বাংলার খবর
জিটিএ নির্বাচন বয়কট গুরুঙের, শান্তিপূর্ণ ভোট পাহাড়-সমতলে
বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: রবিবার সুষ্ঠুভাবেই সম্পন্ন হল পাহাড়ের জিটিএ নির্বাচন। দার্জিলিঙে সকাল থেকেই অবিরাম বৃষ্টি। তারমধ্যেই ভোট দাতাদের উৎসাহ ছিল চোখে পড়ার মতো। ১০ বছর পর অনুষ্ঠিত হল জিটিএ নির্বাচন। কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই শান্তিপূর্ণভাবে হয়েছে ভোট।
কিন্তু এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলেন না বিমল গুরুং। জিটিএ ভোট বয়কট করল বিমল গুরুঙের দল গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। ২০১২ সালে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিটিএ-র ক্ষমতা দখল করেছিল বিমল গুরুঙের নেতৃত্বাধীন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। ২০১৭ সালে ওই বোর্ডের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। তবে ভোট বয়কট করলেও ভোটের সব খবরই নিলেন গুরুং।
এদিন দার্জিলিঙের রিচমন্ড হিলের নবার্টে নিজের দলীয় কার্যালয় থেকে বিমল গুরুং বলেন, ‘এই ভোট একেবারেই পাহাড়ের মানুষের জন্য নয়। আমি প্রথম থেকেই যেভাবে আমার মতামত দিয়েছিলাম, এখনও তাই বলছি। আমি এই জিটিএ ভোটকে সমর্থন করব না কোনভাবেই। আমি আমার পরিবারের সবাইকে অনুরোধ করেছি। আমার অনুগামী , আমাকে যাঁরা ভালবাসেন তাঁদেরকে অনুরোধ করছি তাঁরা যেন কেউ ভোট না দেন।কারণ, এই ভোট পাহাড়ের মানুষের মঙ্গলের জন্য নয়।এই ভোটে পাহাড়ের কোনও উন্নয়ন হবে না। আমি অসুস্থ থাকা অবস্থায় আমার বহু অনুগামী আমাকে দেখতে এসেছিলেন। আমাকে দেখতে এসেছিলেন আমাকে যাঁরা ভালবাসেন তাঁরাও। আমি সবাইকেই অনুরোধ করেছি, এই ভোটে তারা যেন কোনভাবেই অংশ না নেন। একটু সুস্থ হলেই আবার আন্দোলনে নামবেন।’
জিটিএ-এর মোট আসন সংখ্যা ৪৫। মোট ৭ লক্ষ ৩২৬ জন ভোটারের জন্য রয়েছে ৯২২ পোলিং স্টেশন। মোট ভোটারের মধ্যে ৩ লক্ষ ৪৪ হাজার ৩৫৬ জন পুরুষ ভোটার, ৩ লক্ষ ৫৫ হাজার ৯৬৬ জন মহিলা ভোটার এবং তৃতীয় লিঙ্গের ৪ জন ভোটার রয়েছেন। নতুন ভোটার প্রায় ৩০ শতাংশ। বিকেল ৪টে পর্যন্ত পাহাড়ে ভোট পড়েছে ৫৬.৫ শতাংশ।
পাহাড়ের পাশাপাশি রবিবার শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদেও নির্বাচন ছিল। বিক্ষিপ্ত কিছু অশান্তি ছাড়া সেখানেও নির্বাচন হচ্ছে শান্তিপূর্ণভাবেই। ভোট শুরুর আগেই ফাঁসিদেওয়া ব্লকের চটহাটে নির্দল প্রার্থীর পোলিং এজেন্টকে মারধরের অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। যদিও তৃণমূল সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। বেলার দিকে আপার বাগডোগরা এলাকায় তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে হাতাহাতির অভিযোগও উঠেছে। বিকেল ৫টা পর্যন্ত শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদে ভোট পড়েছে ৭৮.৩০ শতাংশ।
রবিবার রাজ্যের ৫ পুরসভার ৬টি ওয়ার্ডেও ছিল উপনির্বাচন। চন্দননগর পুর নিগমের ১৭ নম্বর ওয়ার্ড, ঝালদা পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ড, দমদম পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ড, দক্ষিণ দমদম পৌরসভার ২৯ নম্বর ওয়ার্ড, ভাটপাড়া পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ড এবং পানিহাটি পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডে রবিবার অনুষ্ঠিত হয় উপনির্বাচন।
নির্বাচন কমিশন থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, চন্দননগরের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের উপনির্বাচনে ভোট পড়েছে ৭৩.১১ শতাংশ। ঝালদার ২ নম্বর ওয়ার্ডের উপনির্বাচনে ভোট পড়েছে ৮০.৮৬ শতাংশ। দমদমের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের উপনির্বাচনে ভোট পড়েছে ৭২.০৯ শতাংশ। দক্ষিণ দমদমের ২৯ নম্বর ওয়ার্ডে ভোট পড়েছে ৬৯.৩৬ শতাংশ। ভাটপাড়ার ৩ নম্বর ওয়ার্ডে ভোট পড়েছে ৭৪.৪১ শতাংশ। পানিহাটির ৮ নম্বর ওয়ার্ডে ভোট পড়েছে ৫৮.৬৯ শতাংশ। কয়েকটি বিক্ষিপ্ত অশান্তি ছাড়া মোটর উপর শান্তিপূর্ণভাবেই এই ছয় ওয়ার্ডের উপনির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।