বাংলার খবর
তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কালো ধোঁয়ায় ঢেকেছে আকাশ, অজানা আতঙ্কে কাঁটা গ্রামবাসী
বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: আশীর্বাদের দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশান আজ অভিশাপে পরিণত। গ্রামবাসীদের কাছে নব্বইয়ের দশকের শেষের বাঁকুড়া জেলার মেজিয়াতে ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেছিল দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশানের অধীনস্ত মেজিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র।
এই সংস্থার আগমন আর্শীবাদ স্বরুপ গ্রহন করেছিল গ্রামবাসীরা। কারণ তা এনে দিয়েছিল হাজার হাজার কর্মসংস্থান। কিন্তু বর্তমানে এই তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র অভিশাপের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে পার্শ্ববর্তী গ্রামের বাসিন্দাদের কাছে। একটাই কারণ, তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে নির্গত ছাই।
দীর্ঘদিন ধরে এই তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে নির্গত ছাই ঢেকে দিয়েছে একরের পর একর চাষ যোগ্য জমি। ঢেকে দিয়েছে জলাশয়, বয়ে এনেছে অনেক রোগ অসুখ। একটা সময় ছিল মেজিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র পাশ্ববর্তী গ্রামগুলি যথা বাঁকদহ,জামগাড়ি,রাধাকৃষ্ণপুর সহ আরও ১৪টি গ্রামগুলিতে চাষাবাদ খুব ভালো হতো।
কৃষিনির্ভর এই গ্রামগুলোতে মানুষ গুলোর দিন চাষাবাদ করে ভালোই কাটছিল। কিন্তু তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে নির্গত ছাই যেন সবার মুখের ভাত কেড়ে নিয়েছে।
আরও পড়ুন: ট্যাক্সেশন ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান নিয়োগের ক্ষমতাও হাতছাড়া হচ্ছে রাজ্যপালের
শুধু কৃষিকাজই নয়, গ্রামের গৃহ বধূরা জানাচ্ছেন, রান্না করার সময় সেই ছাই তাদের রান্নার সামগ্রির ওপর এসে পড়ে। বছরভর উড়ন্ত ছাইকে ঠেলে স্কুল কলেজে যেতে হয় ছাত্রছাত্রীদের যার জেরে দানা বাঁধছে একাধিক রোগ। এমনকি পানীয় জলেও মিশছে সেই ছাই।
একাধিকবার একাধিক জায়গায় অভিযোগ জানিয়েও মেলেনি কোনও সুরাহা। গ্রামবাসীদের কয়েকজন জানান, ডিসিসি যখন স্থাপন হয় ২১০ মেগা ইউনিট করে তিনটে ইউনিট হবার কথা ছিল। কিন্তু এখন ডিভিসি ২৫০০ মেগা ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপন্ন করে। যার ফলে বাড়তি ছাইকে ডিভিসির সুকৌশলে বাইরে বের করে দিচ্ছে যা ৬ ফুট ৭ ফুট উচ্চতায় জমিতে এসে বসছে।
এরকম চলতে থাকলে কৃষকদের আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে হবে। গ্রামের এক গৃহবধু জানান, রান্না করতে করতে ছাই উড়ে এসে খাবারে বসছে তা থেকে অনেক রোগ সৃষ্টি হচ্ছে।
আরও পড়ুন: পেট্রোল পাম্পে তেল ভরতে গিয়ে গাড়িতে আগুন! অল্পের জন্য রক্ষা পেলেন চালক
সবে মিলে শিল্পাঞ্চলের পার্শবর্তী এলাকার পরিস্থিতি খুবই শোচনীয়। গ্রামবাসীরা বারংবার দারস্থ হয়েছে সংশ্লিষ্ট সংস্থার নিচু মহল থেকে উঁচু মহলে তবুও কোনও সমাধান এখনও হয়নি। মেজিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জেনারেল ম্যানেজার প্রবীর চাঁদ জানান। আমরা কি কৃষকদের চিহ্নিতকরণ করে ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করবো। শুধুই কি আশ্বাস নাকি কি সত্যি হবে সমস্যার সমাধান, কি হবে এতোগুলো গ্রামের ভবিষ্যত, আদেও কোনো সুরাহা মিলবে সেটাই এখন দেখার বিষয়।