বাংলার খবর
নেই কোনও গৃহশিক্ষক, মাধ্যমিকে তৃতীয় পূর্ব মেদিনীপুরের দেবশিখা প্রধান
বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: ৭৮ দিনের মাথায় প্রকাশিত হয়েছে মাধ্যমিকের ফল। এ বছরে ফলাফলের ভিত্তিতে জয়জয়াকার জেলার। কোনও রকম গৃহশিক্ষকের সহায়তা ছাড়াই মাধ্যমিকে তৃতীয় স্থান অধিকার করেছে দেবশিখা প্রধান।
পূর্ব মেদিনীপুরের দেবশিখা প্রধান এবারে মাধ্যমিক পরীক্ষায় রাজ্যের মধ্যে তৃতীয় স্থান অধিকার করেছে। তার মোট প্রাপ্ত নম্বর ৬৯১। যুগ্মভাবে তৃতীয় হয়েছে সে। ছোট থেকেই পড়াশোনায় মেধাবী দেবশিখা প্রধান। স্কুলের প্রতিটি পরীক্ষাতেই প্রথম, দ্বিতীয় স্থানের মধ্যে থাকত। মাধ্যমিকের শীর্ষ তালিতায় স্থান করাই লক্ষ্য ছিল তার। এবার তার লক্ষ্য বাবার স্বপ্ন পূরণ করা, ডাক্তার হওয়া।
কিশোরীর কথায়, বাবা আমাকে অ্যাপ্রণ পরে দেখতে চায়। বাবার স্বপ্ন পূরণ করাই এখন আমার লক্ষ্য। তাই মাধ্যমিকে তৃতীয় স্থান অধিকার করেও গা ভাসাতে নারাজ দেবশিখা। বরং আর ভালভাবে পড়াশোনায় মনোযোগ দিয়ে সফলতা ধরে রাখাই তার লক্ষ্য।
আরও পড়ুন: এবার বাংলার পুকুরে জাল ফেললেই উঠবে ইলিশ! নয়া উদ্যোগ নবান্নের
দেবশিখার বাবা উৎপল কুমার প্রধান পেশায় গৃহশিক্ষক। আর পাঁচটা ছাত্রের মতো নিজের মেয়েকেও নিজেই টিউশন দিতেন উৎপলবাবু। মাঝে-মধ্যে তাঁর স্কুল শিক্ষক ভাই গাইড করতেন।
এছাড়া তাঁর স্নাতক পাশ স্ত্রী এবং স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারাও যতটা সম্ভব মেয়েকে পড়াশোনায় গাইড দিতেন বলে জানান উৎপলবাবু। গৃহশিক্ষক না থাকায় কোনও অভিযোগও নেই দেবশিখার। তার কথায়, “আমার যেখানে যা সমস্যা হত বাবা, কাকা গাইড করে দিতেন। কখনও কোনও সমস্যা হয়নি।”
গৃহশিক্ষক ছাড়াই মাধ্যমিকে তৃতীয়। এই সাফল্যের চাবিকাঠি কী? কিছুটা ঘাবড়ে গিয়েই দেবশিখার জবাব, “বাবা, কাকা যা বলতেন, সেই মতোই পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছি। স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের গাইডেন্সও ভীষণ কাজে এসেছে। দিনে ১১-১২ ঘণ্টা পড়তাম।” তবে উৎপলবাবু প্রতিটি বিষয় সম্পর্কে যেভাবে ছোট-ছোট প্রশ্ন-উত্তর করে দিতেন, টিপস দিতেন, সেগুলি ভীষণ কাজে এসেছে বলে জানায় দেবশিখা।
আরও পড়ুন: ভুল ট্রেনে উঠে চলে এসেছিলেন শেওরাফুলি, আরোগ্যের সহায়তায় ঘরে ফিরলেন বৃদ্ধা
কেবল পড়াশোনা নয়, আঁকা এবং আবৃত্তিতেও পারদর্শী দেবশিখা। Facebook, গেম বা সোশ্যাল মিডিয়ার প্রতি কোনদিনই তেমন ঝোঁক ছিল না তার। পড়াশোনার চাপে বর্তমানে সেভাবে আঁকায় সময় দিতে না পারলেও দেবশিখার অবসর কাটানোর অন্যতম সঙ্গী আবৃত্তি পাঠ। তবে উৎপলবাবু মেয়েকে ডাক্তার হিসাবে দেখতে চান। তাই বাবার স্বপ্ন পূরণ করতে আবৃত্তি চর্চা পাশে সরিয়ে রেখে এখন পড়াশোনাই ধ্যানজ্ঞান হয়ে উঠেছে দেবশিখার। আর বড় মেয়ের জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষার এই সাফল্যে গর্বিত দেবশিখার বাবাও।