দেশের খবর
পুলিশি হেফাজতের বিরোধিতা করে দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ জুবের
বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: সাংবাদিক মহম্মদ জুবেরের গ্রেফতারি মামলা এবার পৌঁছল দিল্লি হাইকোর্টে। চার দিনের পুলিশি হেফাজতের পাশাপাশি গ্রেফতারের নির্দেশের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন অল্ট নিউজের সাংবাদিক মহম্মদ জুবের। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, শুক্রবার তাঁর এই আবেদন শুনতে রাজি হয়েছে হাইকোর্ট। এদিকে তদন্তের জন্য জুবেরকে নিয়ে বেঙ্গালুরু গিয়েছে দিল্লি পুলিশ। সেখান থেকে তাঁর ল্যাপটপ ও মোবাইল তদন্তকারী আধিকারিকরা উদ্ধার করার চেষ্টা করছেন বলে জানা গিয়েছে।
সর্বভারতীয় ফ্যাক্ট চেকিং ওয়েবসাইট অল্ট নিউজের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা জুবের। নবীকে নিয়ে বিজেপির প্রাক্তন মুখপাত্র নূপুর শর্মার বিতর্কিত মন্তব্য তিনিই প্রথম প্রকাশ্যে আনেন। এরপরই ধর্মীয়ভাবে আঘাত এবং হিংসায় উস্কানি দেওয়ার অভিযোগে গত সোমবারই তাঁকে গ্রেফতার করে দিল্লি পুলিশ। সেইদিনই পুলিশ তাঁকে আদালতে পেশ করলে বিচারপতি একদিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন।
পরের দিন তাঁকে পাতিয়ালা হাউজ কোর্টে পেশ করা হয়। সেখানে জুবেরের আইনজীবী জামিনের আবেদন করলে পুলিশ তার বিরোধিতা করে। পুলিশ দাবি করে, জুবের তদন্তে সহযোগিতা করছেন না। ল্যাপটপ এবং মোবাইল খুঁজতে তাঁকে বেঙ্গালুরুতে নিয়ে যাওয়ারও আবেদন জানায় পুলিশ। তারপরই তাঁকে আরও ৪ দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারপতি। এই সিদ্ধান্তের বিরোধীতা করেই দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন জুবের।
২০১৮ সালে করা একটি টুইটের পরিপ্রেক্ষিতে জুবেরের বিরুদ্ধে মামলা করেন দিল্লি পুলিশের এক সাব ইনস্পেক্টর। দিল্লি পুলিশের এক কর্তা জানিয়েছেন, জুবের সেই পোস্ট করার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত ডিভাইস পুলিশের হাতে তুলে দিতে কোনও সহযোগিতা করছেন না। তাই তাঁকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চাইছে পুলিশ। জুবেরের আইনজীবী পাল্টা জানিয়েছেন, যে মোবাইল থেকে তিনি এই পোস্ট করেছিলেন, সেই মোবাইলটি হারিয়ে গিয়েছে। তাই এখন তিনি একটি নতুন ফোন ব্যবহার করছেন। পুলিশ সবকিছু জেনেও ইচ্ছাকৃতভাবে বিষয়টি এড়িয়ে যাচ্ছে।
দিল্লি পুলিশ আরও মারাত্মক দাবি করেছে। জানা গিয়েছে, ফ্যাক্ট চেকিং ওয়েবসাইট চালানোর জন্য জুবেরের কাছে অনেক অনুদান আসে। সেই অনুদানের উৎসও খুঁজে বার করার চেষ্টা করা হচ্ছে। পুলিশের দাবি, কিছু অনুদান নাকি পাকিস্তান থেকেও আসে। তবে পুলিশের এই দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন ওয়েবসাইটের আর এক প্রতিষ্ঠাতা প্রতীক সিনহা। তাঁর দাবি, অল্ট নিউজে আসা অনুদানের সঙ্গে ইচ্ছাকৃতভাবেই জুবের নাম যোগ করতে চাইছে পুলিশ।
আর এই নিয়ে জাতীয় রাজনীতিও সরগরম হয়ে উঠেছে। গোটা ঘটঘটনায কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের সমালোচনা করেছেন বিরোধীরা। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী, এআইএমইএম সাংসদ আসাদউদ্দিন ওয়েইসি, তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন জুবেরের সমর্থনে মুখ খুলেছেন।