বাংলার খবর
স্কুল শিক্ষক ব্যতীত পাত্র চাই! বিজ্ঞাপন ঘিরে নেটপাড়ায় শোরগোল
বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: একটা সময় রাজ্যের কন্যাদায়গ্রস্ত পিতারা সরকারি চাকুরিজীবী পাত্রই খুঁজছেন। এখনও মেয়ের বিয়ের ক্ষেত্রে তাঁদের অগ্রাধিকার সরকারি চাকুরিজীবী পাত্র। পাত্র যেকোনো সরকারি দফতরের কর্মচারী হলেই হল। কিন্তু রাজ্যে ঘটা সাম্প্রতিক কিছু ঘটনায় এবার সরকারি চাকুরিজীবী পাত্র বাছাইয়ের ক্ষেত্রেও যথেষ্ট সচেতন ছেলে-মেয়ের বাবারা।
এসএসসি এবং প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতিতে রীতিমত তোলপাড় রাজ্য। বেআইনিভাবে স্কুলে শিক্ষকতার চাকরি পাওয়া অনেক শিক্ষকেরই চাকরি গিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে। এর মধ্যেই একটি পাত্র-পাত্রীর বিজ্ঞাপন গোটা রাজ্যে রীতিমতো শোরগোল ফেলে দিয়েছে। সেই বিজ্ঞাপনে পাত্র বাছাইয়ের ক্ষেত্রে পরিষ্কার লিখে দেওয়া হয়েছে, ‘স্কুল শিক্ষক ব্যতীত’ উপযুক্ত পাত্রই কাম্য। অর্থাৎ সরকারি স্কুলে শিক্ষকতার চাকরি করা পাত্র চাইছেন না পাত্রী!
সেই বিজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, পাত্রী সরকারি চাকরি করেন। কর্মসূত্রে তিনি ধূপগুড়িতে থাকেন। পাত্রীর শিক্ষাগত যোগ্যতা বিএ অনার্স। তাঁর পৈত্রিক বাড়ি উত্তর দিনাজপুরে। তাই ৩২ বছর বয়স্ক ওই পাত্রী উত্তরবঙ্গ সংলগ্ন এলাকায় সরকারি চাকরি করা পাত্র খুঁজছেন। তবে এই শর্তগুলোর মধ্যে সবথেকে নজর কেড়েছে যে শর্তটি সেটি হল, ‘স্কুল শিক্ষক ব্যতীত’।
এসএসসি এবং প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতি কান্ড রীতিমতো আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এখন বিবাহযোগ্য পাত্র-পাত্রীদের পরিবারের মধ্যেও। এসএসসি-এর পর, প্রাথমিকেও নিয়োগ দুর্নীতিতে গত সপ্তাহেই ২৬৯ জনকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। এমনকি এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতিতে রাজ্যের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর কন্যা অঙ্কিতা অধিকারী চাকরি গিয়েছে। তাঁর ৪১ মাসের কর্মজীবনে প্রাপ্ত বেতন আদালতের কাছে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, মামলাকারী ববিতা সরকারকে ওই চাকরিতে অবিলম্বে নিয়োগপত্র দেওয়ার জন্য সময়সীমাও বেঁধে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। পাশাপাশি, অঙ্কিতার ফেরত দেওয়া বেতনও ববিতাকে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
যার প্রভাব পড়েছে এবার বিয়ের জন্য পাত্র-পাত্রী খোঁজার ক্ষেত্রেও। এই সমস্ত কান্ড-কারখানা দেখেই এখন কোনও বাবা-মা তাঁদের সন্তানের জন্য ‘শিক্ষক জামাই’ বা ‘শিক্ষিকা বউ’ ঘরে আনতে চাইছেন না। সোশ্যাল মিডিয়ায় এই বিজ্ঞাপনটি ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। যা দেখে অনেকেই অনেক রকম মন্তব্য করছেন। কেউ বলছেন, ‘একটা সময় সরকারি স্কুলের শিক্ষকরা মোস্ট এলিজেবল বলে বিবেচিত হত। এখন পাত্রীরা তাদের আর সুপাত্রের তালিকায় রাখছেন না। যা দেখে খুবই ভালো লাগছে।’ আবার একজন লিখেছেন, ‘কারণ যাই হোক না কেন, মনে হয় কেউ যেন মধুর প্রতিশোধ নিচ্ছে। যে সমস্ত শিক্ষক দাদা, ভাই, কাকুরা আনন্দে গদ গদ ভাব নিয়ে মাটিতে পা ঠেকাতেন না, তাঁরা যখন এই ভিডিওটি দেখবেন, তাঁদের প্রতিক্রিয়া কী হবে, তা দেখার অপেক্ষায় রয়েছি। টু মাচ ফান।’