দেশের খবর
১২ বছর পলাতক থাকার পর মেয়েরা পরীক্ষায় পাশ করতেই আত্মসমর্পণ খুনের আসামির
বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: খুনের মামলায় অভিযুক্ত হয়ে পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে ১২ বছর ধরে পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন। যমজ কন্যা দশম শ্রেণীতে ভালো নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হওয়ার পরই আত্মসমর্পণ করলেন ওই পলাতক ব্যক্তি।
খুনের মামলায় দোষী নাগপুরের বাসিন্দা সঞ্জয় তেজনে প্রায় ১২ বছর আগে প্যারোলে ছাড়া পেয়ে পলাতক হয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু, তাঁর যমজ কন্যারা এই বছর দশম শ্রেণির মহারাষ্ট্র বোর্ড পরীক্ষায় ৮৬% এবং ৮৩% নম্বর পেয়ে পাশ করার পর গত ১২ মে আত্মসমর্পণ করেন সঞ্জয় তেজনে। ৫০ বছর বয়সে তেজনে, নিজেকে পুলিশের কাছ থেকে লুকিয়ে রেখেছিলেন। এবং ২০০৫ সালে জন্মগ্রহণ করা তাঁর যমজ সন্তানদের পড়াশোনার জন্য টাকা জোগার করতে একটি প্রিন্টিং ইউনিটেও কাজ করেছিলেন।
বৃহস্পতিবার নাগপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে এক এনজিও এবং কারা বিভাগ ১৬ বছর বয়সী শ্রদ্ধা এবং শ্রুতি তেজনেকে ভালো নম্বর পেয়ে পাশ করার জন্য সম্মানিত করে। দু’জনেই নাগপুরের হুদকেশ্বর খুর্দ চিকনা সান্তাজি হাইস্কুলের ছাত্রী ছিলেন।
২০০৩ সালের নভেম্বরে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার হন সঞ্জয়, তাঁর বাবা শালিকরাম এবং দুই ভাই বাসুদেব ও নামদেও। ২০০৫ সালে চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। সঞ্জয় দু’বার তাঁর স্ত্রী কল্পনা এবং মাকে দেখা করতে এসেছিলেন। যখন তাঁর কন্যারা জন্মগ্রহণ করে, তখন তিনি তাঁর সাজা মুকুব করার জন্য উচ্চ আদালতে আবেদন করেছিলেন। কিন্তু, সেই আবেদন খারিজ করে দেয় আদালত। তারপরে তিনি প্যারোল নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এবং তাঁর মেয়েরা বড় না হওয়া পর্যন্ত পলাতক হন। তিনি ৪ হাজার ২০০ দিন পলাতক থাকার পর আত্মসমর্পণ করেন। পলতাক থাকায় সঞ্জয় যাবজ্জীবন মেয়াদে আর কোনও ছুটি সহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা পাবেন না বলেই মনে করা হচ্ছে।
সঞ্জয়ের এক কন্যা শ্রদ্ধা জানান, তাদের বাবা মাঝে মাঝেই গোপনে তাদের সঙ্গে দেখা করতেন এবং সবসময় তাদের জন্য বই নিয়ে আসতেন। তাদের পরীক্ষার সময়, তিনি প্রতিদিন তাদের সঙ্গে পরীক্ষা কেন্দ্রে যেতেন। শ্রদ্ধা বলেছে, ‘তিনি সবসময় আমাদের অনুপ্রাণিত করেছেন। আমি ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে চাই এবং তারপরে আমার বাবার আইএএস অফিসার হওয়ার স্বপ্ন পূরণ করতে চাই। কিন্তু এখন সবকিছু আমার মায়ের কাঁধে পড়েছে। আমরা একটু অসহায় বোধ করছি।’
অপর কন্যা শ্রুতি বলেন, ‘বাবা দূরে থাকলেও তিনি কখনই পরিবারকে অরক্ষিত বোধ করতে দেননি। আমরা আমাদের শিক্ষকদের কাছেও কৃতজ্ঞ। এখন, আমাদের জীবনে আরও বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে।’