এই বিপুল জয়কে, মানুষের আস্থা ও আমাদের মত সাধারণ সৈনিকদের মানসিক তৃপ্তিকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। আত্মতুষ্টির জায়গা নেই। আত্মসমালোচনার জায়গায় গুরুত্ব দিতে হবে। দল বড়, সরকার বড়, আরও জয়, আরও দায়িত্ব, আরও কাজ, কর্মযজ্ঞ চলছে । ৯৯% কাজ ভালো। ১% ভুল থাকলে ব্যবস্থা হচ্ছে এবং হবে। যে কর্মী, সমর্থক, সংগঠকরা ২০২১-এর চরম ঝুঁকির যুদ্ধে জান কবুল লড়াই দিয়েছেন, তাঁদের সম্মান, মর্যাদা, অধিকারবোধ সত্যিই স্বতন্ত্র। দলে রাজনৈতিক সচেতনতাটাকেই অগ্রাধিকার দিন। দেওয়া হয়। ক্ষমতায় থাকার জন্য মুষ্টিমেয়র মধ্যে যদি ব্যক্তিসমীকরণের প্রশাসনিক লাভক্ষতির হিসেব অগ্রাধিকার পায়, তবে তা বর্জ্যনীয়। আর সতর্ক থাকুন, চারপাশে কারা আসছে, তারা কারা, কী চায়। এই সতর্কতার ছাঁকনি যে কোনও ক্ষমতাসীন দলে জরুরি, তৃণমূলেও জরুরি এবং তৃণমূল নজর রাখছে বলেই বারবার তিনবার মানুষ আশীর্বাদ করছেন।”
তিনি আরও লেখেন, ”মাথার উপর দিদি, লিডার, দলের প্রাণ, মুখ, শেষ কথা।
রয়েছেন তরুণতুর্কী, ক্যাপ্টেন অভিষেক।
এবং রয়েছেন নেতা, কর্মী, সমর্থক, দরদীর তৃণমূল পরিবার।
বিরোধীরা হাত মিলিয়ে চক্রান্ত চালাচ্ছে। রুখতে হবে।
তুলনা করুন আগের সর্বনাশা বাম জমানার সঙ্গে।
তুলনা করুন অন্য রাজ্যের সর্বনাশা বিজেপি জমানার সঙ্গে।
প্রতিবাদ করুন কেন্দ্রের জনবিরোধী নীতির।
উপসংহার একটাই।
শীত গ্রীষ্ম বর্ষা,
তৃণমূল কংগ্রেস ভরসা।”
আরও পড়ুন: PK-কে নিয়ে প্রয়োজনের থেকে বেশি আলোচনা হচ্ছে: অধীর চৌধুরী
”তৃণমূল কংগ্রেস পরিবারের জনমুখী এবং দায়িত্বশীল আচরণ এই হিসেবকে বাস্তবে পরিণত করার ক্ষমতা রাখে।
মমতাদির লড়াইকে কুর্নিশ।
অভিষেককে অনেক শুভেচ্ছা।
তৃণমূল কংগ্রেস পরিবারের আসল সম্পদ, বুথের কর্মীরা, মিছিলের কর্মীরা, দেওয়াল লেখার কর্মীরা, যাঁরা কোনো প্রার্থী না হয়েও, পদ না পেয়েও দলের সব কাজ করেন, তাঁদের শতসহস্র প্রণাম ও শুভেচ্ছা।”