বাংলার খবর
মুখ্যমন্ত্রীর ভর্ৎসনার পরই পুরুলিয়ার জেলাশাসক বদল, ২৪ আইএএস বদলের বিজ্ঞপ্তি নবান্নের
বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: মুখ্যমন্ত্রীর তীব্র ভর্ৎসনার পরই বদল করা হল পুরুলিয়ার জেলাশাসককে। রাহুল মজুমদারের জায়গায় পুরুলিয়ার নতুন জেলা শাসক হলেন রজত নন্দা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নবান্ন থেকে এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে এই কথা জানানো হয়েছে। তবে পুরুলিয়ার জেলাশাসক বদলের স্পষ্ট কোনও কারণ উল্লেখ করা হয়নি নবান্নের পক্ষ থেকে। রাহুল মজুমদার এবার থেকে আসানসোল পুর নিগমের সিইও এবং তার সঙ্গে আসানসোল-দুর্গাপুর ডেভেলপমেন্ট অথরিটির অতিরিক্ত দায়িত্ব সামলাবেন। পুরুলিয়া, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, মুর্শিদাবাদ, মালদহ, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলাশাসক সহ মোট ২৪ জন আইএএস বদল করা হয়েছে।
দক্ষিণ দিনাজপুরের নতুন জেলা শাসক হলেন বিজিন কৃষ্ণ। উত্তর ২৪ পরগনার নতুন জেলা শাসক হলেন শরদ দ্বিবেদী। দক্ষিণ ২৪ পরগনার নতুন জেলা শাসক হলেন সুমিত গুপ্ত। ঝাড়গ্রামের নতুন জেলা শাসক হলেন সুনীল আগারওয়াল। মালদহর নতুন জেলা শাসক হলেন নিতীন সিঙ্ঘানিয়া। মুর্শিদাবাদের নতুন জেলা শাসক হলেন রাজর্ষি মিত্র। বদলি করা হয়েছে কলকাতা পুলিশের চারজন আইপিএস অফিসারকেও।
উল্লেখ্য, গত সোমবার পুরুলিয়ার প্রশাসনিক বৈঠক সকলের সামনেই জেলাশাসক রাহুল মজুমদারকে তীব্র ভর্ৎসনার করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রশাসনিক বৈঠকের তৃণমূলের এক স্থানীয় নেতা অভিযোগ করেন, এলাকার ইটভাটা গুলো থেকে যে রেভিনিউ ওঠে, সেখানে ২৫ হাজার টাকা উঠলে তার থেকে ১০ হাজার টাকা মাত্র জমা পড়ে সরকারি কোষাগারে। সম্পূর্ণ টাকা জামা পড়ে না। যে সমস্ত সরকারি আধিকারিকরা এই টাকা সংগ্রহ করেন, তাঁরাই তা পকেটস্থ করেন বলে অভিযোগ ওঠে। যা শুনে রীতিমত রেগে যান মুখ্যমন্ত্রী।
এরপরই পুরুলিয়ার জেলাশাসক রাহুল মজুমদারকে ভর্ৎসনা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ডিএম শুনতে পাচ্ছো? এটা তৃণমূল করেনি। প্রশাসনের নিচুতলার কর্মীরা কালেকশন করে। তারা কালেকশন করে টাকাটা জমা দেয় না। কিছুটা দেয়। বাদবাকিটা নিজেরা খেয়ে নেয়। এতদিন ধরে জেলায় আছো। কী জেলা চালাচ্ছ তুমি? কী করছ তুমি? আমার ধারনাটাই বদলে গেল।’ এরপরই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এতকিছু দিচ্ছি মানুষকে, অথচ কিছু লোক এত লোভী কেন হয়ে যাচ্ছে! আর কত চাই? আমার পার্টির লোক হলে আমি টেনে চারটে থাপ্পড় মারতাম। এবং তাদের আমি সবসময় শাসন করি। আমি কথা বলছি, তোমার পুলিশ চলে যাবে, তদন্ত করবে। একে বলে প্রশাসন, একে বলে কাজ। গরিব মানুষ যখন একটা কমপ্লেন করে, আমি নিতে পারি না। ওই ওপরে ওপরে ঘুরে বেড়িয়ে ছবি তুলে কোনও কাজ হয় না। সে যে-ই হোক।’ ইটভাটার রেভিনিউয়ের টাকা সরকারি আধিকারিকদের পকেটস্থ করার অভিযোগ শুনেই মুখ্যমন্ত্রী মেজাজ হারিয়ে এইরকম কড়া কথা শোনান পুরুলিয়ার জেলাশাসককে। তার পরই বৃহস্পতিবার পুরুলিয়ার জেলাশাসক বদল করা হল। ফলে মুখ্যমন্ত্রীর অসন্তোষ ও ভর্ৎসনার জেরেই পুরুলিয়ার জেলাশাসক রাহুল মজুমদারকে বদল করা হল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।