সুকান্ত জোর করে হাওড়া যেতে গেলে নিউটাউনে পুলিশের সঙ্গে কেন্দ্রীয় বাহিনীর হাতাহাতি
Connect with us

বাংলার খবর

সুকান্ত জোর করে হাওড়া যেতে গেলে নিউটাউনে পুলিশের সঙ্গে কেন্দ্রীয় বাহিনীর হাতাহাতি

Published

on

Rate this post

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: সকালে নিউটাউনে ধুন্ধুমার। বিক্ষোভ-আন্দোলনে উত্তপ্ত হাওড়া যাওয়ার জন্য শনিবার সকালে বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার নিউটাউনের বাড়ি থেকে বেরোতে গেলে বাধা দেয় পুলিশ। বিজেপি কর্মীরা তাঁকে বাড়ি থেকে বার করে নিয়ে এলেও পুলিশ তাঁর কনভয় আটকে দেয়। এরপরই বিধান নগর পুলিশ কমিশনারেটের পুলিশ কর্মীদের সঙ্গে প্রথমে বচসা তারপরে রীতিমতো হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন বিজেপি কর্মী-সমর্থক এবং সুকান্ত মজুমদারের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা। শেষ পর্যন্ত দুপুর দু’টো নাগাদ কনভয় নিয়ে হাওড়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেন সুকান্ত মজুমদার।

প্রথমে সকাল ১১টায় নিউটাউনের বাড়ি থেকে বেরিয়ে হাওড়ার উলুবেড়িয়ায় যাওয়ার কথা ছিল সুকান্ত মজুমদারের। তার আগেই পুলিশের পক্ষ থেকে তাঁকে জানানো হয় তিনি যেতে পারবেন না। তাঁর বাড়ির সামনে গার্ডরেল দিয়ে ঘিরে দেওয়ার পাশাপাশি মোতায়েন করা হয় পুলিশ। সেই নির্দেশকে উপেক্ষা করেই সুকান্ত মজুমদার বাড়ি থেকে বেরোতে গেলে পরিস্থিতি জটিল হয়ে ওঠে। সুকান্ত মজুমদার অভিযোগ করেন, ‘আমি হাওড়া যেতে চাই। কিন্তু পুলিশ আমাকে বাড়িতে আটকে দিয়েছে। পুলিশ দলদাসে পরিণত হয়েছে। আমাকে আটকে দেওয়ার কোনও কারণ দেখাতে পারেনি পুলিশ। বলছে হাওড়ায় ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে বলে আমাকে যেতে দেবে না। কিন্তু আমার বাড়িতো নিউটাউনে। হাওড়া থেকে অনেক দূরে। আমি যখন সকাল ১১ টায় বাড়ি থেকে বেরোতে গিয়েছিলাম তখন পুলিশ আমাকে আটকে দেয়। পুলিশ কোনও কাগজ বা লিখিত নির্দেশ দেখাতে পারেনি। কেন আমাকে গৃহবন্দি করে রাখতে চাইছে, বুঝতে পারছি না।’ পুলিশ তাঁকে হাওড়া যাবেন না বলে মুচলেকা দেওয়ার কথা বলেছিল বলে দাবি করেছেন সুকান্ত। এরপরই তিনি রাজ্য প্রশাসনের ব্যর্থতা নিয়ে সরব হয়ে বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী তিনদিন ধরে কোনও ব্যবস্থা নেননি। প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করতে ব্যর্থ হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি প্রথমেই শক্ত হাতে পদক্ষেপ নিলে এরকম পরিস্থিতি তৈরি হত না। ঝাড়খন্ডেও প্রতিবাদ হচ্ছে। কিন্তু সেখানে পুলিশ প্রথম থেকেই কড়া পদক্ষেপ নেওয়ায় এই পরিস্থিতি তৈরি হয়নি।’

বিজেপির প্রাক্তন মুখপাত্র নূপুর শর্মার হজরত মহম্মদকে নিয়ে করা বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে উত্তাল গোটা দেশ। তাঁর আঁচ এসেছে পড়েছে রাজ্যেও। বৃহস্পতিবার থেকেই হাওড়ার বিভিন্ন জায়গায় শুরু হয়েছে বিক্ষোভ, আন্দোলন, অশান্তি। যার জেরে উত্তাল গোটা জেলা। বৃহস্পতিবার নবান্ন থেকে সাংবাদিক সম্মেলন করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অবরোধকারীদের আন্দোলন প্রত্যাহার করার অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু তাতেও কোনও লাভ হয়নি। বৃহস্পতিবার ১১ ঘণ্টা অবরোধ-আন্দোলন চলার পর শুক্রবার দুপুর থেকে হাওড়ার একাধিক জায়গায় শুরু হয় বিক্ষোভ অবরোধ। উলুবেড়িয়ার মনসাতলায় বিজেপির গ্রামীণ কার্যালয় ভাঙচুর চালানোর পাশাপাশি আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। পাঁচলাতে ভাঙচুর করা হয় তৃণমূলের পার্টি অফিস। ভাঙচুর করা হয় পুলিশের কিয়স্ক। আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় একাধিক গাড়িতে। শুক্রবার থেকেই কড়া পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে রাজ্য প্রশাসন। হাওড়ার বিভিন্ন জায়গায় জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা। জেলায় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবা। উত্তেজনা প্রবণ এলাকাগুলিতে চলছে পুলিশের টহলদারি। নামানো হয়েছে RAF। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শনিবার টুইট করে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

Advertisement

এই পরিস্থিতির মধ্যেই শনিবার সকালে উলুবেড়িয়ার মনসা তলায় অগ্নিদগ্ধ পার্টি অফিস পরিদর্শনে যান বিজেপির সর্বভারতীয় সহসভাপতি দিলীপ ঘোষ। সেখানেই তাঁর সঙ্গে যাওয়ার কথা ছিল রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এবং প্রিয়াঙ্কা টিব্রেওয়ালের। সেখানে যাওয়ার পথেই বিদ্যাসাগর সেতুতে ওঠার মুখে বিজেপি নেত্রী প্রিয়াঙ্কা টিব্রেওয়ালকে আটকে দেয় পুলিশ। আর সুকান্ত মজুমদারকে নিউটনের বাড়িতেই আটকে দেয় পুলিশ।
বৃহস্পতি ও শুক্রবারের পর শনিবারও হাওড়ায় নতুন করে কয়েক জায়গায় শুরু হয়েছে অশান্তি। জানা গিয়েছে পাঁচলায় পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছোড়া হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পাল্টা কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে পুলিশ। জানা গিয়েছে, বিক্ষোভকারীদের হামলায় এক পুলিশ কর্মী আহত হয়েছেন। তাঁর পায়ে চোট লেগেছে।

Ads Blocker Image Powered by Code Help Pro

Ads Blocker Detected!!!

We have detected that you are using extensions to block ads. Please support us by disabling these ads blocker.