আন্তর্জাতিক
অ্যাস্ট্রাজেনেকা-জনসনের টিকা নিলেই হচ্ছে মাঙ্কিপক্স! আসল তথ্যটি জানুন
বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: করোনা অতিমারির মধ্যে নতুন করে বিশ্বজুড়ে ত্রাস সৃষ্টি করছে ‘মাঙ্কিপক্স’। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ইতিমধ্যে পৃথিবীর ১২’টি দেশে মাঙ্কিপক্সের সংক্রমণের কথা ঘোষণা করেছে।
উত্তর আমেরিকা সহ ইউরোপের বহুদেশে যখন জনমানষে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে মাঙ্কিপক্স, তখন এই ভাইরাস ঘটিত রোগ নিয়ে প্রকাশ্যে এলো চাঞ্চল্যকর এক তথ্য। সম্প্রতি এক গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, কোভিড ১৯ ভ্যাক্সিনের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে মাঙ্কিপক্সের। আর যা নিয়ে শুরু হয়েছে নয়া বিতর্ক।
কীভাবে Covid 19 ভ্যাক্সিনের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে Monkeypox-এর? বিশেষজ্ঞদের অনুমান, Covid-19 ভ্যাক্সিন তৈরিতে একটি শিম্পাঞ্জি ভাইরাস রয়েছে যা মাঙ্কিপক্সের প্রাদুর্ভাবের কারণ হতে পারে।
বিজ্ঞানীদের ওই তত্ত্বটি এই সত্যের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে যে, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের তৈরি করা অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনে (কোভিশিল্ড লেবেলের অধীনে ভারতে উপলব্ধ) একটি শিম্পাঞ্জি অ্যাডেনোভাইরাস ভ্যাকসিন ভেক্টর রয়েছে। যদিও এর পিছনে বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা রয়েছে। বিরোধিদের মতে, জনসাধারণের মধ্যে এই ধরণের তত্ত্বের প্রচার আদতে এটিকে টিকা-বিরোধী মনোভাব তৈরির আরেকটি কারণ হিসাবে ব্যবহার করছে।
আরও পড়ুন: ঊর্ধ্বমুখী করোনা, ১৬ দেশে ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা সৌদি আরবের
এই বিষয়ে InfoWars-এর অ্যালেক্স জোন্স, যিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভুয়ো খবর এবং হিসাববিহীন দাবি ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য পরিচিত। জোনস দাবি করেছেন যে, মাঙ্কিপক্স সেসব দেশে দেখা দিয়েছে যেখানে লোকেরা অ্যাস্ট্রাজেনেকা এবং জনসন অ্যান্ড জনসনের ভ্যাক্সিন গ্রহণ করছেন।
AstraZeneca এবং J+J কি? তারা ভাইরাস ভেক্টর যা আপনার কোষে শিম্পাঞ্জির জিনোম ইনজেক্ট করে,জোনস দাবি করেছেন। বেশ কিছু তত্ত্বও দাবি করে যে, কোভিড -১৯ টিকা বানরের টিস্যুতে তৈরি করা হয়েছিল। যখন কেউ কেউ বিল গেটসকে মহামারীর প্রাদুর্ভাবের জন্য দায়ী করছেন।
ওই তত্ত্বে দাবি করা হয়েছে, AstraZeneca ভ্যাক্সিনে শিম্পাঞ্জির অ্যাডেনোভাইরাস ভ্যাক্সিন ভেক্টর ব্যবহার করা হয়েছে। এটি একটি ক্ষতিকারক, দুর্বল ভাইরাস যা সাধারণত শিম্পাঞ্জিদের সাধারণ সর্দির কারণ হয়। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি, ভ্যাকসিন তৈরির সময় বলেছিল যে শিম্পাঞ্জির অ্যাডেনোভাইরাল ভেক্টর নিয়ে খুব ভালোভাবে গবেষণা করার পর এই ভ্যাক্সিন তৈরি করা হয়েছে।
অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির আরও দাবি, AstraZeneca ভ্যাক্সিন সম্পূর্ণ নিরাপদ। মানবদেহের জন্য তা কোনও ভাবেই ক্ষতিকারক নয়। অক্সফোর্ডের তরফে আরও দাবি করা হয়েছে, AstraZeneca গ্রহণের পর গ্রহীতার যদি হালকা জ্বর, মাথাভার বা মাথা যন্ত্রণা অনুভূত হয় তাহলে মনে করবেন টিকা গ্রহীতার শরীরে ইমিউনিটি পাওয়ার ঠিকমতো কাজ করছে।
আরও পড়ুন: মার্কিন চাপের কাছে নত হয়নি ভারত, ইমরানের মুখে নমোর প্রশংসা
এই বিষয়ে অস্ট্রেলিয়ান সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে যে, অ্যাডেনোভাইরাস ভ্যাক্সিন ভেক্টর, যা ChAdOx1 নামে পরিচিত, SARS-CoV-2 ভ্যাকসিনের জন্য একটি উপযুক্ত ভ্যাকসিন প্রযুক্তি হিসাবে বেছে নেওয়া হয়েছিল। কারণ এটি একটি শক্তিশালী প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করতে দেখা গিয়েছে।
আরও পড়ুন: সিঙ্কহোলের ভিতরে নতুন পৃথিবী! চিনে সন্ধান মিলল দানবীয় ভূগর্তের
মানব দেহের জন্য কতটা সুরক্ষিত আস্ট্রজেনেকা ভ্যাক্সিন? (IS ASTRAZENECA SAFE)
অক্সফোর্ডের গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, ভ্যাক্সিন সম্পূর্ণ নিরাপদ এবং করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে একটি শক্তিশালী অস্ত্র। এই ভ্যাক্সিন গ্রহণে হালকা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। যারমধ্যে রয়েছে হালকা জ্বর, ব্যথা অনুভব করা বা মাথাব্যথা। টিকা নেওয়ার পরে এই লক্ষণগুলি থাকা মানে আপনার ইমিউনিটি সিস্টেম যেমন হওয়া উচিত তেমন কাজ করছে।