বাংলার খবর
সরষের তেলের দামের ঝাঁঝে সংকটে তুফানগঞ্জের মৃৎশিল্পীরা
বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ : আর মাত্র কয়েক দিন পরই বাঙালির আলোর উৎসব দীপাবলি। প্রথা মেনে প্রতিটি বাঙালির ঘরে ঘরে দীপাবলিতে জ্বলে ওঠে আলো। আর এই আলোর উৎসবে মাটির প্রদীপে সরিষার তেল দিয়ে সলতের মাধ্যমে আলো জ্বালানো হয়। পূর্ব পুরুষদের উদ্দেশ্যে পরিবারের সকলেই মাটির প্রদীপ জ্বালিয়ে রাখেন। মৃৎশিল্পীরা এই মাটির প্রদীপ তৈরি করে থাকেন।
এবার সকলে আলোকিত হলেও অন্ধকারেই দিনযাপনের আশঙ্কা করছেন মৃৎশিল্পীরা। এবারে একদিকে সর্ষের তেলের দাম আকাশছোঁয়া, অন্যদিকে বাজারে এলইডি বা চাইনিজ বাল্বের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় মাটির প্রদীপের চাহিদা অনেকটাই কমে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন তাঁরা। তুফানগঞ্জ-১ ব্লকের অন্দরান ফুলবারি-১ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় প্রায় দু’শো পরিবার রয়েছে, যারা মৃৎশিল্পের ওপর নির্ভর করেই সংসার চালায়। তাদের তৈরি মাটির প্রদীপ কোচবিহার জেলার বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে।
দীপাবলিতে যখন সবার ঘর আলোর ঝলকানিতে ভরে ওঠে তখন ওঁদের বাড়ি থাকে অন্ধকার। মৃৎশিল্পী সুধারাম পাল, তুলসীরানি পাল, কণিকা পালরা বলছিলেন, প্রায় দু’বছর ধরে করোনার কারণে পুজো-পার্বন এমনিতেই কমে গিয়েছে। দীপাবলির উপর নির্ভর করে ভালো একটা আয় হত আগে। তবে আগের মতো মাটির প্রদীপের চাহিদা এখন নেই বলেই জানিয়েছেন তাঁরা। এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে সরকারি সাহায্যের আবেদনও জানাচ্ছেন তাঁরা। মৃৎশিল্পী তুলসীরানি পাল বলছিলেন, ‘করোনা, লকডাউন, বৃষ্টির কারণে কোনও কিছুই ঠিকমতো চলছে না এখন।
আমরা কী করবো জানি না। মাটির দাম বেশি, খড়ির দাম বেশি। ঘরের টাকা দিয়েই প্রদীপ বানাতে হচ্ছে। বিক্রিবাট্টাও সেই ভাবে না থাকায় দাম উঠছে না। এই প্রদীপ আমরা খাগড়াবাড়ি, কুঠিবাড়ি, কোচবিহারে বিক্রি করি। কিন্তু চাহিদা সেই ভাবে নেই। কারণ সরষের তেলের এত বেশি দাম যে কেউ আর প্রদীপ কিনতে চাইছে না। ২০০ টাকা কেজি তেল। তাই এখন সবাই মোমবাতি, টুনি বাল্ব জ্বালায়। আমাদের এই মাটির প্রদীপ আর সেইভাবে চলছে না। চাহিদা আগের থেকে অনেক কমে গিয়েছে।’