দেশের খবর
প্রেমিকের সাহায্য নিয়ে ভাড়াটে খুনি দিয়ে স্বামীকে খুন করালেন স্ত্রী!
বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: সংসারের নিত্যদিন অশান্তি লেগেই থাকত। তাই স্বামীর হাত থেকে মুক্তির উপায় খুঁজছিলেন তিন সন্তানের মা বছর চল্লিশের গৃহবধূ। অবশেষে প্রেমিকের সাহায্য নিয়ে এক ভাড়াটে খুনিকে দিয়ে স্বামীকে খুন করালেন মধ্য দিল্লির দরিয়াগঞ্জের বাসিন্দা ওই মহিলা। এই খুনের ঘটনায় ওই গৃহবধূ, তাঁর প্রেমিক এবং ভাড়াটে খুনিকে গ্রেফতার করেছে দিল্লি পুলিশ। অভিযুক্ত মহিলার নাম জীবা কুরেশি। গত ১৭ মে রাত দশটা নাগাদ দিল্লির দরিয়াগঞ্জে খালসা স্কুলের ৩ নম্বর গেটের বাইরে গুলি করে খুন করা হয় ওই মহিলার স্বামী মইনুদ্দিন কুরেশিকে (৪৭)। উত্তরপ্রদেশের মিরাটের বাসিন্দা বছর ২৯ এর শোয়ের সঙ্গে গত দু’বছর ধরে সম্পর্ক ছিল জীবার। ফেসবুকের মাধ্যমেই দু’জনের আলাপ হয়েছিল। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শোয়েবের সাহায্য নিয়েই স্বামীকে খুন করার জন্য ৬ লক্ষ টাকা দিয়ে ভারাটে খুনিকে সুপারি দিয়েছিলেন জীবা। বছর ২৯ এর ওই ভাড়াটে খুনির নাম বিনীত গোস্বামী। তাঁর বাড়ি উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদে। পুলিশ এই ভাড়াটে খুনিকেও গ্রেফতার করেছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, জীবার দুই পুত্র এবং এক কন্যা সন্তান রয়েছে। পুলিশকে তিনি জানিয়েছেন, সংসারে প্রতিদিনই অশান্তি হত। তাই অনেকদিন ধরেই স্বামীর হাত থেকে রেহাই পাওয়ার পথ খুঁজছিলেন। তাই মইনুদ্দিনকে ছেড়ে অন্য পুরুষের সঙ্গে সংসার করার চিন্তা-ভাবনাও করছিলেন তিনি। সেই সূত্রেই দু’বছর আগে ফেসবুকে শোয়েবের সঙ্গে আলাপ হয় তাঁর। বন্ধুত্ব থেকে সেই সম্পর্ক পরিণত হয় প্রেমে। সম্পর্ক আরও গভীর হলে বয়সে ১১ বছরের ছোট শোয়েবকে বিয়ে করার প্রস্তাব দেন জীবা। এবং স্বামীকে খুন করার জন্য শোয়েবকে একপ্রকার জোর করেই রাজি করান।
দিল্লির ডেপুটি পুলিশ কমিশনার শ্বেতা চৌহান জানিয়েছেন, শোয়েব নিজেও বিবাহিত। তাঁর ওষুধের ব্যবসা রয়েছে। জীবা তাঁকে জোড়াজড়ি করতেই শোয়েব যোগাযোগ করেন ভাড়াটে খুনি বিনীতের সঙ্গে। জীবাই তাঁর স্বামীর সমস্ত তথ্য সরবরাহ করতেন শোয়েবকে। তিনিই সেগুলো পৌঁছে দিতেন বিনীতের কাছে। শুধু তাই নয়, নিজের হোয়াটসঅ্যাপের ‘অ্যাবাউট’ এর জায়গায় সেই তথ্য লিখে রাখতেন জীবা। আর সেই তথ্যগুলো দেখেই মইনুদ্দিনের গতিবিধির ওপর নজর রাখতেন ভাড়াটে খুনি বিনীত। সেই সমস্ত তথ্য দেখেই মইনুদ্দিনকে বেশ কয়েকবার খুন করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছিলেন বিনীত। অবশেষে গত ১৭ মে দিল্লির খালসা স্কুলের তিন নম্বর গেটের সামনে খুব কাছ থেকে গুলি করে মইনুদ্দিনকে খুন করেন বিনীত।
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, একটি চুরি করা বাইক নিয়ে এসেছিলেন খুনি। এবং একটি দেশি বন্দুক দিয়েই গুলি করা হয়। মুইনুদ্দিনকে খুন করার পর সেই চোরাই বাইকটি ঘটনাস্থলে ফেলে রেখেই পালিয়ে যান খুনি। সেই বাইকের সূত্র ধরেই পুলিশ প্রথমে বিনীত, পরে শোয়েব এবং তারপর জীবাকে গ্রেফতার করে। পুলিশ জানিয়েছে, অতীতেও বিনীত এবং শোয়েবের অপরাধের রেকর্ড রয়েছে। এবং তিনটি মামলায় পুলিশের খাতায় নাম রয়েছে শোয়েবের।