খেলা-ধূলা
২০০৮ সালেই ওয়ানডে থেকে অবসর নিতে চেয়েছিলেন সেওয়াগ, আটকান শচীন!
বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: ভাগ্যিস শচীন তেন্ডুলকরের পরামর্শ শুনেছিলেন। না হলে ২০০৮ সালেই একদিনের ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়ে নিচ্ছিলেন বীরেন্দ্র সেওয়াগ। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে নিজেই এই কথা জানিয়েছেন বীরু।
নজফগড়ের নবাব জানিয়েছেন, টেস্ট ক্রিকেটে রান পেলেও ওয়ানডে ক্রিকেটে রান পাচ্ছিলেন না তিনি। ২০০৮ সালে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে অস্ট্রেলিয়া, ভারত ও শ্রীলঙ্কার মধ্যে ত্রিদেশীয় একদিনের সিরিজ চলছিল। ব্যাটে রান না থাকায় সেই সিরিজের ১০ মাসের মধ্যেই ৫ ম্যাচেই তাঁকে প্রথম একাদশে রাখেননি তৎকালীন ওয়ানডে অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি। এমনকি তিন ম্যাচের ফাইনালেও সেওয়াগকে ছাড়াই ২-০ ব্যবধানে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে সিরিজ জিতেছিল ভারত। সেই অভিমানেই একদিনের ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার মনস্থির করেছিলেন সেওয়াগ। কিন্তু, শচীনের পরামর্শেই সিদ্ধান্ত বদল করেন বীরু। সেই ঘটনার পর আরও ৫ বছর অর্থাৎ ২০১৩ সাল পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেছিলেন সেওয়াগ। ওই পাঁচ বছরে ৬৮ ম্যাচে ৪৫.৫৫ গড়ে ২ হাজার ৯৬১ রান করে ছিলেন বীরু। শুধু তাই নয়, শতরান করেছিলেন সাতটি। ওয়ানডে ক্রিকেট কেরিয়ারে ১৫ শতরান করেছেন সেওয়াগ। সেই হিসেবে দেখলে অবসরের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার পর আরও সাতটি শতরান করেছিলেন তিনি। অর্থাৎ কেরিয়ারের প্রায় অর্ধেক শতরানই এসেছিল তারপরে। শচীনের কথায় সেদিন যদি তিনি তাঁর সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা না করতেন তাহলে ভারত তো বটেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটও অনেক রাজকীয় ইনিংস থেকে বঞ্চিত হত। তাই এর জন্য অবশ্যই শচীনেরও কৃতিত্ব প্রাপ্য।
সেওয়াগ বলেছেন, ‘২০০৮ সালে অস্ট্রেলিয়া সফরের সময়ই এক দিনের ক্রিকেট থেকে অবসরের চিন্তা মাথায় এসেছিল। টেস্টে ১৫০ রানের ইনিংস খেলেছি। অথচ এক দিনের ম্যাচে কিছুতেই রান পাচ্ছিলাম না। পর পর তিন-চারটে ম্যাচে ব্যর্থ হই। তখন ধোনি আমাকে প্রথম একাদশ থেকে বাদ দেয়। তখনই মনে হয়েছিল এক দিনের ক্রিকেট আর নয়, শুধু টেস্ট খেলব। সেই শুনে তখন শচীন আমার সিদ্ধান্ত বদলে দিয়েছিল। আমাকে ও বলেছিল- এখন তুমি তোমার জীবনের একটা খারাপ সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছো। অপেক্ষা কর। সফর শেষ হলে বাড়ি যাও। পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাও। আর নিজের সিদ্ধান্ত নিয়ে খুব ভালো করে ভাবনা চিন্তা কর। তার পরে ঠিক কর কী করতে চাও। ওর এই পরামর্শেই তখন এক দিনের ক্রিকেট থেকে অবসর নিইনি।’ সেই সময়, ওয়ানডে দলের অধিনায়ক ছিলেন ধোনি এবং টেস্ট দলের অধিনায়ক ছিলেন অনিল কুম্বলে।
আর এই প্রসঙ্গে বিরাট কোহলির সঙ্গে নিজেকে এক বেঞ্চে বসতে রাজি নন ২০১১ বিশ্বকাপ জয়ী ভারতীয় দলের অন্যতম সদস্য। কোহলির উদাহরণ টেনে সেওয়াগ বলেছেন, ‘ক্রিকেটে দুই ধরনের ক্রিকেটার হয়। যারা এই ধরনের বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দেয়। চ্যালেঞ্জ নিতে পছন্দ করে। এবং সেটাকে উপভোগ করে। বিরাট সেই রকমই একজন ক্রিকেটার। চুপ করে সমস্ত সমালোচনা শোনে। এবং ব্যাটেই সেই সমালোচনার জবাব দিয়ে সমালোচকদের ভুল প্রমাণিত করে। আর আরেক ধরনের ক্রিকেটার হল, যারা এই সমালোচনাকে পাত্তা দেয় না। তারা খুব ভালো করেই জানে, সমর্থকরা তাদের থেকে কী চায়। আমি সেই তালিকায় পড়ি। আমি সমালোচনায় খুব একটা কান দিতাম না। আমি শুধু একটা কথাই মাথায় রাখতাম, মাঠে নামব, রান করব এবং বাড়ি চলে যাব।’