রান্নাবাটি
কলকাতা বিরিয়ানি খেতে মন চাইছে! তাহলে এখন বাড়িতেই বানিয়ে ফেলুন একদম দোকানের মত কলকাতা দম বিরিয়ানি।
বিরিয়ানি বানানো অনেক কঠিন কাজ তাদের জন্যই বিশেষ এই চিকেন বিরিয়ানির রেসিপি টি

বেঙ্গল এক্সপ্রেস: যারা বিরিয়ানি খেতে ভালোবাসেন কিন্তু সব সময় বাইরে থেকে বিরিয়ানি খাওয়ার পারমিশন থাকে না বাড়ি থেকে তাদের জন্য আজকের এই রেসিপিটা আমরা নিয়ে এসেছি। অনেকেই বিরিয়ানি পছন্দ করে কিন্তু কখনো বাড়িতে বানানো হয়ে ওঠেনি। আর যারা মনে করেন যে, বিরিয়ানি বানানো অনেক কঠিন কাজ তাদের জন্যই বিশেষ এই চিকেন বিরিয়ানির রেসিপি টি। চলুন খুব সহজে এবং ঝটপট বানিয়ে ফেলা যাক সামান্য কিছু উপকরণ দিয়েই।
উপকরণ:
বিরিয়ানির জন্য চাল ৫০০ গ্রাম।
চিকেন ৮০০ গ্রাম।
সাফরণ ৩ চিমটে।
বিরিয়ানি মাসালা পাউডার ২ চা চামচ।
দুধ হাফ কাপ।
আলু ২-৩ টি।
পেঁয়াজ বড় দেখে ২টি।
কেশর ফুড কালার ১ চিমটে।
দেশি ঘি ২-৩ চা চামচ।
সাদা তেল ৪ চা চামচ।
আদা বাটা ১ চা চামচ।
রসুন বাটা ১ চা চামচ।
দই ২-৩ চা চা।
নুন প্রয়োজন মতো।
রেড চিলি পাউডার ১ চা চামচ।
ডিম ৩-৪ টি।
বিরিয়ানি ফ্লেভার ২-৩ ফুটো।
কেওড়ার জল ১ চা চামচ।
তেজপাতা ১-২ টি।
বড়ো এলাচ ১-২ টি।
সবুজ এলাচ ৩-৪ টি।
চিনি ১ চা চামচ।
গোলাপ জল ১ চা চামচ
দারুচিনি ৪-৫ টুকরো।
লবঙ্গ ৪-৫ টি।
প্রণালী: প্রথমে একটি পাত্রের মধ্যে চিকেন গুলোকে ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। আপনারা চাইলে লেগ পিস ও দিতে পারেন আর পাশাপাশি অন্যান্য সাইজের টুকরো করতে পারেন। তারপর সেই চিকেনের পাত্রের মধ্যেই এক চামচ শুকনো লঙ্কার গুঁড়ো, এক চামচ আদা রসুন বাটা, নুন হাফ চা চামচ, তিন চামচ টক দই এবং বিরিয়ানি মসলা হাফ চা চামচ দিয়ে ভালো করে মেখে আমরা ম্যারিনেট করবার জন্য এক ঘন্টা রেখে দিব।
তারপর আমরা বিরিয়ানির জন্য বাসমতি চাল গুলোকে ভাল করে ধুয়ে নিব। চাল ধুয়ে নেওয়ার পর আধঘন্টার জলে ভিজিয়ে রাখবো চালগুলো। আধঘন্টা ভিজিয়ে রাখবার কারণে চালগুলো বেশ লম্বা লম্বা হয়ে উঠবে। তারপর আলু গুলোকে মাঝখান থেকে টুকরো করে নেওয়ার পর সামান্য একটু কেশার ফুড কালার দিয়ে ভালো করে মাখিয়ে এক ঘন্টার জন্য ঢেকে রেখে দেবো।
এরপর আমরা উনুনে একটি বড় পাত্রের মধ্যে সামান্য কিছু জল নিয়ে সেই জলের মধ্যে দিয়ে দেব একটি বড় এলাচ এবং চারটি ছোট এলাচ। তারপর সেই পাত্রের মধ্যে চার-পাঁচটি লবঙ্গ এবং চার থেকে পাঁচ টি দারচিনির টুকরো। তারপর আমরা দের চা চামচ নুন এবং ১ চা চামচ চিনি দিয়ে দেব। তারপর সে জল যখন ফুটতে আরম্ভ করবে তখনই ভিজিয়ে রাখা বিরিয়ানির চাল সেই জলের মধ্যে দিয়ে ৯০% অব্দি ফুটিয়ে নিতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে যেন বেশি না ফুটে তাহলে খেতে স্বাদ হবে না। একটু শক্ত শক্ত থাকতে নামিয়ে জল ঝরিয়ে নিতে হবে। বাসমতি চাল গুলোর জল ঝরানো হয়ে গেলে সেগুলোকে কিছুক্ষণের জন্য ঠান্ডা করে নেওয়ার পর সেই চালগুলোকে ঘি দিয়ে ভালো করে মাখিয়ে নিতে হবে। এবং হাফ কাপ দুধের মধ্যে তিন চিমটি কেশর ভালো করে ভিজিয়ে রাখতে হবে প্রায় এক ঘন্টার মত।
তারপর একটি উনুনে করায় চাপিয়ে দিয়ে সেই কড়াইতে চার চামচ মত সাদা তেল নেওয়ার পর সে তেলের মধ্যে পেঁয়াজ কুচি ভালো করে ভেজে নিতে হবে, খেয়াল রাখতে হবে পেয়াজগুলো যেন একটু ব্রাউন কালারের হয় তারপর সেগুলোকে তুলে নিতে হবে। সেই পেঁয়াজ ভাজা তেলের মধ্যে সাইজ করে কেটে রাখা আলো গুলোকে ৫ থেকে ৬ মিনিটের জন্য ভালো করে ভেজে নিতে হবে। তারপর সামান্য আরেকটু কড়াইতে তেল দেওয়ার পর সেই তেলের মধ্যে ম্যারিনেট করে রাখা চিকেন গুলোকে দূর থেকে তিন মিনিটের জন্য করে ভেজে নিতে হবে। ভালো করে ভাজতে হবে যাতে দু সাইডের কালার লাল হয়ে যায়।
আর পরুন ব্রেড পিজ্জা পকেট বানানোর সহজ পদ্ধতি জানতে পড়ুন বিস্তারিত।
এইবার বিরিয়ানি রান্নার সবথেকে বড় সিঁড়ি। প্রথমে একটি বড় হাড়ের মধ্যে অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল কিছুটা নিয়ে হাড়ের ভেতরের তলায় সুন্দর করে বিছিয়ে নিতে হবে যাতে বিরিয়ানির চাল একটুও নষ্ট না হয়। সেই ফয়েলের উপর সুন্দর করে তিন থেকে চারটি তেজপাতা বিছিয়ে নেব এবং তার ওপর ভেজে রাখা আলুগুলো সাজিয়ে নেব এবং সেই আলুর ওপরেই ম্যারিনেট করে ভেজে রাখা চিকেনগুলোও দিয়ে দেব, এবং সাথে চিকেনের মসলাগুলো এবং তেলটাও সাথে দিয়ে দেব যাতে ওই তেলেই আলু এবং চিকেন গুলো আরো ভালো করে কুক হয়ে যায়। তারপর হাফ কাপ এর মত দুধ কেশরের মধ্যে হাফ চা চামচ গোলাপ জল এবং হাফ চা চামচ কেওড়ার জল ভালো করে মিক্স করে নিতে হবে। তারপর সেই কেশর দুধের মাটিতেই দুধ ফোঁটা বিরিয়ানির ফ্লেভার মিশিয়ে নিতে হবে। এই বিরিয়ানি ফ্লেভার এর জন্যই একদম বাইরের দোকানের মত স্বাদ আসবে। এবার আমরা যে চিকেনের লেয়ারটি হাঁড়ির মধ্যে তৈরি করেছিলাম তার ওপরে দিয়ে দেব বিরিয়ানির মসলা, তারপর ভেজে রাখা পেঁয়াজ থেকে অল্প একটু পেঁয়াজ নিয়ে ছড়িয়ে দেবো এবং হাফ চা চামচ পাতি লেবুর রস দিয়ে দেব।
তারপর অর্ধেকটা রাইস দিয়ে ভালো করে একটি লেয়ার বানিয়ে নেওয়ার পর তার ওপরে আমরা দিয়ে দেবো চিকেন ভাজার পর বেঁচে যাওয়া কিছুটা তেল মসলা এবং আবারও সামান্য কিছু বিরিয়ানি মসলা, তার ওপর আরেকটু পেঁয়াজের বেরেস্তা দিয়ে অর্ধেক এর মত কেশর দুধ দিয়ে দেব। তারপর বাকি বিরিয়ানির চালটুকু সে লেয়ারের উপর দিয়ে বাকি পেয়াজ এবং বাকি কেশর দুধটুকুও দিয়ে দেব সাথে দেব বেঁচে যাওয়া হাফ চা চামচের মতো লেবুর রস এবং বিরিয়ানি মসলা ভালো করে দিয়ে তারপর সেদ্ধ করে রাখার ডিম গুলো ভাতের ভিতরে ভালো করে ঢুকিয়ে দেবো তারপর এক চা চামচ ঘি দিয়ে একটি বড় অ্যালুমিনিয়াম অয়েল নিয়ে হাড়িটির মুখ ভালো করে আটকে দেব। আপনাদের কাছে যদি বেশি অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল না থাকে তাহলে আপনারা আটা দিয়ে ভালো করে মুখটা ঢেকে দিতে পারেন যাতে কোন ধরনের কিছু বাইরে বেরিয়ে না আসতে পারে। তারপর একটি রুটির তা বেশি করে গরম করে নিতে হবে সেই রুটির তাওার উপরেই বিরিয়ানির হাড়িটি বসিয়ে দিয়ে একদম লো ফ্লেমে প্রায় আধা ঘন্টার মত দম দিয়ে নিতে হবে।
আধা ঘন্টা হয়ে যাওয়ার পরও আরো 15 থেকে 20 মিনিট হারিটিকে ঠান্ডা হয়ে যাওয়ার জন্য নিচে সরিয়ে রাখতে হবে। 15 থেকে বিশ মিনিট পর ঢাকনা খুলে প্লেটের মধ্যে সাজিয়ে নিয়ে পরিবেশন করলেই ব্যাস আপনার বাইরের দোকানের মত তৈরি কলকাতা বিরিয়ানি।