বাংলার খবর
সেনার পরিচয় দিয়ে একাধিক মহিলাকে প্রতারণা-বিয়ে! সোনারপুর থেকে গ্রেফতার এক
বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: সেনা কর্মীর পরিচয় দিয়ে একাধিক মহিলার সঙ্গে প্রতারণা করে বিয়ে করার অভিযোগে গ্রেফতার হল এক ব্যক্তি! ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার সোনারপুরে। অভিযুক্ত ওই ব্যক্তির নাম অমিত মিত্র। তাঁর বাড়ি ঝড়খালিতে হলেও সোনারপুরে বাড়ি ভাড়া করে থাকতেন তিনি। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ব্যক্তি একাধিক মহিলাকে বিয়ে করেছিলেন। এমনকি বিভিন্ন এলাকার মানুষদের সঙ্গে প্রতারণা করে বারবার থাকার জায়গা বদল করতেন তিনি। এবং তাঁর মূল টার্গেটই ছিল মহিলারা। সরকারি প্রকল্প থেকে মোটা টাকা অনুদানের লোভ দেখিয়ে মহিলাদের কাছ থেকে মোটা টাকা হাতিয়ে নিতেন ধৃত ওই ব্যক্তি।
সোনারপুর থানার পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত অমিত মিত্র নামে ওই ব্যক্তি এখনও পর্যন্ত ২১ জনের কাছ থেকে গড়ে সাত হাজার টাকা করে হাতিয়েছেন। ওই ব্যক্তির দ্বারা প্রচারিত হওয়ারা অভিযোগ করেছেন, দুই মাসের মধ্যে তাঁদের প্রত্যেককে এক লক্ষ দশ হাজার টাকা করে দেবেন বলে জানিয়েছিলেন ওই ব্যক্তি। কিন্তু এক বছর পেরিয়ে গেলেও সেই টাকা তাঁরা পাননি বলেই দাবি করেছেন। টাকা নেওয়ার পর থেকেই এলাকা থেকে উধাও হয়ে গিয়েছিলেন ওই প্রতারক। অবশেষে বৃহস্পতিবার ওই প্রতারককে হঠাৎই দক্ষিণ কলকাতার রাসবিহারীতে দেখতে পেয়ে ধরে ফেলেন একজন। তারপর তাঁকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
ঘটনার তদন্ত নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে ধৃত ওই ব্যক্তির সোনারপুর এলাকাতেই একাধিক স্ত্রী রয়েছেন। এবং তাঁদের সঙ্গেও প্রতারণা করেছেন তিনি। শীলা হালদার নামে এক মহিলা জানিয়েছেন, ‘বিএসএফ-এ চাকরি করে বলে জানিয়েছিল। আমাদের মধ্যে একটা ভাই-বোনের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ৭ হাজার টাকা জমা রেখে ২ মাসের মধ্যে এক লক্ষ দশ হাজার টাকা দেবে বলে বেশ কয়েকজন মহিলার থেকে টাকা নিয়েছিল। এইভাবে ২১ জন মহিলার কাছ থেকে ও প্রায় ১ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা নিয়েছে। কিন্তু এক বছর হয়ে গেলেও আমাদের সেই টাকা ফেরত দেয়নি। একজনের কাছ থেকে তো চাকরি দেওয়ার নাম করেও টাকা নিয়েছিল। মাস দুয়েক আগেই আমরা ওকে ধরেছিলাম। একজন ওর বাইকের চাবি নিয়ে নিয়েছিল বলে তাকে কুড়ি হাজার টাকা দিয়ে বাইকের চাবি উদ্ধার করে। তারপর থেকে আবারও বেপাত্তা হয়ে গিয়েছিল। তারপর বৃহস্পতিবার ওকে আবারও ধরতে পেরে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছি আমরা।’
শিখা শাস্ত্রী নামে আর এক প্রতারিত জানিয়েছেন, ‘বিএসএফ-এ চাকরি করে বলে জানিয়েছিল। তারপর ভাইয়ের মতো একটা সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল। আমাকে বলেছিল, একটা ফান্ড আছে, সেখানে ৭ হাজার টাকা রাখলে দুমাস পর এক লক্ষ ১০ হাজার টাকা ফেরত পাওয়া যাবে। এবং সেখান থেকে ব্যবসাও করা যাবে বলে জানিয়েছিল। আরও কয়েকজন মহিলাকে বিষয়টা বলার জন্যও আমাকে বলেছিল। সেই মতো কয়েকজন মহিলাকে আমি জোগাড়ও করে দিয়েছিলাম। আমি ওকে ৭ হাজার টাকা সহ ২ কপি ছবি, ভোটার কার্ড, আধার কার্ড, প্যান কার্ডের জেরক্সও দিয়েছিলাম। তারপর ফাইল ট্রান্সফার, ফর্ম ফিলাপের নাম করে আমার থেকে আরও কিছু টাকা নিয়েছিল। তারপর থেকে ওর আর কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। এক বছর পর ফোন সুইচড অফ ছিল। অবশেষে বৃহস্পতিবার ওই ওকে রাসবিহারী থেকে ধরা হয়। তারপর সেখান থেকে বালিগঞ্জ স্টেশনে নিয়ে গিয়ে ট্রেনে করে সোনারপুর নিয়ে এসে থানায় গিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এবং লিখিত অভিযোগও দায়ের করা হয়।’