বাংলার খবর
তিন যুবকের অভিনব উদ্যোগকে সাধুবাদ জানালেন বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: কোভিড কালে রক্তের সঙ্কট মেটাতে, সাধারণ মানুষকে রক্তদানে উৎসাহিত করতে এবং থ্যালাসেমিয়া মুক্ত ভারত গড়ার বার্তা দিতে অভিনব উদ্যোগ নিয়েছিলেন তিন যুবক। মালদহ থেকে পায়ে হেঁটে দিল্লির ইন্ডিয়া গেট পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছিলেন। বুধবার সেই তিন যুবককে সংবর্ধিত করল রায়গঞ্জ মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশন এবং রায়গঞ্জের বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী। রায়গঞ্জের মোহনবাটিতে মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাকক্ষে তিনজনকে সম্বর্ধনা জ্ঞাপন অনুষ্ঠানে বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন রায়গঞ্জ মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক অতনু বন্ধু লাহিড়ী, রায়গঞ্জ পৌরসভার চেয়ারম্যান সন্দীপ বিশ্বাস সহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।
রক্তদানে সাধারণ মানুষকে উৎসাহিত করতে এবং থালাসেমিয়া মুক্ত ভারত গড়ার বার্তা নিয়ে গত ২৪ মার্চ মালদহের তিন যুবক আলমগীর, হিমাংশু এবং কাইফ হোসেন মালদহ ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকে পদযাত্রা শুরু করেন। মালদহ থেকে বিহার, ঝাড়খণ্ড, উত্তরপ্রদেশ হয়ে ৪৬ দিন পর দিল্লির ইন্ডিয়া গেট পৌঁছান তাঁরা। এবং এই পদযাত্রায় তাঁরা যথেষ্ট সাড়া পেয়েছেন বলেই জানিয়েছেন আলমগীর। তিনি বলেছেন, ‘আমরা যে বার্তা নিয়ে ৪৬ দিন ধরে হেঁটে দিল্লি পৌঁছেছি, তা সার্থক হয়েছে। মানুষের থেকে অনেক সাড়াও পেয়েছি। বিহার, উত্তর প্রদেশের মতো রাজ্যের প্রত্যন্ত জায়গাগুলিতে অনেকেই জানে না থ্যালাসেমিয়া কী রোগ। থ্যালাসেমিয়ার জন্য রক্তের প্রয়োজন হয় তাও জানে না। রক্তদান করা যায়, সে সম্পর্কেও তাদের কোনও ধারণা নেই। তারা জানে রক্ত কিনতে হয়। আমাদের যাত্রা পথে আমরা অনেক মানুষের কাছে পৌঁছাতে পেরেছি। তাদের বিষয়টা বোঝাতে পেরেছি। সচেতন করতে পেরেছি। রক্তদান করার জন্য অনেকে আমাদের ফোন নম্বরও নিয়েছে। আমরা পায়ে হেঁটে গিয়েছি বলেই এত মানুষের কাছে পৌঁছাতে পেরেছি। তাই যারা এই ধরণের সচেতনতামূলক যাত্রা করেন, তাদের উদ্দেশ্যে আমাদের একটাই অনুরোধ এবং পরামর্শ, আপনারা সাইকেল বা গাড়িতে নয়, পায়ে হেঁটে যান। তাহলে অনেক মানুষের কাছে পৌছানো যায়। তাতে লক্ষ্য অনেকটাই সফল হয়।’
তাঁদের এই মহত উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন রায়গঞ্জের বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী। তিনি বলেছেন, ‘বিগত দু’বছর ধরে কোভিড মহামারীর মধ্যে দিয়ে গিয়েছি আমরা। যার কারণে রক্তদানের প্রবণতাটা থমকে গিয়েছিল। অনেকে মনে করে, রক্ত দিলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাবে। সেই কারণে রক্তদানের প্রবণতা কমে গিয়েছিল। ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্তের আকাল দেখা দিয়েছিল। আমরা বিভিন্নভাবে চেষ্টা করছি। বিভিন্ন এনজিওর মাধ্যমে চেষ্টা করেছি। যাতে রক্তদান প্রক্রিয়ায় আরও বেশি করে মানুষ এগিয়ে আসে। আজ আমার সামনে তিন জন রয়েছেন। উনাদের প্রচেষ্টাকে সাধুবাদ জানাবো। সেলাম জানাবো। আলমগীর, হিমাংশু, কাইফ হোসেন রয়েছেন এখানে। তাঁরা মালদহ থেকে ৪৬ দিনের মধ্যে দিল্লি পৌঁছে গিয়েছিলেন একটা বার্তা নিয়ে। থ্যালাসেমিয়া রোগীদের রক্তের দরকার। তাই রক্তদানের প্রবণতা বাড়ুক। তাঁরা এই বার্তা দিয়েছেন। আমরা রক্তদান নিয়ে অনেক প্রচেষ্টা দেখেছি। কিন্তু তাঁদের এই প্রচেষ্টা সমাজকে একটা বিশেষ বার্তা দিয়েছে। তার পথপ্রদর্শক হিসেবে তাঁদের সমাজে সম্মানিত হওয়া উচিত। সেইজন্য মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে আপনাদের সংবর্ধিত করছি আমরা। আমি আজকে এই বার্তাই দিতে চাই যে, এই তিনজন যা করে দেখিয়েছেন, সেই ধরণের কর্মসূচিতে সমাজের সবাইকে দায়িত্ব নিতে হবে। কারণ যাঁরা থ্যালাসেমিয়া রোগী রয়েছেন, তাঁদের প্রতি মাসে রক্ত লাগে। সেখানে রক্তের জোগান পর্যাপ্ত পরিমাণে বাড়াতে হবে। সেই প্রচেষ্টা আমরা করছি। আবারও এই তিনজনকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আপনাদের এই প্রচেষ্টা সমাজে একটা নতুন জাগরণের সৃষ্টি করবে।’