বাংলার খবর
নোট বন্দির সময় এত বেআইনি নগদ কালো টাকা এল কোথা থেকে! পাল্টা প্রশ্ন তৃণমূলের
বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: শুক্রবার টালিগঞ্জের হরিদেবপুরের এক অভিজাত আবাসনের ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালিয়ে প্রায় ২১ কোটি ২০ লক্ষ টাকা উদ্ধার করেছে ইডি। অর্পিতা মুখোপাধ্যায় নামে এক মহিলার ফ্ল্যাট থেকে এই বিপুল পরিমান টাকা উদ্ধার নিয়ে এবার পাল্টা প্রশ্ন তুলল তৃণমূল কংগ্রেস। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেফতারের পর শনিবার সন্ধ্যায় সাংবাদিক সন্মেলনে মুখোমুখি হন ফিরহাদ হাকিম, কুণাল ঘোষ, চন্দ্রীমা ভট্টাচার্য, অরূপ বিশ্বাস।
সেখানেই তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ প্রশ্ন তোলেন, নোটবন্দির সময় এই বিপুল পরিমাণ বেআইনি নগদ কালো টাকা কোথা থেকে এল? এই টাকার উৎস কী? এর পেছনে কী আছে? তাই শুধু একটা গল্প না ছড়িয়ে যত দ্রুত, এক বা দু’মাসের মধ্যে এর তদন্ত করে আদালতকে বিষয়টি জানানোর দাবী তুললেছেন তিনি।
উল্লেখ্য, গত ২০১৬ সালে এসএসসি তে শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা নেওয়া হয়। আর কেন্দ্রীয় সরকার নোট বন্দি ঘোষণা করে ওই বছরেরই ৮ নভেম্বর। বিরোধীরা অভিযোগ তুলেছে, অর্থের বিনিময়ে এসএসসিতে বেআইনি ভাবে করে চাকরি দেয়া হয়েছে। তর্কের খাতিরে যদি ধরে নেওয়াও হয় পরীক্ষার পরেই এই অবৈধ আর্থিক লেনদেন হয়েছিল, তাহলে সেটা হয়েছিল পুরানো নোটেই। কারণ তখনও নতুন ৫০০ বা ২০০০ টাকার নোট বাজারে আসেনি। কিন্তু অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয়েছে নতুন ৫০০ ও ২০০০ টাকার নোট।
সেখানেই তৃণমূলের প্রশ্ন, পুরানো নোট কীভাবে এই বিপুল পরিমান নতুন নোটে বদলানো হল! আর এই নোট বদলের পিছনে কাদের হাত ছিল, তারও যথাযত তদন্তের দাবি জানিয়েছে তৃণমূল। তাহলে এখানে অন্য আরও বড় ষড়যন্ত্র রয়েছে বলেই মনে করছে তৃণমূল সহ রাজনৈতিক মহলের একাংশ।
শনিবার সাংবাদিক সম্মেলনে গোটা ঘটনার পেছনে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের সম্ভাবনাকে একেবারেই উড়িয়ে দিননি ফিরহাদ হাকিম। এদিন তিনি নাম না করে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে নিশানা করেন। ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘দুমাস আগে আদালত তদন্তভার সিবিআই-কে দিয়েছে। যদি দু’মাস আগে পার্থ পার্থদা ওয়াশিং মেশিনে ঢুকে যেত, তাহলে ইডি তদন্ত হত না, কিছু খুঁজেও পেত না। কিন্তু পার্থদা তৃণমূলে ছিলেন, তাই তাঁর বিরুদ্ধে এত কুৎসা হচ্ছে। আমিও ওয়াশিং মেশিনে ঢুকিনি। তাই আমাকেও জেলে যেতে হয়েছিল। কিন্তু একই মামলায় (নারদ কাণ্ড) অন্য একজন (শুভেন্দু অধিকারী), যিনি বিজেপির ওয়াশিং মেশিনে ঢুকে গেলেন তাঁকে কোনও তদন্তের মুখোমুখি হতে হয়নি। বিজেপিতে গেলে সাধু, তৃণমূলে থাকলে চোর। এই দ্বিচারিতা চলছে। বিজেপি কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলোকে রাজনৈতিক কাজে লাগাচ্ছে। তৃণমূল কোনও অন্যায় করে না। কোনও অন্যায় সহ্যও করে না। দোষী প্রমাণিত হলে শাস্তি হবে। কিন্তু কেউ ষড়যন্ত্রের শিকার হলে আমরা তার প্রতিবাদও করব।’
তাই এই বিপুল পরিমাণ নোট বদলের ক্ষেত্রে বিজেপি বা কেন্দ্রীয় সরকারের কারও হাত থাকার সম্ভাবনাকেও উড়িয়ে দিচ্ছে না তৃণমূল। এদিন এই একই প্রশ্ন তুলেছেন ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেছেন, ‘কংগ্রেস, বিজেপি, সিপিএম দাবি করছে ২০১৪ সালে এই আর্থিক দুর্নীতি হয়েছিল। এই টাকা ঘুষ নেওয়া হয়েছিল। তাহলে ২০১৭ সালে সেই টাকা কী করে নতুন নোট হয়ে গেল। ওইভাবে বস্তাবন্দি অবস্থায় থেকেই পুরনো নোটগুলো নতুন নোট হয়ে গেল? নোট বন্দি হয়েছে ২০১৬ সালের শেষে। আর ২০০০ টাকার নোট এসেছে ২০১৭ সালে। তাহলে এই নোট বদল কী করে হল!’