বাংলার খবর
এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শিবলিঙ্গ নদিয়ায়! শ্রাবণ মাসের প্রথম সোমবার পুজো দিতে ভক্তের ঢল
বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শিবলিঙ্গ রয়েছে আমাদের রাজ্যেই। নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জের শিবনিবাসের শিবলিঙ্গ এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শিবলিঙ্গ। শিবনিবাসে রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায় প্রতিষ্ঠিত শিবলিঙ্গটির উচ্চতা ১১ ফুট ৯ ইঞ্চি। বেড় ৩৬ ফুট। সিঁড়ি দিয়ে উঠে এই শিবলিঙ্গের মাথায় জল ঢালতে হয়। এই শিবলিঙ্গ যেমন উঁচু, তেমনই জাগ্রত বলে বিশ্বাস করেন এলাকার বাসিন্দারা।
ইতিহাস বলছে, মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায়ের হাতে প্রতিষ্ঠিত শিবনিবাসের এই শিবলিঙ্গ শুধু উচ্চতায় পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম নয়, এর ঐতিহাসিক গুরুত্বও যথেষ্ট রয়েছে। কথিত আছে, এই শিবলিঙ্গে পুজো দিয়ে প্রার্থনা করলে যেমন শত্রুর বিনাশ হয়, তেমনই সুখ, সমৃদ্ধিতে ভরে ওঠে পরিবার। রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায় বর্গী দস্যু নসরাৎ খাঁর হাত থেকে নিজেকে এবং পরিবারকে রক্ষা করতে শিবনিবাসে আশ্রয় নিয়েছিলেন। দস্যুর হাত থেকে রক্ষা পেতে মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্র শিবনিবাসের কুলোপুরোহিত রঘুনাথ মিশ্রের কাছে পরিত্রাণের নিদান চান।
কুলোপুরোহিত রঘুনাথ মিশ্র হোম-যজ্ঞ করে রাজাকে পরামর্শ দেন, শিবনিবাসে শিব প্রতিষ্ঠা করলে দস্যু নসরাৎ খাঁর আক্রমণ ঠেকানো যাবে। কারণ দস্যু নসরাত খাঁও ছিলেন শিবের ভক্ত। তাই শিবের উপর তিনি কোনও আঘাত আনবেন না। এছাড়া শিবনিবাসে রাজত্ব স্থাপন করলে রাজ্য শৌর্যে পরিপূর্ণ থাকবে। কুলোপুরোহিত রঘুনাথ মিশ্রের এই পরামর্শ মেনেই রাজা কৃষ্ণচন্দ্র শিবনিবাসে সুউচ্চ শিবলিঙ্গ স্থাপন করে মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। এবং সেখানেই সপরিবারে বসবাস শুরু করেন।
কথিত আছে, শিবনিবাসে সুউচ্চ শিবলিঙ্গ স্থাপনের পর নসরৎ খাঁর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন রাজা কৃষ্ণচন্দ্র। এবং তিনি যুদ্ধে জয়ী হন। এরপরই রাজা কৃষ্ণচন্দ্র শিবকে তুষ্ট করতে নবদ্বীপ থেকে জল নিয়ে এসে শিবের পুজো দেন। সেই থেকে সেখানে শুরু হয় শিবের পুজো। যা আজও চলে আসছে।
স্থানীয়দের মতে, বাবা সমস্ত বিপদ-আপদ থেকে তাঁদের সব সময় রক্ষা করেন। তাই প্রতি শ্রাবণ মাসে, বিশেষ করে শ্রাবণ মাসের প্রতি সোমবারে পুণ্যার্থীদের ঢল নামে শিবনিবাস মন্দিরে। ১৮ তারিখ, শ্রাবণ মাসের প্রথম সোমবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। লাইন দিয়ে প্রচুর মানুষকে পুজো দিতে দেখা গেল। শিবের মাথায় জল ঢাললেন অগণিত ভক্ত। শ্রাবণ মাসের সোমবার কৃষ্ণগঞ্জ ছাড়াও আশপাশের এলাকা এমনকি পার্শ্ববর্তী জেলা থেকেও প্রচুর শিবভক্তরা শিবপুজো করতে শিবনিবাসে আসেন।