বাংলার খবর
৩২ বছর পর চন্দননগরে ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে জয়ী বামেরা
বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: চন্দননগর পুর নিগমের আরও একটি ওয়ার্ড বামেদের দখলে। ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের উপনির্বাচনে ১৩০ ভোটে জয়ী হলেন সিপিআইএম প্রার্থী অশোক গঙ্গোপাধ্যায়। তৃণমূলের সুজিত নাথকে হারিয়ে জয়ী হলেন তিনি। ফলে চন্দননগরে বামেদের আসন সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল দুই। ৩৩ ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত চন্দননগর পুর নিগমের ৩২ ওয়ার্ডে নির্বাচন হয়েছিল গত ফেব্রুয়ারি মাসে। সেই সময় ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে জয়ী হয়েছিলেন বাম প্রার্থী তথা রেড ভলেন্টিয়ার্স অভিজিৎ সেন।
১৭ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী গোকুল চন্দ্র পাল মনোনয়ন দাখিল করার পরই প্রয়াত হন। ফলে ওই ওয়ার্ডের ভোট স্থগিত রেখে বাকি ৩৩ ওয়ার্ডে নির্বাচন হয়েছিল। গত ২৬ তারিখ বাকি পৌরসভার উপনির্বাচনে সঙ্গে চন্দননগরের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডেও উপনির্বাচন হয়।
১৭ নম্বর ওয়ার্ডে বামেদের প্রার্থী ছিলেন অশোক গঙ্গোপাধ্যায়। তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছিলেন সুজিত নাথ। বিজেপির হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন সৌমেন দাস। কংগ্রেস প্রার্থী ছিলেন মুকুল দে। ওয়ার্ডের মোট ভোটার ২৭৫৯। বুধবার গণনার সময় দেখা যায় প্রথম রাউন্ড থেকেই এগিয়ে যেতে থাকেন সিপিআইএম প্রার্থী। প্রথম রাউন্ডে তৃণমূল প্রার্থীর থেকে ২৮ ভোটে এগিয়ে ছিলেন বাম প্রার্থী। দ্বিতীয় রাউন্ডের শেষে ৭৫ ভোটে এগিয়ে যান তিনি। শেষে ১৩০ ভোটে জয়ী হন বাম প্রার্থী অশোক গঙ্গোপাধ্যায়।
অশোক গঙ্গোপাধ্যায়ের হাত ধরে চন্দননগরের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে ৩২ বছর পর জয়ী হল বামেরা। দ্বিতীয় স্থান পেয়েছে তৃণমূল। তৃতীয় স্থানে রয়েছেন বিজেপি এবং চতুর্থ স্থান পেয়েছে কংগ্রেস। এই জয় বামদের কাছে অবশ্যই বড় সাফল্য এবং তাৎপর্যপূর্ণ। কিছুটা অপ্রত্যাশিতভাবেই বাম প্রার্থীর এই জয়, বলছে রাজনৈতিক মহল। চন্দননগর পুরনিগম আগেই দখল করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। ৩১ ওয়ার্ড তাদের দখলে। মেয়র তাদের। এরপরে একটিমাত্র ওয়ার্ডে নির্বাচন হলে সেখানে তৃণমূল প্রার্থীর এই পরাজয় কী কারণে, তা নিয়ে শুরু হয়েছে জোর চর্চা। রাজ্য সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প গুলি নিয়ে প্রচার করেছেন তৃণমূল প্রার্থী। তারপরেও এই হার তৃণমূলকে বেশ বেকারদায় ফেলেছে। এখানে মূল লড়াই ছিল তৃণমূল বনাম সিপিআইএমের।
চন্দননগরের বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডে খুব অল্প ব্যবধানে পরাজিত হতে হয়েছিল বামেদের। অশোক গঙ্গোপাধ্যায়ের জয় সিপিআইএমকে চন্দননগরে বাড়তি অক্সিজেন দেবে সে বিষয়ে সন্দেহ নেই।
জয়ের পর সিপিআইএম প্রার্থী অশোক গঙ্গোপাধ্যায় বলেছেন, ‘অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ এই জয়। ৩২ বছর পর ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে জয় এল বামেদের। এই জয় আমি উৎসর্গ করছি করোনা কালে প্রয়াত বাম কর্মীদের উদ্দেশ্যে। কোনও দলের কাউন্সিলর নই, আমি ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের সকল মানুষের কাউন্সিলর।’
বামেদের কাছে তৃণমূলের পরাজয় নিয়ে চন্দননগরের মেয়র রাম চক্রবর্তী বলেছেন, ‘বিজেপি, কংগ্রেস এক হয়ে সিপিআইএমকে ভোট দিয়েছে। এই সময় দাঁড়িয়ে হারা নিঃসন্দেহে শুভ নয়। তবে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী পছন্দ না হওয়াও একটা কারণ হতে পারে।’