দেশের খবর
অযথা বিতর্কের প্রয়োজন নেই, জ্ঞানবাপী বিতর্কে উল্টো সুর ভাগবতের গলায়
বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: জ্ঞানবাপী বিতর্কে এবার উল্টো সুর আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবতের গলায়। জ্ঞানবাপী বিতর্ক নিয়ে যখন উত্তাল সারাদেশ, তখন সঙ্ঘপ্রধান জানিয়ে দিলেন, সব মসজিদে লিঙ্গ খুঁজতে গিয়ে অযথা বিতর্ক তৈরি করার কোনও প্রয়োজন নেই। বৃহস্পতিবার নাগপুরে আরএসএ-এর একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে মোহন ভাগবত বলেছেন, ‘সমস্ত মসজিদে শিবলিঙ্গ খোঁজার কোনও প্রয়োজন নেই।
প্রতিদিন নতুন নতুন বিতর্ক তৈরি করার কোনও প্রয়োজন নেই। জ্ঞানবাপী নিয়ে আমাদের আলাদা ভক্তি থাকতেই পারে, তাই বলে সমস্ত মসজিদে শিবলিঙ্গের অস্তিত্ব খুঁজতে গিয়ে অযথা বিতর্ক উস্কে দেওয়া কখনই উচিত নয়। তাই সকলের কাছেই আমার অনুরোধ, আদালতের রায় মেনে চলুন।’ এরপরই তিনি রাম মন্দিরের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘ইতিহাসের সাক্ষী থাকা অযোধ্যায় রাম মন্দির তৈরি করাই আমাদের লক্ষ্য ছিল। সেই লক্ষ্যে আন্দোলন গড়ে তুলে আমরা সফল হয়েছি। তাই নতুন করে আর কোনও বিতর্ক বা আন্দোলনের প্রয়োজন নেই। ইতিহাস কে বদলানো যায় না। মনে রাখবেন এই সময়ের কোনও হিন্দু বা মুসলিম তা রচনা করেননি। বহু যুগ আগে তা রচনা করা হয়েছিল। বহিরাগতরা যখন আমাদের দেশে আক্রমণ করেছিল, তখনই ইসলাম প্রবেশ করেছিল আমাদের দেশে। শুধু হিন্দুই নয়, স্বাধীনতাকামীদের মনোবলকে ভাঙতেই তখন উপাস্য দেবতাদের মূর্তি, মন্দির ধ্বংস করা হয়েছিল।’ মসজিদে শিবলিঙ্গ খোঁজার অতি সক্রিয়তাকে তিনি যে মোটেও ভালো চোখে দেখছেন না, তা তাঁর এই বক্তব্যেই প্রমাণিত। আর তাঁর এহেন মন্তব্য নিয়ে ইতিমধ্যেই জোর আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে। তাঁর এই বক্তব্যের মধ্যে কোনও অন্তর্নিহিত মানে আছে কিনা, তাও খোঁজার চেষ্টা করছে অনেকে।
কাশির জ্ঞানবাপী মসজিদে একসময় হিন্দু ধর্ম মতে পুজো হত, এটা প্রমাণ করতেই উঠেপড়ে লেগেছেন হিন্দুত্ববাদীদের একাংশ। ৫ হিন্দু মহিলা জ্ঞানবাপী মসজিদের ভিতরের পশ্চিম দেওয়াল ও মা শৃঙ্গার গৌরী (অজুখানা, তহখানা) তে হিন্দু দেব-দেবীদের মূর্তির অস্তিত্ব দাবি করে পুজো করতে চেয়ে ২০২১ সালের আগস্টে বারাণসী আদালতে মামলা করেন। সেই মামলার ভিত্তিতেই আদালতের নির্দেশে জ্ঞানবাপী মসজিদের ভিতরে শুরু হয় ভিডিও সার্ভে। তারপরই দাবি ওঠে, সেখানে নাকি শিবলিঙ্গ পাওয়া গিয়েছে। তারপরই সুপ্রিম কোর্ট মসজিদের ওজুখানা সিল করে দেওয়ার নির্দেশ দেয়। তবে যাঁরা নামাজ পড়তে আসবেন, তাঁদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা করারও নির্দেশ দেয় দেশের সর্বোচ্চ আদালত। তার মধ্যেই মোহন ভাগবতের এই বক্তব্য বিতর্কে নতুন মাত্রা যোগ করল, তাতে কোনও সন্দেহ নেই।