বাংলার খবর
কেশপুর কলেজে অধ্যক্ষের সঙ্গে বাংলার অধ্যাপকের ধস্তাধস্তি, দু’জনেই ছুটলেন থানায়
বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: মঙ্গলবার মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জের এক প্রাথমিক স্কুলে পড়ুয়াদের সামনেই হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েছিলেন প্রধান শিক্ষক এবং এক শিক্ষিকা। এবার মেদিনীপুরে কেশপুর সুকুমার সেনগুপ্ত মহাবিদ্যালয়ে তথা কেশপুর কলেজে একই ঘটনা ঘটল। বুধবার দুপুরে কলেজ চলাকালীন কলেজের ভিতরে পড়ুয়াদের সামনেই অধ্যক্ষের সঙ্গে বাংলা বিভাগের অধ্যাপকের ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটল। ছাত্র-ছাত্রীদের সামনে অস্বস্তি আরও বাড়িয়ে দু’জনেই ছুটলেন থানায় একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে। ঘটনায় অভিযোগের চাপানউতোরে নাজেহাল আনন্দপুর থানার পুলিশও।বিকেল থেকে কলেজের ভিতরে দুই পক্ষের বক্তব্য নিয়ে তদন্ত করলেন পুলিশ কর্তারা।
কেশপুর কলেজের বাংলা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক সুশান্ত দোলোই। ২০০৫ সালে তিনি কলেজে অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেছিলেন। ২০০৯ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের কাজ করেছেন। তারপরে এই কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন ড: দীপক কুমার ভুঁইয়া। দু’জনের মধ্যে সমস্যাটা তারপর থেকেই শুরু হয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। যার চরম পরিণতি হল বুধবার।
কলেজের বাংলার অধ্যাপক সুশান্ত বাবু বলেন, ‘আমি এই কলেজে একাধিক বিভাগে সমস্ত ভালো কাজকর্ম করেছিলাম। তার একটি করে শংসাপত্র হয়। ক্লাস নেওয়া, জুরি সদস্য হওয়া, ক্ষেত্র সমীক্ষাতে অংশ নিয়েছিলাম। এই সমস্ত কাজের শংসাপত্রের জন্য গত বুধবার আমি অধ্যক্ষকে জানিয়েছিলাম লিখিতভাবে। অধ্যক্ষ আমাকে বলেছিলেন এত দ্রুত তিনি করতে পারবেন না। একটু সময় লাগবে। কাগজ পরীক্ষা করে তিনি করবেন। প্রায় আট দিন পর আজকে সেই কাগজ আনতে গেলে অধ্যক্ষ অভব্য আচরণ করেন। এবং সেই শংসাপত্র দিতে অস্বীকার করেন। আমি প্রতিবাদ করলে আমাকে ঠেলে বের করে দেওয়া হয়। আসলে কলেজে উনি যোগ দেওয়ার পর একাধিক বেনিয়ম করেছেন। আমি তার প্রতিবাদ করাতেই এই কান্ড। বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় ও ঊর্ধ্বতন আধিকারিকদের জানানোর পাশাপাশি আনন্দপুর থানার পুলিশকেও জানিয়েছি। পুলিশ ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ দেখলেই জানতে পেরে যাবেন। এমন ঘটনা অনেকের সঙ্গেই হয়েছে। আমি চাই উনাকে এই কলেজ থেকে সরানো হোক।’
এ বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ ডঃ দীপক কুমার ভুঁইয়া পাল্টা দাবি করেন, ‘আমার বিরুদ্ধে পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। উনি কতগুলি কাগজ নিজে লিখে আমার কাছে হাজির করেছেন স্বাক্ষর করার জন্য। আমি যেগুলো যাচাই না করে দিতে পারব না। আমি সে কথা বলতেই আমার টেবিলের কাছে চলে এসে অভব্য আচরণ করেন উনি। তাই তাঁকে সরিয়ে আমাকে বের হতে হয়েছে। আসলে উনি চাইছেন আমি এখান থেকে সরে যাই। কারণ এই কলেজ আগে পাঠশালা ছিল। আমি এসে তাকে পুনর্গঠন করে নিয়ম মানতে বাধ্য করেছি। তাই আজ সমস্যা হচ্ছে। বিষয়টা পুলিশকে আমি জানিয়েছি। তবে সিসিটিভি সিস্টেম খারাপ থাকায় সেটা দেখাতে পারছি না।’
অধ্যাপকদের এই হাতাহাতিতে ঘটনায় অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে কলেজে। ঘটনার তদন্ত করতে ছুটে আসতে হয়েছে আনন্দপুর থানার পুলিশকে। দু’জনের সঙ্গেই দীর্ঘক্ষণ কথা বলে পুলিশ।