আন্তর্জাতিক
কাতারে ২৯ কুকুরকে নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা! সোশ্যাল মিডিয়ায় নিন্দার ঝড়

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: একদল সশস্ত্র ব্যক্তি নিরাপদ এলাকায় হামলা চালিয়ে ২৯ কুকুরকে হত্যা করল। তাদের হামলায় আরও কয়েকটি কুকুরকে আহত হয়েছে। এই অমানবিক, নির্মম ও চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে কাতারে। যদিও এক হামলাকারীর দাবি, ওই কুকুরগুলো নাকি তাঁর বাচ্চাকে কামড় দিয়েছিল।
জানা গিয়েছে, সশস্ত্র গুণ্ডারা নিরাপত্তা কর্মীদের অস্ত্র দেখিয়ে হুমকি দিয়ে এক নিরাপদ কারখানার কলোনিতে প্রবেশ করে। সেখানে পথ কুকুরদের খাওয়ানো, চিকিৎসা এবং দেখাশোনার কাজ করত একটি গোষ্ঠী।
আর এই ঘটনা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় রীতিমতো সমালোচনার ঝড় উঠে গিয়েছে। তীব্র নিন্দা করে দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি উঠেছে। এই ঘটনা প্রসঙ্গে দোহার এক উদ্ধারকারী দাতব্য সংস্থা ‘PAWS রেসকিউ কাতার’ জানিয়েছে, একদল সশস্ত্র হামলাকারী একটি নিরাপদ কারখানা এলাকায় যায়। এবং যেখানে ওই কুকুর গুলোকে রাখা হয়েছে, সেই দিকে যাওয়ার আগে সেখানকার নিরাপত্তারক্ষীদের অস্ত্র দিয়ে হুমকি দেয়। তারপর তারা সেখানে গিয়ে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে কুকুরছানা সহ ২৯ কুকুরকে মারে এবং বেশ কয়েকজনকে আহত করে। সেই হামলাকারীরা দাবি করেছে, তারা ওই এলাকায় হামলা করেছিল এবং কুকুরগুলোকে গুলি করেছিল কারণ কুকুরগুলির একটি তাদের ছেলেদের কামড়েছিল!
PAWS রেসকিউ বলেছে, ‘নিরাপত্তাকর্মীরা যথেষ্ট ভীত ছিল। কারণ হামলাকারীদের দু’জনের হাতে বন্দুক ছিল। নিরাপত্তাকর্মীরা ওই অবলা ও নিরীহ কুকুরের একটি দলকে গুলি করা থেকে হামলাকারীদের আটকাতে অনেক চেষ্টা করেছিল। কিন্তু তারা বুঝতে পেরেছিল যে ওই হামলাকারীদের আটকাতে গিয়ে তারা নিজেদেরও বিপদ ডেকে এনেছে।’
তারা আরও দাবি করেছে, একটি কুকুরছানার বাঁদিকে গভীর ক্ষত তৈরি হয়েছে। এই মুহূর্তে সে পশু চিকিৎসকের কাছে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছে। এই কুকুরগুলি কারও ক্ষতি করেনি, তাদের ভালো দেখাশোনা করা হয়েছিল। এরা খুবই বন্ধুত্বপূর্ণ এবং খুব আদরের।
দোহা নিউজের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই নির্মম ঘটনাটি মানুষের মধ্যে ক্ষোভ ও উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। প্রাণী অধিকার নিয়ে লড়াই করা রনি হেলো এই হত্যাকাণ্ডকে “বর্বর কাজ এবং কাতারের সমাজের জন্য হুমকি” বলে নিন্দা করেছে। এই হৃদয় বিদারক ঘটনার তদন্ত করে দ্রুত খুনিদের কঠোর শাস্তির জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে তারা। আবার অনেকে কাতারের বন্দুক আইন সম্পর্কে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এবং তারা প্রশ্ন করেছে, কেন সাধারণ নাগরিকদের প্রথম স্থানে অস্ত্র রাখার অধিকার রয়েছে।
এক ইন্টারনেট ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘খুবই হতাশ কাতার! উপসাগরীয় অঞ্চলকে অবশ্যই এই জাতীয় বিষয়ে এবার ভাবনা চিন্তা করতে হবে। এই ঘটনা অমার্জনীয়! গরীব বাচ্চারা।’ আর একজন লিখেছেন, ‘কী বর্বর কাজ! এটা উল্লেখ করা হচ্ছে না যে মানুষের বাড়িতে বন্দুক আছে এবং সেগুলো তারা ব্যবহার করছে। কাতার কি নিরাপদ দেশ?’
কাতারে বন্দুকের মালিক হতে হলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে লাইসেন্স নিতে হয়। বয়স ২১ বছরের বেশি হলে এবং অপরাধমূলক কোনও রেকর্ড না থাকলে তবেই মেলে বন্দুকের লাইসেন্স। অপরদিকে, কাতারে লাইসেন্সবিহীন আগ্নেয়াস্ত্র রাখার অপরাধে আর্থিক জরিমানা এবং আগ্নেয়াস্ত্রের ধরনের উপর নির্ভর করে এক বছর থেকে সাত বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।