খেলা-ধূলা
বিশেষ ভূমিকায় বিরাট! অজিদের হারিয়ে পাকিস্তান ম্যাচের আগে আত্মবিশ্বাসী ভারত
বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: দ্বিতীয় প্রস্তুতি ম্যাচেও অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সহজে জিতল ভারত। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে প্রস্তুতি ভালো ভাবেই সেরে নিল বিরাট কোহলিরা। বিশ্বকাপ শুরুর আগে দু’টো প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছিল ভারত। প্রথম ম্যাচে ইংল্যান্ডকে সহজে হারিয়েছিল। বুধবার দ্বিতীয় ম্যাচেও অজিদের বিরুদ্ধে ৮ উইকেটে সহজ জয় তুলে নিল মেন ইন ব্লু। সেইসঙ্গে এই প্রস্তুতি ম্যাচে আরও দু’টো গুরুত্বপূর্ণ কাজও সেরে ফেলল ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট। বুধবার বিরাট কোহলির জায়গায় টস করতে এসে শুরুতেই চমক দিয়েছিলেন রোহিত শর্মা।
আইপিএল চলাকালীনই বিরাট জানিয়ে দিয়েছিলেন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পরেই তিনি ক্রিকেটের সবথেকে ছোট ফরম্যাটের অধিনায়কত্ব ছাড়বেন। তাই বিরাট দলে থাকা সত্ত্বেও রোহিত টস করতে আসায় ‘দায়িত্ব হস্তান্তর প্রক্রিয়া’ শুরু হয়ে গেল বলেই মনে করছে ক্রিকেটমহল। সেই সঙ্গে এটাও পরিষ্কার হয়ে গেল যে বিরাটের পর ভারতীয় টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়কত্বের দায়িত্ব উঠতে চলেছে রোহিতের হাতেই। আর দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হলো, বুধবারের ম্যাচে বোলিং করলেন বিরাট কোহলি। ২ ওভার বল করে যদিও উইকেট পাননি তিনি। ১২ রান দিয়েছেন ভারত অধিনায়ক। সপ্তম ওভারে কোহলির হাতে বল তুলে দেন রোহিত। প্রথম ওভারে ৪ রান দিলেন।
দ্বিতীয় ওভারে ৮ রান দেন। সচরাচর বোলার বিরাটকে দেখা যায় না। আইপিএলেও এক আধবার বোলিং করেছেন। কিন্তু প্রশ্ন হল, হার্দিক পান্ডিয়ার বিকল্প হিসেবেই কি বোলার বিরাটকে ব্যবহারের ভাবনা টিম ম্যানেজমেন্টের? পিঠের চোট সারিয়ে ওঠার পর থেকে সেই ভাবে আর বোলিং করতে দেখা যায়নি হার্দিককে। তাই তিনি বল না করলে ষষ্ঠ বোলারের অভাব স্পষ্ট টের পাবে দল। তাই বিরাটকে দিয়ে ১-২ ওভার বল করানোর পরিকল্পনা রয়েছে ভারতীয় থিঙ্ক ট্যাঙ্ক। কারণ বুধবার টস করতে এসে রোহিত জানিয়েছিলেন তাঁরা ষষ্ঠ বোলারের খোঁজে রয়েছেন। খুব শীঘ্রই এই ব্যাপারটা নিশ্চিত করতে হবে তাঁদের। অনেকে বলছেন, বিরাটকে ছয় নম্বর বোলার হিসেবে ব্যবহার করার পরিকল্পনাটা মেন্টর ধোনিরই মস্তিষ্কপ্রসূত। কারণ নিজে অধিনায়ক থাকাকালীন এইরকম একাধিক সিদ্ধান্ত নিয়ে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিতেন ধোনি।
দুই প্রস্তুতি ম্যাচে ভারত মোটামুটি সব খেলোয়াড়দেরই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে খেলার সুযোগ দিয়েছিল। আগের ম্যাচে রোহিতকে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছিল। এছাড়া প্রথম ম্যাচ খেলা জসপ্রীত বুমরা, এবং মহম্মদ শামিকেও বিশ্রাম দেওয়া হয়েছিল। তাঁদের পরিবর্তে দলে আসেন বরুণ চক্রবর্তী এবং রবীন্দ্র জাদেজা। অস্ট্রেলিয়া প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে পাঁচ উইকেট হারিয়ে ১৫২ রান তোলে। তবে টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নামা অস্ট্রেলিয়ার শুরুটা মোটেও ভালো হয়নি। ম্যাচের দ্বিতীয় ওভারেই অজি ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার (১) ও মিচেল মার্শকে (০) ফিরিয়ে দেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। তার পরের ওভারেই অ্যারন ফিঞ্চকে (৮) ফিরিয়ে দেন জাদেজা। ১১ রানের মধ্যেই ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে গিয়েছিল অজিরা। সেখান থেকে ৬১ রানের পার্টনারশিপ করে প্রাথমিক ধাক্কা সামাল দেন স্টিভ স্মিথ ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। ২৮ বলে ৩৭ রান করে রহুল চাহারের শিকার হয় প্যাভিলিয়নে ফেরেন ম্যাক্সওয়েল। এরপর স্মিত ও মার্কাস স্টইনিসের ৭৬ রানের পার্টনারশিপের দৌলতে ৫ উইকেটে ১৫২ রান তোলে অস্ট্রেলিয়া। যদিও শেষ ওভারে স্মিথকে ফিরিয়ে দেন ভুবনেশ্বর কুমার।
আউট হওয়ার আগে নিজের অর্ধশত রান পূর্ণ করে ফেলেছিলেন প্রাক্তন অজি অধিনায়ক। ৪৮ বলে ৭ বাউন্ডারির সাহায্যে সর্বোচ্চ ৫৭ রান করেন স্মিথ। ২৫ বলে ৪ বাউন্ডারি ও এক ওভার বাউন্ডারির সাহায্যে ৪১ রান করে অপরাজিত থেকে যান স্টইনিস। ভারতের বোলারদের মধ্যে অশ্বিন ২টি ও জাদেজা, রাহুল চাহার এবং ভুবনেশ্বর কুমার একটি করে উইকেট পান। জবাবে ব্যাট করতে নেমে দুর্দান্ত শুরু করে ভারতের দুই ওপেনিং ব্যাটসম্যান কেএল রাহুল এবং রোহিত শর্মা। ওপেনিং জুটিতে তারা ৬৮ রান তোলে। রাহুল ৩১ বলে ৩৯ রান করে অ্যাস্টন অ্যাগারের বলে আউট হন।
রোহিত শর্মা ৪১ বলে ৫ বাউন্ডারি ও ৩ ওভার বাউন্ডারির সাহায্যে ৬০ রান করে আউট না হয়েই মাঠ ছাড়েন। এরপর বাকি কাজটা করে দেন সূর্যকুমার যাদব ও হার্দিক পান্ডিয়া। সূর্য ২৭ বলে ৩৮ এবং হার্দিক ৮ বলে ১৪ রান করে ১৭.৫ ওভারে জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় ১৫৩ রান তুলে নেন। ১৩ বল বাকি থাকতেই ৮ উইকেটে জয় তুলে নেয় ভারত। দু’টো প্রস্তুতি ম্যাচে জয় আগামী রবিবার বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে নামার আগে ভারতের আত্মবিশ্বাস অনেকটাই বাড়িয়ে দেবে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।