বাংলার খবর
জলঙ্গির পদ্মার বাঁকে থমকে আছে ২৪ বছর আগের ভোরবেলা

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: ১৯৯৮ সালের ১৩ জানুয়ারি। জলঙ্গি পদ্মার বাঁকে ঘটেছিল বাস দুর্ঘটনা। রমজান মাস, ঘন কুয়াশায় মোড়া ভোর। রোজার সেহরি খেয়ে কাজে বেরিয়েছিলেন কেউ কেউ। ভোরবেলায় অতিরিক্ত মাছের দেখা পাওয়া যায়, ভেবে কয়েকজন নৌকা নিয়ে নেমেছিলেন পদ্মায়।
হটাৎ বিকট শব্দ করে পদ্মার দিকে ছুটে গিয়েছিল পিকনিক ফেরত ছাত্র-ছাত্রীদের বাস। হাড়হিম কনকনে শীতের ঘেরাটোপে, কুয়াশায় অস্পষ্টতায় কিছু বোঝার আগেই পদ্মায় তলিয়ে গিয়েছিল সেই বাসটি। তৎকালীন মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সেই বাস ৭৫ জন ছেলেমেয়েকে নিয়ে ডুব দিয়েছিল পদ্মায়। সেই দুর্ঘনায় মৃত্যু হয়েছিল ৬২ জনের। তাদের অধিকাংশের বাড়ি ছিল নদিয়ার জেলার করিমপুরে থানা এলাকায়। রমজান মাস হওয়ায়, রোজার সেহরি খেয়ে অনেকেই নামাজের যাওয়ার চিন্তা ভাবনা করছিল। শীতের কুয়াশার জন্য অনেকেই আবার লেপের মধ্যে পা ঢুকিয়ে ঘুম ঘুম চোখে বিছানায় কাত। হঠাৎ একটা ভয়ঙ্কর শব্দ, কিসের শব্দ জানতে, ঘর ছেড়ে বেরিয়ে পড়ছিল অনেকেই।
কুয়াশার অন্ধকারে স্থানীয় প্রতিবেশীরা দেখে ধীরে ধীরে তলিয়ে যাচ্ছে একটি বাস। কিছুই করতে পারেননি তারা। পদ্মা পাড়ের রাস্তায় দাঁড়িয়ে ডুবতে থাকা বাসের মানুষের চিৎকার শুনেছিল তারা! উদ্ধারের কিছু স্মৃতি ছড়িয়ে আছে আশপাশের গ্রামেগঞ্জে। তৎকালীন বিধায়ক ইউনুস সরকার, স্থানীয় বাসিন্দা মাসুম আহমেদ, ওই অঞ্চলের বর্তমান প্রধানের মতো মানুষেরা বলেন, ‘আজ সেই ঐতিহাসিক মর্মান্তিক দিন। ১৯৯৮ সালের আজকের দিনেই আমাদের জলঙ্গি পদ্মা নদীতে বাস ডুবে ৬২ জন ছাত্রছাত্রীর মৃত্যু ঘটেছিল। সত্যিই খুব মর্মান্তিক। গ্রামীণ হাসপাতালে সারিসারি মৃতের দেহ। দীর্ঘদিন উদ্ধারের কাজ চললেও মিলেনি অনেকের খোঁজ। সেই দিনটির কথা মনে পড়লে সত্যিই আঁতকে ওঠে প্রাণ।’