বাংলার খবর
উঠতে দেওয়া হয়নি ট্রেনে, পায়ে হেঁটেই ইউক্রেন থেকে হাঙ্গেরি সীমান্তে বালুরঘাটের জয়তী

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: ইউক্রেনে চরম নিষ্ঠুরতার শিকার বালুরঘাটের জয়তী। সাহায্য করলো না স্থানীয়রাও। ট্রেন থেকে নামিয়ে দেওয়া হল দক্ষিন দিনাজপুরের দুই মেডিকেলের ছাত্রীকে। জীবন বাঁচাতে দুই রাত ও তিন দিন হেটেই কিভ শহর থেকে হাঙ্গেরিতে পৌঁছালেন দক্ষিণ দিনাজপুরের অসহায় ওই দুই তরুণী। এদিন ঘটনার কথা জানিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়লেন পরিবার সদস্যরা। কবে ফিরবে মেয়েরা, এখন শুধুই পথ চেয়ে পরিজনেরা।
জানা গিয়েছে, পরিবারের লোকেদের স্বপ্ন পূরন করতে ইউক্রেনে ডাক্তারি পড়তে যান বালুরঘাটের নারায়নপুর এলাকার বাসিন্দা দীপঙ্কর রায়ের বড় মেয়ে জয়তী রায়। একই জায়গায় ডাক্তারি পড়ছিলেন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বংশীহারির পাঠান পাড়ার বাসিন্দা ঈশিতা খাতুনও।
পরিবার সূত্রে খবর, ঈশিতা খাতুন ২০১৯ সালে ডাক্তারি পড়ার সুযোগ পেয়ে ইউক্রেনে পাড়ি দেয়। যদিও জয়তীর মেডিকেলের ছিল এটাই প্রথম বর্ষ। সেদেশের কিভ শহরের একটি মেডিকেল কলেজে পাঠরত ছিলেন তাঁরা। গত ১২ ফেব্রুয়ারি দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট থেকে সেখানে পৌছয় জয়তী। এরই মধ্যে যুদ্ধের দামামা বেজে যাওয়ায় বেশ কয়েকদিন মেডিক্যাল কলেজ বিল্ডিংএর বেসমেন্টে আটকে থাকেন তাঁরা। বংশীহারীর ঈশিতার সাথে আটকে থাকেন বালুরঘাটের জয়তী রায়ও। দুজনে এই মুহূর্তে হাঙ্গেরির বুদাপেস্টে রয়েছে।
এদিকে দেশে ফিরতে ইউক্রেনের কিভ শহর থেকে হাঁটাপথে সীমান্ত পেরিয়ে হাঙেরিতে পৌঁছয় তাঁরা। তাঁদের পরিবারের লোকেদের অভিযোগ, প্রথমে তাঁরা ইউক্রেনের লিভইড স্টেশনে পৌঁছালে তাঁদের ট্রেন থেকে নামিয়ে দেয় ইউক্রেন সেনা। পথে ইউক্রেনের স্থানীয়রাও তাঁদের কোনওরকম সাহায্য করেনি বলেও অভিযোগ করেছেন জয়তীর মা মনোরমা রায়। আর যার জেরে দুই রাত তিন দিন পায়ে হেঁটে হাঙ্গেরি সীমান্তে পৌঁছালে সেখানে ভারতীয় দূতাবাসের প্রতিনিধিরা ও হাঙ্গেরি সেনা তাঁদের রিসিভ করেন।
এই মুহূর্তে তাঁরা বুদাপেস্ট শহরের ভারতীয় একটি গেস্ট হাউজে ভারতীয় দূতাবাসের আশ্রয়ে রয়েছে। হাঙেরির সিম ক্রয় করতে না পারায় ওয়াইফাইয়ের মাধ্যমে বংশীহারিতে পরিবারের সাথে যোগাযোগ করছে। বালুরঘাটের নারায়নপুরে তাঁর পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছেন জয়তীও। তবে আতঙ্কের প্রহর এখনও কিছুতেই কাটছে না। এখন কবে ঘরের মেয়ে ঘরে ফিরবে সেই আশায় দিন গুনছেন পরিবারের লোকেরা। যদিও সূত্রের খবর, আজই তাঁদের নিয়ে ভারতের বিশেষ বিমান আকাশে উড়বে।