বাংলার খবর
‘পাপ করল বিজেপি, কষ্ট করবে জনগণ?’, টুইটারে ক্ষোভ প্রকাশ মুখ্যমন্ত্রীর
বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: বিজেপির প্রাক্তন মুখপাত্র নূপুর শর্মার হজরত মহম্মদকে নিয়ে করা বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে উত্তাল গোটা দেশ। তার আঁচ এসে পড়েছে রাজ্যেও। বৃহস্পতিবার থেকেই উত্তাল হয়ে উঠেছে হাওড়া। দফায় দফায় শুরু হয়েছে আন্দোলন, বিক্ষোভ, পথ ও রেল অবরোধ। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পার্টি অফিস ভাঙচুর চালানোর পাশাপাশি আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে বেশকিছু পুলিশ কিওস্ক ও গাড়িতেও। আক্রান্ত হয়েছে পুলিশ। এই বিক্ষোভ, আন্দোলনের জেরে চূড়ান্ত হয়রানির শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
যা নিয়ে আবারও ক্ষোভ প্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার তিনি টুইট করে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। সেই সঙ্গে, বিজেপির পাপের সাজা কেন জনগণকে ভুগতে হবে, সেই নিয়েও প্রশ্ন তুলে পদ্ম শিবিরকে আক্রমণ করেছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী টুইটারে লিখেছেন, ‘আগেও বলেছি, দু’দিন ধরে হাওড়ার জনজীবন স্তব্ধ করে হিংসাত্মক ঘটনা ঘটানো হচ্ছে। এর পিছনে কিছু রাজনৈতিক দল আছে এবং তারা দাঙ্গা করাতে চায়- কিন্তু এসব বরদাস্ত করা হবে না। এবং এ সবের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা হবে। পাপ করল বিজেপি, কষ্ট করবে জনগণ?’
বৃহস্পতিবার ১১ ঘণ্টা অবরোধ থাকার পর শুক্রবার দুপুর একটা থেকে হাওড়ার বিভিন্ন জায়গায় আন্দোলন করতে শুরু করেন বিক্ষোভকারীরা। দুপুর থেকেই শুরু হয় পথ অবরোধ ও ট্রেন অবরোধ। অবরোধের জেরে রাস্তায় সারি দিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে পণ্যবাহী ও যাত্রীবাহী গাড়ি। ট্রেন অবরোধের জেরে হাওড়া-খড়্গগপুর শাখায় বাতিল করতে হয় একাধিক দূরপাল্লার ও লোকাল ট্রেন। চরম হয়রানির শিকার হন সাধারণ মানুষ। বৃহস্পতিবার নবান্ন থেকে সাংবাদিক সম্মেলন করে রাজ্যে শান্তি বজায় রাখার জন্য অবরোধ তুলে নেওয়ার অনুরোধ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দিল্লি এবং বিজেপি শাসিত রাজ্য গুলোতে গিয়ে বিক্ষোভ দেখাবার পরামর্শ দেন মুখ্যমন্ত্রী। কয়েকজন করে গিয়ে বিভিন্ন থানায় অভিযোগ দায়ের করার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। তাতে তাঁর পূর্ণ সমর্থন থাকবে বলেও জানিয়েছিলেন। কিন্তু তাতেও কোনও লাভ হয়নি। তারপর বৃহস্পতিবার রাতে অবরোধ উঠে গেল শুক্রবার আবার নতুন করে শুরু হয় হাওড়ার বিভিন্ন জায়গায় অশান্তি।
এরপরই কঠোর পদক্ষেপ নিতে শুরু করে রাজ্য প্রশাসন। নামানো হয় RAF। ডোমজুড়, সাঁকরাইল, পাঁচলা, উলুবেড়িয়া, মনসাতলা, চেঙ্গাইল, নিমদীঘি, গঙ্গারামপুর, বাজারপাড়া, ফুলেশ্বর, রাজাপুর, কুর্চি শিবপুর, খালাতপুর, গড় ভবানীপুর, উদয়নারায়ণপুর, বাগনানের বেশ কিছু জায়গা সহ আরও কিছু অঞ্চলে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। সবকটি এলাকায় পুলিশি টহলদারি চলছে। যাতে ভুয়ো খবর ছড়িয়ে না পড়ে, তার জন্য গোটা হাওড়া জেলায় ইন্টারনেট পরিষেবা সোমবার পর্যন্ত বন্ধ রাখা হয়েছে। কারও বিরুদ্ধে যদি অশান্তি ছড়ানো, প্ররোচনা দেওয়া বা ভুয়ো খবর ছড়ানোর প্রমাণ মেলে, তার বিরুদ্ধে কড়া আইনি পদক্ষেপ নেয়া হবে বলেও রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।