মামলাকারীদের নিয়ে নবান্ন অভিযান করব, মুখ্যমন্ত্রীকে পাল্টা হুঁশিয়ারি বিকাশের

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: মঙ্গলবার আসানসোলের কর্মীসভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেছিলেন, বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য মামলা করেছেন বলেই প্রাথমিকে উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগ বন্ধ হয়েছে। এই মন্তব্যের জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে পাল্টা হুঁশিয়ারি দিলেন সিপিআইএম-এর রাজ্যসভার সাংসদ তথা বিশিষ্ট আইনজীবী। রাজ্যে বেআইনিভাবে শিক্ষক নিয়োগের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই কাঠগড়ায় তুলে বিকাশ ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘প্রথমত আমি মামলাটা করিনি। যোগ্য চাকরিপ্রার্থীরা মামলা করেছেন। আর আমি তাঁদের হয়ে সওয়াল করছি। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন তাঁর কাছে ১৭ হাজার চাকরি রেডি আছে। এই সংখ্যাটা তিনি কোথা থেকে পেলেন আমি জানি না। তার মানে তিনি জানেন যে ১৭ হাজার জনকে বেআইনিভাবে চাকরি দেওয়া হয়েছে। লাখ লাখ টাকার বিনিময়ে এই নিয়োগ হয়েছে। যাঁরা যোগ্য নন, তাঁদের থেকে টাকা নেওয়া হয়েছে। সেজন্যই এই নিয়োগের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই করতে হচ্ছে।’

মঙ্গলবার আসানসোলের সভায় মুখ্যমন্ত্রী বক্তব্য রাখার সময় প্রাথমিকে উত্তীর্ণ কিছু মহিলা চাকরিপ্রার্থী প্ল্যাকার্ড হাতে মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে চাকরির দাবি জানান। তখন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এটা কোর্টে আছে। আপনারা কোর্টে যান। আপনারাই তো কেস করেছেন। কোর্ট বলেছে চাকরি থেকে ছাঁটাই করে দিতে, আমাকে তো কোর্টের কথা মানতেই হবে। কোর্ট বলছে এখন এসব বন্ধ। আমি তো সেটা মানব। আমার হাতে আর কিছু নেই। আমার ১৭ হাজার চাকরি রেডি আছে। কিন্তু আমি নিয়োগ করব কীভাবে? আদালত অনুমতি না দিলে নিয়োগ করা তো সম্ভব নয়। আমি বরাবরই বলেছি, সব ক্ষেত্রেই আদালতের সিদ্ধান্ত মেনে চলতে হবে। বিকাশবাবু একের পর এক মামলা করছেন। আদালত নিয়োগ বন্ধ করে দিচ্ছে। ওনার তো অর্থের কোনও অভাব নেই। কিন্তু সমস্যায় ভুগতে হচ্ছে আপনাদের। আপনারা বিকাশবাবুদের গিয়ে বলুন, বিকাশবাবু, আপনার তো টাকার অভাব নেই। কিন্তু আপনি কেস করে আমাদের ছেলেমেয়দের চাকরি বন্ধ করে দিলেন। তাই আপনিই চাকরি করিয়ে দিন। এটা আপনাকে করতেই হবে।’

তার উত্তরেই বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে নিয়োগ হয়েছে। তাই যারা যোগ্য প্রার্থী তাঁরা আদালতে গিয়েছেন। মামলা করেছেন। আমি তাঁদের হয়ে সওয়াল করেছি। এটা আমার নৈতিক দায়। দুর্নীতি দেখলে তার বিরুদ্ধে লড়াই করা স্বাভাবিক কাজ। যারা চাকরি দিয়েছেন তাদেরও সাজা হবে। মেধার ভিত্তিতে ১৭ হাজার নিয়োগ হবে। উনি ভয় দেখাচ্ছেন। বলছেন তোমরা মামলা প্রত্যাহার করে নাও, বিকাশবাবুর বাড়ি যাও। তাঁরা আসুক। আমি তাঁদের নিয়ে নবান্ন অভিযান করব।’