বাংলার খবর
শিক্ষকের অভাবে ব্যাহত পঠনপাঠন, বিদ্যালয় বিমুখ হচ্ছে পড়ুয়ারা

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: পঠনপাঠনের অভাবে বিদ্যালয় থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে ছাত্রছাত্রীরা। উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুর ব্লকের মাটিকুন্ডা গ্রাম পঞ্চায়েতের ডাঙ্গাপাড়া জুনিয়ার হাইস্কুলের ঘটনা।
ছাত্রছাত্রীদের অভিযোগ, তারা নিয়মিত বিদ্যালয়ে এলেও শিক্ষকের অভাবে পঠনপাঠন না হওয়ায় তাদের বাড়ি ফিরে যেতে হয়। দিনের পর দিন একই অবস্থা চলায় অধিকাংশ ছাত্রছাত্রী বিদ্যালয়ে আসা বন্ধ করে দিয়েছে। একই দাবি অবিভাবকদেরও। বিদ্যালয়ে একাধিকবার শিক্ষক নিয়োগের দাবি জানানো হলেও অবস্থার কোনও পরিবর্তন হয়নি। পঠন পাঠনের অভাবে ছাত্রছাত্রীদের বিদ্যালয়ে আসা বন্ধ করে দিচ্ছে বলে দাবি করেছেন বিদ্যালয়ের একমাত্র শিক্ষিকা।
সরকারি বিদ্যালয়ের এই করুণ চিত্র জেলা উচ্চপদস্থ কর্তাদের জানিয়েছে ইসলামপুর মহকুমা শিক্ষা দফতর। জেলা শিক্ষা দফতর শিক্ষক নিয়োগ না করায় ডাঙ্গাপাড়া জুনিয়র হাইস্কুলে পঠন পাঠনের সমস্যা তৈরি হচ্ছে।
উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুর ব্লকের মাটিকুন্ডা গ্রাম পঞ্চায়েতের ডাঙ্গাপাড়া এলাকার চার হাজার ভোটার। এলাকার ছেলে মেয়েদের শিক্ষিত হতে হলে দশ কিলো মিটার দূরে যেতে হত। দূরবর্তী এলাকায় গিয়ে বিদ্যালয়ে গিয়ে পড়াশুনা করতে হয় এই অজুহাত দেখিয়ে এলাকার ছেলে মেয়েরা পড়াশুনা থেকে বিমুখ হয়ে যেতেন।
বিষয়টি উপলব্ধি করতে পেরে গ্রামে বিদ্যালয় তৈরির জন্য উদ্যোগী হন ডাঙ্গাপাড়ার বাসিন্দা আব্দুল রসিদ। বিদ্যালয় তৈরির জন্য তিনি জমি দান করেন। ১২ বছর আগে রাজ্য সরকার ডাঙ্গাপাড়া একটি জুনিয়র হাইস্কুল করার সিদ্ধান্ত নেয়। একমাত্র স্থায়ী শিক্ষিকা ও চারজন গেষ্ট টিচার দিয়ে বিদ্যালয় শুরু হয়েছিল। ধীরে ধীরে গেষ্ট টিচার বিদ্যালয় থেকে অবসর নিলেও আর কোনও শিক্ষক দেয়নি রাজ্য সরকার। ফলে একমাত্র শিক্ষিকা দিয়েই চলছে ডাঙ্গাপাড়া জুনিয়ার হাইস্কুল।
জানা গিয়েছে, বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ৩৮৬ জন। বিদ্যালয়ে শিক্ষিকা এলে দিনে চারটি ক্লাস নিতে পারেন। একটি ক্লাস চালু হলে বাকি ক্লাসগুলো বন্ধ থাকে। ছাত্রছাত্রীদের মিড-ডে মিল দিয়েই বিদ্যালয় ছুটি দেওয়া হয়। বছর বছর এই একই ভাবে চলায় ছাত্রছাত্রীরা বিদ্যালয়ে আসার উৎসাহ হারিয়ে ফেলছে। যার ফলে দিনে দিনে বিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রীরা স্কুল বিমুখ হয়ে পড়ছে। বর্তমানে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা তলানীতে এসে ঠেকেছে।
বিদ্যালয়ের একমাত্র শিক্ষিকা জানিয়েছেন, একমাত্র শিক্ষিকা দিয়ে বিদ্যালয় চালানো তাঁর পক্ষে অসম্ভব হয়ে পড়ছে। নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা সঠিক শিক্ষাদানের অভাবে তাদের ভবিষ্যতে চরম ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। বিদ্যালয়ে অতিরিক্ত শিক্ষকের জন্য শিক্ষা দফতরকে জানানো হলেও এখন পর্যন্ত অতিরিক্ত শিক্ষক দেওয়া হয়নি। ডাঙ্গাপাড়া জুনিয়র হাইস্কুলে শিক্ষকের অভাব বিষয়টি তাদের নজরে আছে। অতিরিক্ত শিক্ষকের জন্য জেলা শিক্ষা দফতরকে তাঁরা জানিয়েছেন। দ্রুত অতিরিক্ত শিক্ষক দিয়ে পঠন পাঠন স্বাভাবিক করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।