বাংলার খবর
‘পরম্পরা’ মেনেই কেকে-এর মৃত্যুতে রাজ্যের ঘাড়েই দোষ চাপালেন রাজ্যপাল
বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ:গত মঙ্গলবারে কলকাতায় নজরুল মঞ্চে অনুষ্ঠান করার পর হোটেলে ফিরেই আকস্মিকভাবে মৃত্যু হয় বলিউডের প্রখ্যাত গায়ক কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ ওরফে কেকে-এর। ঘটনার পর কেটে গিয়েছে তিন দিন। গায়কের এই আকস্মিক মৃত্যু নিয়ে কাটাছেঁড়া, অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ, তর্ক-বিতর্ক এখনও চলছে। কিন্তু আশ্চর্যজনক ভাবে তিনি কোনও মন্তব্য করেননি। অবশেষে কেকে-এর মৃত্যু নিয়ে ‘মৌনব্রত’ ভাঙলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর। রাজ্যে ছোট-বড় কোনও ঘটনা ঘটলেই তৎক্ষণাৎ প্রতিক্রিয়া দেওয়া, বলা ভালো রাজ্য সরকার এবং রাজ্যের শাসকদলের বিরুদ্ধে বিষোদগার করার একটা রীতি বা পরম্পরা গত দু-এক বছর ধরেই তৈরি করেছেন রাজ্যপাল। যা নিয়ে রাজ্য বনাব রাজভবন সংঘাত প্রতিবারই প্রকাশ্যে এসেছে। কেকে-এর মৃত্যু নিয়ে আবারও সেই পথেই হাঁটলেন রাজ্যপাল। তবে একটু দেরিতে!
‘পরম্পরা’ মেনে এবারও তিনি রাজ্য সরকারকেই কাঠগড়ায় তুললেন। কেকে-এর মৃত্যুর জন্য রাজ্য সরকারের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে এদিন দিল্লি উড়ে যাওয়ার আগে বাগডোগরা বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে রাজ্যপাল বলেছেন, ‘প্রখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী কেকে-এর মৃত্যুতে আমি অত্যন্ত ব্যথিত হয়েছি। জীবনের শেষ কয়েক ঘণ্টায় উনি খুবই কষ্ট পেয়েছেন। আমাকে অনেকেই সেদিনের অনুষ্ঠানের ভিডিও পাঠিয়েছেন। আমি সেগুলো দেখেছি। আমার বুক ফেটে গিয়েছে কষ্টে। তাঁর এই অকাল মৃত্যুর জন্য একমাত্র প্রশাসনিক ব্যর্থতাই দায়ী। কেকের অনুষ্ঠানে চরম বিশৃঙ্খলা হয়েছিল। এটা চরম প্রশাসনিক ব্যর্থতা। বিষয়টি গভীরে ভাবে দেখলেই বোঝা যাবে, ওইদিন পরিস্থিতি অত্যন্ত বিপজ্জনক হয়ে গিয়েছিল। নির্দিষ্ট আসনের তুলনায় মাত্রাতিরিক্ত দর্শক প্রেক্ষাগৃহে প্রবেশ করেছিলেন। যা সম্পূর্ণটাই উদ্যোক্তাদের ব্যর্থতা। তাদের এর জন্য কঠোর শাস্তি পাওয়া উচিত।’
কেকের মৃত্যু নিয়ে একাধিক বিতর্ক তৈরি হওয়ায় এবার নড়েচড়ে বসেছে রাজ্য সরকারও। কলকাতার প্রেক্ষাগৃহগুলোতে অনুষ্ঠানের জন্য একটি বিশেষ নির্দেশাবলীও তৈরি করেছে কলকাতা পুলিশ। শুক্রবার মেয়র ফিরহাদ হাকিমও জানিয়ে দিয়েছেন, এবার থেকে কলকাতায় কোনও বড় শিল্পী অনুষ্ঠান করতে এলে, সেই অনুষ্ঠানের বিস্তারিত আগে থেকে পুর নিগম ও কলকাতা পুলিশকে জানাতে হবে উদ্যোক্তাদের। পুলিশের অনুমতি ছাড়া এ ধরনের কোনও বড় অনুষ্ঠানের অনুমতি আর দেওয়া হবে না। এবং হলের আসন সংখ্যা অনুযায়ীই টিকিট বিক্রি করতে হবে। কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকেও শুক্রবার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল জানিয়েছেন, প্রত্যেক অনুষ্ঠানে এবার থেকে অ্যাম্বুলেন্স এবং চিকিৎসার ব্যবস্থা রাখা বাধ্যতামূলক। উদ্যোক্তাদের আগে থেকেই অনুষ্ঠানের দিনের জন্য একটি হাসপাতালের সঙ্গে কথা বলে রাখতে হবে। যাতে অনুষ্ঠান চলাকালীন কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে, তড়িঘড়ি আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য সেই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া যায়।