বাংলার খবর
রাজীব হত্যার সাক্ষী থাকা টুপি ও ব্যাজ পরেই অবসর নিলেন পুলিশ অফিসার

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ : ১৯৯১ সালে ২১ মে। তামিলনাড়ুর শ্রীপেরুমবুদুরে এক নির্বাচনী জনসভায় বক্তব্য রাখার সময় এলটিটিই-র মানববোমায় ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়েছিল তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর দেহ। বিস্ফোরণে কমপক্ষে ১৪ জনের প্রাণ গিয়েছিল। সেই জনসভায় অন্যান্য আধিকারিকদের সঙ্গে নিরাপত্তার দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন কাঞ্চিপুরমের তৎকালীন এএসপি প্রতীপ ভি ফিলিপ। বিস্ফোরণে আহত হলেও কোনও রকমে প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলেন এই আইপিএস অফিসার। তাঁর পরনে থাকা সেই টুপি এবং নাম লেখা ব্যাজট মাটিতে পড়ে গিয়েছিল।
মাঝে কেটে গিয়েছে ৩০ বছর। তবুও চাকরি জীবনের চার বছরের মাথায় সেই ভয়াবহ ঘটনার কথা আজও ভুলতে পারেননি ফিলিপ। রাজীব গান্ধীর হত্যার সাক্ষী থাকা সেই রক্তমাখা টুপি ও ব্যাজ পরেই গত বৃহস্পতিবার ডিজিপি (প্রশিক্ষণ)-এর পদ থেকে অবসর নিলেন তিনি। ৩৪ বছরের কর্মজীবন থেকে অবসর নেওয়ার সময় কেন তিনি এই টুপি ও ব্যাজ পরেছিলেন, তা জানাতে গিয়ে ফিলিপ বলেছেন, ‘চাকরি জীবনের শুরুতেই আমি যে আতঙ্ক ও ভয়াবহতার মধ্যে দিয়ে গিয়েছি, ৩৪ বছরের চাকরি জীবনের শেষে এই টুপি এবং ব্যাজ তারই প্রতীক। পৃথিবীতে আমিই মনে হয় এক মাত্র ব্যক্তি, যে এই অগ্নিপরীক্ষার সাক্ষী থেকেছি।’ সেদিনের সেই ভয়াবহ অভিজ্ঞতা নিয়ে একটি বইও লিখেছেন ফিলিপ।
এই ঘটনাটা তাঁর জীবনে এতটাই দাগ কেটেছিল যে তিনি ঠিকই করে নিয়েছিলেন সেদিনের সেই ঘটনার টুপি ও ব্যাজ পরেই কর্মজীবন শেষ করবেন। সেদিনের সেই ঘটনার পর বিস্ফোরণস্থল থেকে প্রমাণ হিসেবে ফিলিপের রক্ত লাগা টুপি ও ব্যাজ সংগ্রহ করেছিল বিশেষ তদন্তকারী দল। তদন্তের স্বার্থে সেই ব্যাজ ও টুপি সিভিল কোর্টের হেফাজতেই ছিল। অবসরের দিন কয়েক আগে সেই টুপি এবং ব্যাজ পরেই অবসর নেওয়ার অনুমতি চেয়ে অতিরিক্ত দায়রা আদালতের কাছে আবেদন করেছিলেন ফিলিপ।
এই আবেদনের ভিত্তিতেই গত ২৮ সেপ্টেম্বর বিচারক টি চন্দ্রশেখরন এক লক্ষ টাকা ব্যক্তিগত বন্ডের বিনিময়ে এই আইপিএস অফিসারকে শর্তসাপেক্ষে রাজীব হত্যার সাক্ষী থাকা সেই টুপি এবং ব্যাজ দেওয়ার অনুমতি দেন। কাজ মিটে যাওয়ার পর সেই টুপি এবং ব্যাজ আগামী ২৮ অক্টোবর বা তার আগে আদালতকে ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারক। গত বৃহস্পতিবারই তাঁর সেই ইচ্ছা পূরণ হয়েছে। তাই খুব শীঘ্রই সেই টুপি ও ব্যাজ আদালতকে ফিরিয়ে দেবেন বলে জানিয়েছেন ফিলিপ।