লাইফ স্টাইল
একমাসেই দার্জিলিং টয় ট্রেন থেকে রেলের রেকর্ড ৩.২ কোটির আয়!
বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: পাহাড়ের কোল ঘেঁষে ধোঁয়া উড়িয়ে ছুটে চলে খেলয়না ট্রেন। নামেই খেলনা, সেই ট্রেনে কিন্তু পর্যটকরা আরাম করে বসে পাহাড়ের রূপ-রস-গন্ধ চেটেপুটে উপভোগ করেন। বিশ্ব ঐতিহ্যের মর্যাদা পাওয়া দার্জিলিংয়ের টয় ট্রেনের কথা বলছি। দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ের অধীনে সমতলের শিলিগুড়ি থেকে পাহাড়ের দার্জিলিং পর্যন্ত চলাচল করে এই টয় ট্রেন। ১৪১ বছর ধরে একই গতিতে এই ট্রেন কোটি কোটি পর্যটকদের মোহিত করে রেখেছে, যা এই আধুনিক যুগেও এক বিস্ময়কর। তবে টিকিট বিক্রি থেকে খুব একটা লাভের মুখ দেখতো না রেল। যদিও বর্তমানে এই ট্রেনের কামরার খোলনলচে অনেকটাই বদলে গিয়েছে। আরও আধুনিক ও সুযোগ সুবিধা যুক্ত হয়েছে। পর্যটকদের জন্য বেশ কয়েকটি ‘জয় রাইড’ বা ছোট ছোট রুটে ট্রেন চালাতে শুরু করেছে দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়েজ (DHR)। আর তাতেই বাজিমাত করল এই সংস্থা। তাঁদের দাবি, গত মে মাসে টিকিট বিক্রি থেকে রেকর্ড আয় হয়েছে।
দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়েজ সম্প্রতি জানিয়েছে, গত মে মাসে ৩ কোটি ২০ লক্ষ টাকার টিকিট বিক্রি হয়েছে। খরচ বাদ দিয়ে এতে ভালোই লাভ হয়েছে রেলের। পরিসংখ্যান বলছে, ২০২২-এর মে মাসে দার্জিলিং টয় ট্রেনে টিকিট বিক্রি হয়েছে ৩.২ কোটি টাকার, সেই মাসে রেলের খরচ হয়েছে প্রায় ২.৭৫ কোটি টাকা। এটা এখনও পর্যন্ত সর্বকালের রেকর্ড বলেই দাবি করেছেন রেলকর্তারা। ২০১৮ সালে করোনা কালের আগে দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়েজ মে মাসে টয় ট্রেনের টিকিট বিক্রি করেছিল ২.০৭ কোটি টাকার। সেটাই ছিল এখনও পর্যন্ত সর্বোচ্চ। চলতি বছর সেই রেকর্ডও ছাপিয়ে গেল।
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ে (NFR) সূত্রে জানা যাচ্ছে, ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়েজ টিকিট বিক্রি করে ঘরে তুলেছে প্রায় ৪.৭৩ কোটি টাকা। এই সময়কালে রেলের খরচ হয়েছে প্রায় ৪.৫৩ কোটি টাকা। সামান্য হলেও লক্ষ্মীলাভ হয়েছিল। কিন্তু তার পরের মাসেই ৩০ দিনে টয় ট্রেনে বিপুল আয় রেল কর্তাদের মুখে চওড়া হাসি ফুটিয়েছে।
কিভাবে এই সাফল্য? ডিএইচআর কর্তাদের দাবি, আধুনিক পরিকাঠামো, পেশাদারি চিন্তাভাবনা ও নিত্য নতুন রুটে ট্রেন চালিয়ে পর্যটকদের আকর্ষণ করা গিয়েছে। শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিং পর্যন্ত ৮৮ কিমি দৈনিক টয় ট্রেন চলে। পাশাপাশি বর্তমানে ১২টি ছোট ছোট রুটে জয় রাইডের ব্যবস্থা হয়েছে। এরমধ্যে চারটি জয় রাইড আবার পুরোনো স্টিম ইঞ্জিনের সাহায্যে হয়। বাকি আটটি জয় রাইডে নতুন ডিজেল ইঞ্জিনের ব্যবহার করা হচ্ছে। এই জয় রাইডগুলির মধ্যে বিশেষ জঙ্গল সাফারি, চা বাগান সাফারি, রেড পাণ্ডা সাফারি ও দার্জিলিং-ঘুম স্টিম ইঞ্জিন সাফারি যথেষ্ট জনপ্রিয়তা পেয়েছে পর্যটক মহলে। এছাড়া সিনেমার শুটিং বা বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানকে ঐতিহ্যবাহী এই টয় ট্রেন ভাড়া দিয়েও আয়ের নতুন নতুন পথ খুঁজছে দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়েজ।