দেশের খবর
ব্যান্ডেল থেকে গ্রেফতার উত্তরপ্রদেশের এক ব্যাঙ্ক প্রতারণা চক্র! আটক ৪

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: গ্রাহক জানতেই পারতেন না, তাঁর ব্যাঙ্ক একাউন্ট থেকে টাকা সরিয়ে ফেলা হচ্ছে। অভিনব কায়দায় দলিলে থাকা আঙুলের ছাপ নকল করে উত্তর প্রদেশের এক ব্যাঙ্ক প্রতারণা চক্রকে ধরল চুঁচুড়া থানার পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তরপ্রদেশ সরকারের জমি, বাড়ি বিক্রির ওয়েব সাইট (upigrs.gov.in) থেকে তথ্য সংগ্রহ করত প্রতারকরা।
সেখান থেকে প্যান নম্বর, আধার নম্বর, আঙুলের ছাপ নিয়ে নিত। সেগুলোকে ফটোশপ করে নকল বানিয়ে পে ওয়ার্ল্ড অ্যাপে অ্যাকাউন্ট তৈরি করে গ্রাহকদের ব্যাঙ্কের সমস্ত তথ্য সংযোগ করে নিয়ে নিত। একজন গ্রাহকের কতগুলো অ্যাকাউন্ট আছে, তাতে কত টাকা আছে, তা জেনে নিয়ে সেই টাকা নিজেদের ফেক অ্যাকাউন্টে সরিয়ে নিত এই প্রতারণা চক্র। এটিএম-এর মাধ্যমে সেই টাকা তুলে নিত তারা।এমনকী মৃত ব্যাক্তির নামেও অ্যাকাউন্ট তৈরি করা হতো। চুঁচুড়া থানার পুলিশ গোপন সূত্রে খবর পায় ভিন রাজ্য থেকে আসা চার ব্যক্তি একটি বাড়িতে ভাড়া এসেছেন সম্প্রতি। তাঁদের আচরণ সন্দেহজনক।সারাদিন ঘর থেকে বেরোতেন না। রাতেই তাঁদের বাইরে দেখা যেত। এলাকার লোকজনের থেকেও পুলিশ জানতে পারে অভিযুক্তরা হুগলির ব্যান্ডেল চার্চ সংলগ্ন এলাকার বিভিন্ন এটিএম থেকে টাকা তুলত।
রবিবার সকালে পুলিশ সেই বাড়িতে তল্লাসি চালায়। এবং প্রদীপ সাহানী, সদানন্দ শ্রীবাস্তব(মনু), মনোজ কুমার, শিবম গুপ্তা নামে চার ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে। এঁরা উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুর ও কুশিনগর জেলার বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে। ধৃতদের রবিবার চুঁচুড়া আদালতে পাঠানো হয়। এলাকার বাসিন্দা তারক বিশ্বাস জানিয়েছেনন,গত ১০ ফেব্রুয়ারি ওই চার ব্যক্তি ব্যান্ডেল ডনবসকো স্কুলের বিপরীতে একটি বাড়ি ভাড়া নেন ছয় হাজার টাকায়। অনলাইন ব্যবসা করেন বলে জানান তাঁরা। পুলিশ জানতে পেরে অভিযান চালিয়ে ওই বাড়ি থেকে টাকা, ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন সহ বহু তথ্য উদ্ধার করেছে। সেখান থেকে বহু মানুষের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ডিটেলস, দলিলের তথ্য পায় পুলিশ। বেশ কিছু নকল পরিচয় পত্র, নকল আঙুলের ছাপের রবারস্ট্যাম্প, এটিএম কার্ড, পাশবই উদ্ধার হয়েছে। পুলিশ জানতে পেরেছে গত কয়েকদিনে চার লাখ টাকা প্রতারণা করেছেন অভিযুক্তরা। যা তথ্য উদ্ধার হয়েছে, তা থেকে পুলিশের অনুমান তিনমাসে ২ কোটি টাকা তোলার পরিকল্পনা ছিল গ্যাংটির। উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র এবং পশ্চিমবঙ্গে এই চক্র সক্রিয় রয়েছে বলেই ধারণা পুলিশের এই চক্রের সঙ্গে আর কারা কারা যুক্ত রয়েছে, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।