বাংলার খবর
লালজলের দুর্গা পুজো বন্ধ হলেই গ্রামে নেমে আসে অশান্তির ছায়া!
বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ : লালজল- ঝাড়গ্রামের পর্যটন মানচিত্রে এক উল্লেখযোগ্য নাম। বেলপাহাড়ির জঙ্গলঘেরা এক পাহার। তারই মধ্যে এক গুহা। অাদিম মানবগুহা বলেই যা পরিচিত। এখানে অাদিম মানুষের ব্যবহৃত জনিষপত্রও উদ্ধার হয়েছে। কথিত অাছে এই গুহায় নাকি মা দুর্গার মূর্তি অাছে। এক সাধু এই গুহায় বসে ধ্যান করতেন। পাশে তাঁর হিংস্র বাঘও থাকত। প্রত্নতাত্ত্বিকরা যখন মূর্তির জন্য খনন শুরু করেছিলেন তখন এক বিষধর সাপ তাঁদের সামনে রুখে দাঁড়ায়। তারপর অার কেউ খনন করার সাহস দেখায়নি। সেই সাধুই প্রথম এখানে দুর্গাপুজার প্রচলন করেছিলেন।
তিনি লালজলের গ্রামবাসীদের বলে যান কোনও অবস্থাতেই যেন পুজো বন্ধ না হয়। গ্রামবাসীদের বক্তব্য একবার পুজা বন্ধ ছিল। সেবারই মাওবাদী অশান্তি নেমে অাসে গ্রামে। জঙ্গলমহলে প্রথম পুলিশ খুন হয় এই লালজলেই। তারপর অার লালজলে কোনওদিন পুজো বন্ধ করেননি গ্রাম বাসীরা। এখন তাঁরা অনেক ভালো অাছেন বলেই দাবি করেছেন। পাহাড়ের উপর গুহা। তার একধাপ নিচে দুর্গা মন্দির, অার পাহাড়ের কোলে সাধু বাবার জন্য অাশ্রম গড়ে তোলা হয়েছিল। সেখানেই হয় নিত্য পুজো। পুজোর তিন দিন ধুমধাম করে চলে পুজো।
বিশেষ করে নবমীর দিন হয় বাসন্তী পুজা। সেদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে ভক্তদের অানাগোনা। পাশ্ববর্তী রাজ্য থেকেও ভক্তরা অাসেন। মেলা বসে। গ্রামের সমস্ত পুরুষ-মহিলা মাথায় ঘট নিয়ে বাদ্য সহযোগে গ্রাম প্রদক্ষিণ করেন। অার লালজল পাহাড়ের উপর থেকে অপরুপ প্রাকৃতিক দৃশ্যর সাথে একাকার হতে ভিড় জমান পর্যটকরাও। যদিও লালজলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে সারা বছরই ভিড় লেগে থাকে। করোনার প্রভাব কমতেই ভিড় বাড়তে শুরু করে এখানে। তাই করোনার আতঙ্ক কাটিয়ে এবার পুজোর জন্য প্রস্তুত হচ্ছে লালজল।।