মুখ্যমন্ত্রীর ভূয়সী প্রশংসায় রাজ্যপাল! কেন্দ্রীয় সংস্থা দিয়ে বিনিয়োগকারীদের বিরক্ত না করার পাল্টা অনুরোধ মুখ্যমন্ত্রীর
Connect with us

বাংলার খবর

মুখ্যমন্ত্রীর ভূয়সী প্রশংসায় রাজ্যপাল! কেন্দ্রীয় সংস্থা দিয়ে বিনিয়োগকারীদের বিরক্ত না করার পাল্টা অনুরোধ মুখ্যমন্ত্রীর

Published

on

Rate this post

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ : গত কয়েক বছরে রাজ্য বনাম রাজ্যপাল সংঘাত নতুন কোনও ঘটনা নয়। রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা থেকে শুরু করে সরকারি কাজকর্ম, রাজনীতি- সমস্ত বিষয় নিয়ে প্রকাশ্যেই- সে টুইট করেই হোক কিংবা চিঠি লিখে, সরকারের বিরুদ্ধে সরব হতে দেখা গিয়েছে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকরকে। কিছু দিন আগেই বিধানসভায় বাজেট অধিবেশনে উদ্বোধনী ভাষণ দিতে এসেও রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ এনেছিলেন রাজ্যপাল। তবে চুপ থাকেনি অপরপক্ষ।

পাল্টা জবাবও দিয়েছে সরকার এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও। দুই পক্ষের মধ্যে সংঘাত এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে মুখ্যমন্ত্রী টুইটারে রাজ্যপালকে ব্লক পর্যন্ত করে দেন। দু’জনের মধ্যে কথাও প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। তবে বুধবার নিউটাউনে বিশ্ববাংলা কনভেনশন সেন্টারে ষষ্ঠ বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের মঞ্চে সম্পূর্ণ চিত্র দেখা গেল। অনেকদিন পর দু’জনকে আবারও একে অপরের সঙ্গে হাসি মুখে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে দেখা গেল। কোথাও হল। যিনি প্রতিদিন মুখ্যমন্ত্রী, রাজ্য সরকার, রাজ্যের শাসক দলের বিরুদ্ধে টুইটারে সরব থাকতে ব্যস্ত থাকেন, বুধবার মুক্তকণ্ঠে সেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূয়সী প্রশংসায় পঞ্চমুখ হলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর। সকলকে অবাক করে দিয়ে এদিন রাজ্যপাল সম্মেলনের উদ্বোধনী ভাষণে বলেন, রাজ্যের উন্নয়নে অনুঘটকের কাজ করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যা শুনে অনেকেই বলছেন – ‘এতো ভূতের মুখে রাম নাম’। যা শুনে পরে মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যপালের কাছ থেকে সহযোগিতার আশ্বাস চেয়ে নেন।

আরও পড়ুন – শিল্প ও কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে শুরু হল ষষ্ঠ বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন,রাজ্যে বড় বিনিয়োগের সম্ভাবনা

Advertisement

যদিও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিরও প্রশংসা করেছেন রাজ্যপাল। প্রধানমন্ত্রী ‘পূবে তাকাও’ নীতিরই বাস্তবায়ন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় করছেন বলে জানিয়েছেন রাজ্যপাল। বাংলা দেশের অর্থনীতি বদলে দিচ্ছে, দেশকে বিকল্প অর্থনীতির রাস্তা দেখাচ্ছে বলেও স্বীকার করে নিয়েছেন তিনি। জগদীপ ধনকর তাঁর ভাষণে বলেছেন, ‘বাংলা ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির আদর্শ ভূমি। মানব সম্পদেও বাংলা অনেক এগিয়ে। বাংলার ক্ষমতা আছে দেশের অর্থনৈতিক মানচিত্র বদলে দেওয়ার। আজ বাংলা যা ভাবে, গোটা ভারত তা একদিন পর ভাবে। গোপালকৃষ্ণ গোখলে যা বলেছিলেন আজ সেটাই প্রমাণিত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির গলাতেও গোপালকৃষ্ণ গোখলের এই কথা বারবার শোনা গিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর পূবে তাকাও নীতির বাস্তব রূপ দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিনিয়োগের আদর্শ জায়গা বাংলাই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে আগামিদিন বাংলা আরও উন্নতি করবে। পূর্ব ভারতের ইকোনমি হাব হবে বাংলা। কোভিডের আতঙ্ক কাটিয়ে দু বছর পর এই বাণিজ্য সম্মেলন বাংলার সেই সাফল্যকেই তুলে ধরছে। আশা করি আগামিদিন উন্নয়নেরও আরও অনেক পথ দেখাবে বাংলা। সকলের সুরক্ষা ও উন্নতি চান প্রধানমন্ত্রী। আর প্রধানমন্ত্রীর এই লক্ষ্য পূরণ করার ক্ষমতা রয়েছে বাংলার। দেশের অর্থনীতির মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে বাংলা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যোগ্য নেতৃত্বে বাংলা উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। রাজ্যের উন্নয়নে অনুঘটক এর ভূমিকা পালন করছেন মুখ্যমন্ত্রী।

আরও পড়ুন – কলকাতা পুলিশে চালু হচ্ছে নেতাজি ব্যাটেলিয়ন, ১ হাজার ১৭১ জনকে নিয়োগ

এই উন্নয়নে পথ দেখাবে বিশ্ব বাংলা বাণিজ্য সম্মেলন।’ এবং মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বিশেষ বার্তা দিতে গিয়ে রাজ্যপাল বলেছেন, ‘উন্নয়নকে দলীয় রাজনীতি থেকে দূরে রাখুন। যাতে সমস্ত রাজনৈতিক দল উন্নয়নে শামিল হতে পারে। উন্নয়নের দিকে তাকিয়ে সব পক্ষের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপনের জায়গা তৈরি করুন।’ এর কিছুক্ষণ পরই সম্মেলনে উপস্থিত শিল্পপতি ও প্রতিনিধিদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দিতে গিয়ে রাজ্যে শিল্পের উন্নয়ন ও বিনিয়োগে রাজ্যপালের কাছ থেকে সহযোগিতা চান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভাষণের শেষের দিকে রাজ্যপালকে উদ্দেশ্য করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘রাজ্যে শিল্প এবং বিনিয়োগের জন্য আপনার এবং কেন্দ্রের সাহায্য ও সহযোগিতা চাই। শুধু একটা দিক দেখবেন না। সব দিক দেখুন। এখানে উপস্থিত শিল্পপতি ও বিনিয়োগকারীরা নিজের মুখে কিছু বলতে পারছেন না। তাই আমি বলে দিচ্ছি, অন্য ভাবে নেবেন না। এখানে যাঁরা বিনিয়োগ করবেন, তাঁদের বিভিন্ন এজেন্সি দিয়ে যেন বিরক্ত না করা হয়, সেটা একটু দেখবেন। আজ যে রকম সহযোগিতা করলেন, আগামী দিনেও বাংলার উন্নয়নের স্বার্থে একইভাবে সহযোগিতা করবেন বলে আশা করছি। আপনি রাজ্যপালদের সম্মেলনে বিষয়টি তুলবেন।’ রাজ্যের বিভিন্ন সাম্প্রতিক ঘটনায় রাজ্যের বিরোধী দল বিজেপি সিবিআই তদন্তের দাবি জানাচ্ছে। কয়লা ও গরু পাচার কাণ্ডে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে দলের একাধিক নেতা, মন্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নোটিশ পাঠাচ্ছে ইডি, সিবিআই। রাজ্যপাল নিজেও রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সরকারের সমালোচনায় প্রতিদিনই সরব হচ্ছেন। তাই এদিনের এই মন্তব্যের মাধ্যমে রাজ্যপালকে ঘুরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী পাল্টা বার্তা দিলেন বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

Advertisement

আরও পড়ুন – মুখ্যমন্ত্রীর আমন্ত্রণে সাড়া দিলেন না প্রধানমন্ত্রী, বাণিজ্য সম্মেলনে আসছেন না নরেন্দ্র মোদি

Ads Blocker Image Powered by Code Help Pro

Ads Blocker Detected!!!

We have detected that you are using extensions to block ads. Please support us by disabling these ads blocker.