বাংলার খবর
বিয়ের আসরে হাজির পাত্রী, ছাদনাতলায় যাওয়ার আগেই শ্রীঘরে পাত্র!

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: আয়োজন সম্পূর্ণ ছিল। সেজে উঠেছিল ছাদনাতলাও। সুদূর অসম থেকে বিয়ে করতে এসে পানপাতায় মুখ ঢেকে পিঁড়িতে বসেও পড়ে ছিলেন পাত্রী। টোপর মাথায় দিয়ে ছাদনাতলায় হাজির হওয়ার প্রস্তুতিও নিচ্ছিলেন বর। তারপরই বিপত্তি। অনাহুত অতিথির মতো বিয়ের আসরে হাজির হয় পুলিশ। ছাদনাতলায় যাওয়ার আগেই শ্রীঘরে পৌঁছে গেলেন বর! পুলিশকে নিয়ে বরের বিয়ের আসরে পৌঁছেছিলেন প্রথম পক্ষের স্ত্রী। তাঁর অভিযোগেই ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে জানা যায়, প্রথম পক্ষের স্ত্রী থাকা সত্ত্বেও গোপনে দ্বিতীয় বিয়ে করার অভিযোগেই ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পাত্রের এই কীর্তি দেখে বেজায় চটেছে পাত্রীপক্ষ। ঘটনাটি ঘটেছে শিলিগুড়িতে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত ওই ব্যক্তির নাম রাজীব কুমার। তিনি শিলিগুড়ির চম্পাসারির বাসিন্দা। প্রথম পক্ষের স্ত্রী থাকা সত্ত্বেও সেই কথা গোপন করে অসমের এক মহিলাকে বিয়ে করতে চলেছিলেন বীমা কোম্পানিতে কর্মরত রাজীব। আর সেই কথা জানতে পেরেই শিলিগুড়ি মহিলা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন রাজিবের প্রথম পক্ষের স্ত্রী। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতেই বুধবার রাতে বর্ধমান রোডের বিয়ের আসর থেকে রাজীবকে গ্রেফতার করে পুলিশ। প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান, পণের টাকার লোভেই দ্বিতীয়বার বিয়ে করার পরিকল্পনা করেছিলেন রাজীব।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজীব কুমার বছর কয়েক আগেই বর্ধমানের এক মহিলাকে বিয়ে করেছিলেন। তারপরও গোপনে দ্বিতীয়বার অসমের এক তরুণীকে বিয়ে করার পরিকল্পনা করেন তিনি। বুধবার রাতে সেই বিয়ের আসর বসেছিল। কিন্তু অল্পের জন্য শেষ রক্ষা হল না। একেবারে শেষ মুহূর্তে স্বামীর বিয়ের কথা জানতে পেরে থানায় অভিযোগ করেন প্রথম পক্ষের স্ত্রী। তার পরই পুলিশ বর্ধমান রোডে সেই বিয়ের আসরে পৌঁছে ছাদনাতলা থেকেই বরের সাজে রাজীবকে গ্রেফতার করে।
বিয়ের আসরে হঠাৎ করেই পুলিশ আসায় রীতিমতো হকচকিয়ে যায় আমন্ত্রিত অতিথি সহ পাত্রীপক্ষ। সবার সামনেই প্রথম পক্ষের স্ত্রী রাজীবকে নিজের স্বামী হিসেবে পরিচয় দেন। যদিও প্রথমে রাজীব প্রথম বিয়ের কথা অস্বীকার করলেও পরে স্বীকার করে নেন। তারপরই রাজীবকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বৃহস্পতিবার তাঁকে শিলিগুড়ি আদালতে তোলা হয়।
বিয়ের শেষ মুহূর্তে পাত্রের আসল রূপ সামনে আসায় হাঁফ ছেড়ে বাঁচেছেন পাত্রীপক্ষ। রাজীবের প্রথম পক্ষের স্ত্রী জানিয়েছেন, ‘আমার স্বামী এমন কাজ করতে পারে, তা আমি ভাবতেও পারেনি। তবে বেশ কয়েকদিন ধরেই সন্দেহ হচ্ছিল। শেষ মুহূর্তে বিয়ের কথা জানতে পেরে আমি শিলিগুড়ি মহিলা থানায় অভিযোগ জানাই। পুলিশ সঙ্গে সঙ্গেই ব্যবস্থা নিয়েছে। না হলে আরও একটি মেয়ের জীবন নষ্ট হয়ে যেত।’