দেশের খবর
অন্তর্বাস খুলে NEET পরীক্ষায় বসতে হবে! কেরালায় হুলস্থুল
বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: পরীক্ষায় বসতে হলে খুলতে হবে অন্তর্বাস! কেরাললায় ন্যাশনাল এলিজিবিটি এন্ট্রান্স টেস্ট (NEET) পরীক্ষা দিতে গিয়ে এমনই অভিযোগ তুললেন একাধিক ছাত্রী। অভিযোগ, মহিলা পরীক্ষার্থীদের অন্তর্বাস খুলে পরীক্ষার হলে ঢুকতে বলে কেরালার কোল্লাম জেলার মারথোমা ইনস্টিটিউট অফ ইনফরমেশন টেকনোলজি।
একজন নয়, একাধিক মহিলা পরীক্ষার্থীকে অন্তর্বাস পরে পরীক্ষার হলে ঢুকতে আপত্তি জানায় ওই পরীক্ষা কেন্দ্র। প্রথমে অভিযোগ পাওয়ার কথা অস্বীকার করলেও ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি কর্তৃপক্ষ পরে এই ঘটনার দায় স্বীকার করে নিয়েছে। তবে কেরালা সরকার গোটা ঘটনায় কেন্দ্রের দিকে দোষ চাপাতেই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। কেরালা সরকারের শিক্ষা দফতরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন গোটা ঘটনার তদন্তের জন্য কেরালায় বিশেষ তদন্তকারী দল পাঠাচ্ছে ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি।
ওই পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে যাওয়া এক মহিলা পরীক্ষার্থীর বাবা এই অভিযোগ জানাতেই গোটা দেশে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। পরীক্ষা কেন্দ্রের কর্মীদের বিরুদ্ধে কোট্টারাকারা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই মহিলা পরীক্ষার্থীর বাবা। তিনি অভিযোগ করেছেন, মারথোমা ইনস্টিটিউট অফ ইনফরমেশন টেকনোলজিতে এনইইটি পরীক্ষা দিতে যাওয়া সমস্ত মহিলা পরীক্ষার্থীকে অন্তর্বাস খুলে পরীক্ষার হলে ঢুকতে বলা হয়। তা না হলে পরীক্ষার হলে ঢুকতে না দেওয়ার কথা বলা হয়। পরীক্ষা দেওয়ার জন্য মহিলা পরীক্ষার্থীদের অন্তর্বাস খুলে লকারে রাখতে বাধ্য করে ওই পরীক্ষাকেন্দ্র কর্তৃপক্ষ।
ওই অভিযোগকারী অভিভাবক আরও জানিয়েছেন, তাঁর মেয়ে অন্তর্বাস খুলতে রাজি না হওয়ায় তাঁকে পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হয়নি। ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সির গাইডলাইনে এইরকম কোনও নির্দেশ দেওয়া নেই। ওই পরীক্ষার্থীর বাবা জানিয়েছেন, প্রায় ৯০ শতাংশ পরীক্ষার্থীকে অন্তর্বাস খুলে পরীক্ষায় বসতে বাধ্য করেছে ওই পরীক্ষা কেন্দ্রের কর্তৃপক্ষ। শুধু তাই নয়, যে সমস্ত পরীক্ষার্থী অন্তর্বাস খুলতে রাজি হননি, তাঁদের নাকি কর্তৃপক্ষ পালটা প্রশ্ন করেছেন, ‘কোনটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ? পরীক্ষা না অন্তর্বাস?’
এক পরীক্ষার্থী জানিয়েছেন, ‘পরীক্ষার হলে ঢোকার সময় প্রথমে আমাদের বলা হয় স্ক্যান করা হবে। তারপর জিজ্ঞাসা করা হয় ব্রা-তে হুক আছে কিনা। আমি হ্যাঁ বলায় আমাকে একটি অন্য ঘরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তারপর আমাকে একজন বলেন, ব্রা ওই ঘরে খুলে আমাকে পরীক্ষার হলে যেতে হবে। সেই ঘরে আরও অন্যান্য পরীক্ষার্থীদের ব্রা খুলে রাখা ছিল। এবং ওই আধিকারিক আমাকে বলেন, এটা পরীক্ষার নিয়ম। গোটা ঘটনায় আমি প্রচন্ড মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলাম। তার প্রভাব আমার পরীক্ষাতেও পড়েছে।’
ইতিমধ্যেই গোটা ঘটনা জানতে চেয়ে ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সিকে চিঠি দিয়েছেন কেরালার শিক্ষামন্ত্রী আর বিন্দু। ওই পরীক্ষার্থীর বাবার অভিযোগ পাওয়ার পরই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। ওই মহিলা পরীক্ষার্থীর বয়ানও রেকর্ড করে গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছে পুলিশ। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৫৪ ও ৫০৯ ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ। যদিও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে কেরালার ওই পরীক্ষা কেন্দ্র।