বাংলার খবর
বিজেপিতেই মুকুল রায় ঘোষণা স্পিকারের

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: বিজেপিতেই আছেন মুকুল রায়। তিনি দলত্যাগ করেননি। বুধবার বিধানসভায় জানিয়ে দিলেন অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। ২১এর বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির টিকিটে কৃষ্ণনগর উত্তর কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছিলেন মুকুল রায়। তার মাস খানেকের মধ্যেই গত বছরের ১১ জুন তৃণমূল ভবনে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে তৃণমূলে ফেরেন মুকুল রায়। এরপর বিধানসভায় মুকুলকে পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান করা হলে চরম আপত্তি জানায় বিজেপি। এরপরই মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে দলত্যাগ বিরোধী আইন প্রয়োগ করে তাঁর বিধায়ক পদ খারিজ করার আবেদন জানান রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
প্রথম দফায় বারোটি শুনানি হওয়ার পর গত ১১ ফেব্রুয়ারি স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, মুকুল রায় বিজেপিতেই আছেন, তিনি দলবদল করেননি। অধ্যক্ষর সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় বিজেপির পরিষদীয় দল। কিন্তু কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ সাত দিনের মধ্যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য স্পিকারের কাছে মামলা ফেরত পাঠিয়ে দেন। স্পিকার সেই রায় না দিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। সুপ্রিম কোর্টও মামলাটি ফেরত পাঠিয়ে দেয় কলকাতা হাইকোর্টে। কিন্তু সেবারও হাইকোর্ট চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য স্পিকারের কোর্টে বল ঠেলে দেয়। সেই নিয়ে আবারও বিধানসভার স্পিকারের ঘরে দীর্ঘ শুনানি হয়। বিজেপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, মুকুল রায়ের তৃণমূলে যোগ দেওয়ার সমস্ত প্রমান তাদের হাতে রয়েছে। তারপরও স্পিকার রায় দেন যে মুকুল রায় দলবদল করেননি। তিনি বিজেপিতে আছেন।
সেই রায়কে আবারও চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় বিজেপি। গত ১১ এপ্রিল দলত্যাগ বিরোধী আইনে মুকুলের বিধায়ক পদ খারিজের দাবি সংক্রান্ত মামলা বিধানসভার স্পিকারকে পুনর্বিবেচনা করতে বলে এক মাসের মধ্যে চূড়ান্ত রায় দেওয়ার নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। সেইমতো গত মাসের ১১ তারিখের মধ্যেই দুই পক্ষের উপস্থিতিতে মামলার শুনানির সমস্ত প্রক্রিয়া শেষ হয়। অপেক্ষা ছিল স্পিকারের রায় ঘোষণার।
বুধবার বিজেপির আবেদন খারিজ করে বিধানসভায় সেই রায় ঘোষণা করতে গিয়ে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় আবারও জানিয়ে দিলেন বিজেপিতেই রয়েছেন মুকুল রায়। তিনি দলবদল করেননি। ফলে তাঁর বিধায়ক পদ খারিজ হচ্ছে না। স্পিকার বলেছেন, ‘মুকুল রায়ের বিধায়ক পদ খারিজ এবং তাঁকে পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান নিযুক্ত করার বিরোধিতা করে শুভেন্দু অধিকারী ও অম্বিকা রায় বিধানসভায় যে দুটি পিটিশন জমা দিয়েছিলেন, সেই নিয়ে তাঁরা হাইকোর্টে গিয়েছিলেন। বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টেও গিয়েছিল। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে মামলাটি আবার হাইকোর্টের ফিরে আসে। হাইকোর্টের বিচারপতি আমাকে মামলাটি এক মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করার জন্য বলেছিলেন। আমি উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনেছি। ইলেকট্রনিক এভিডেন্স গুলো ভালো করে দেখেছি। কিন্তু হামলাকারীরা যে ইলেকট্রনিক এভিডেন্স গুলো জমা দিয়েছিল, তার যথার্থতা প্রমাণ করতে পারেনি। এই পরিস্থিতিতে আমি আমার আগের দেওয়া রায়ই বহাল রাখছি।’ এদিন স্পিকারের রায় ঘোষণার সময় বিধানসভায় বিজেপির পক্ষের কোনও আইনজীবী উপস্থিত না থাকলেও উপস্থিত ছিলেন মুকুল রায়ের আইনজীবী সায়ন্তক দাস। এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন তিনি।