বাংলার খবর
চাষের কাজে সময় বাঁচাতে অভিনব উদ্যোগ, কিষান ড্রোন আবিস্কার বাংলার ইঞ্জিনিয়রের
বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: জমিতে কীটনাশক স্প্রে করবে ড্রোন। যার পোশাকি নাম কিষান ড্রোন। তৈরি করেছেন শিবপুর বি ই কলেজের ইঞ্জিনিয়াররা।
পোলবার রাজহাট ভাটুয়ায় বাড়ি কৃশানু সিং এর। কৃশানু শিবপুর থেকে এরোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেন। নিজেদের চাষের জমি আছে তাঁদের। সেই জমিতে চাষ করার সময় দেখেছেন,ধান পাট হোক বা সব্জি বা আম গাছ,তাতে কীটনাশক ছড়াতে অনেক মজুর ও সময় লাগে, খরচ হয় বেশি। নানা কারনে কৃষি শ্রমিকের অভাব তৈরি হয়েছে। সময়টাও একটা বড় ব্যাপার। তাই কি করলে এই সমস্যা দূর হতে পারে এই ভাবনা থেকে কিষান ড্রোন তৈরি।
বিদেশে এই ধরনের ড্রোনের ব্যবহার হয়। দেশের কয়েকটি রাজ্যেও ব্যবহার হচ্ছে। তবে বাংলায় সেই ভাবে কৃষিতে ড্রোনের ব্যবহার শুরু হয়নি এখনও। কৃশানু ও তার দুই বন্ধু ঝাড়খন্ডের ময়ঙ্ক রাজবংশ এবং উড়িষ্যার দীপক সোয়াইন মিলে কিষান ড্রোনে কিছু পরিবর্তন করে কিছু নতুন অ্যাপ্লিকেশন যুক্ত করে কৃষকদের সুবিধায় তৈরি করেছেন এই ড্রোন।
আরও পড়ুন: হস্তিশাবকের মৃত্যুতে উত্তেজনা ডুয়ার্সে
১০ লিটার ক্যাপাসিটির ড্রোন বিদেশ থেকে কিনতে দশ লাখ টাকা খরচ সেখানে কৃশানুদের কিষান ড্রোন তিন থেকে সারে তিন লাখ টাকায় পাওয়া যাবে। কৃষি দফতর বিভিন্ন সমবায়ের মাধ্যমে কাস্টম হায়ারিং সেন্টার ড্রোন কিনে কৃষকদের সহজে ভারা দিতে পারবে। বড় কৃষক যাদের বেশি জমি আছে তারা নিজেরাও কিনতে পারেন। কিষান ড্রোন অপরেট করাও খুব সহজ।
কীটনাশক স্প্রে করার পাশাপাশি পুকুর বা জলাশয়ে মাছের খাবার,খোল ছড়াতেও কাজে লাগবে ড্রোন। সাত মিনিটে তিন একর জমিতে স্প্রে করা যাবে।ব্যাটারী চালিত এই ড্রোন তিন কিমি পর্যন্ত পরিধিতে স্প্রে করতে পারবে।
প্রথম প্রথম যখন ধানকাটার মেশিন বা হার্ভেস্টার আসে তখন কৃষকরা দ্বিধায় ছিল এই ভাবে ধান কাটা যাবে কিনা।আর এখন হার্ভেস্টার ছারা ধান কাটাই হয়না।সময় বাঁচিয়ে কৃষি শ্রম না লাগিয়ে কম খরচে চাষের কাজে ব্যবহার করা যাবে ড্রোন।চাষাবাদ ক্রমশ আধুনিক হচ্ছে।এখন ট্রান্সপ্লান্টার মেশিন দিয়ে ধান রোয়া আলু বসানো হয়।চাষে আধুনিক যন্ত্রের ব্যবহার অনেক বেরেছে।এবার চাষের কাজে উড়ন্ত ড্রোন ব্যবহারও রপ্ত করবে কৃষকরা আশাবাদি ইঞ্জিনিয়াররা।
আরও পড়ুন: বেআইনি আর্থিক লেনদেন ধরতে এবার এসএসসি মামলার তদন্তে ইডি
কৃশানু সিং বলেন, কিষান ড্রোন যখন ওষুধ স্প্রে করবে তখন গাছের সব জায়গাটা কভার করবে।অনেক সময় গাছ বড় হলে তার সব জায়গায় ওষুধ দেওয়া সম্ভব হয়না।এছাড়াও প্রোগ্রাম সেট করে দিলে জমিতে নিজে থেকেই স্প্রে করবে ওষুধ শেষ হয়ে গেলে নিজের জায়গায় ফিরে আসবে।এছাড়া ছবিও তুলবে ড্রোন।যা থেকে কোথায় পোকা ধরেছে,গাছের ফসলের কি অবস্থা সবটাই বোঝা যাবে।
চাষের জমিতে কীটনাশক দিতে অনেক সময় সাপের কামরের ভয় থাকে। মাচার ফসলে সব জায়গায় ওষুধ দেওয়া সম্ভব হয় না। ফলে উৎপাদন মার খায়। কিষান ড্রোনে তা থেকে মুক্তি মিলবে। ময়ঙ্ক রাজবংশ বলেন, ”ড্রোনের ব্যবহার যাতে সহজেই করতে পারেন কৃষকরা তার জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। কেন্দ্র সরকার কিষান ড্রোনে সাবসিডি দিচ্ছে। তাই সহজে কৃষকরা ড্রোন নিতে পারেন”।