বাংলার খবর
পরকীয়া-সমকামী প্রেমের অভিযোগে দুই গৃহবধূকে লাইট পোস্টে বেঁধে বেধড়ক মারধর
বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: মালদহর পর এবার মুর্শিদাবাদ। পরকীয়ার অভিযোগে দুই গৃহবধূকে বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে গণপ্রহারের অভিযোগ উঠল গ্রামবাসীদের বিরুদ্ধে। লাঞ্ছনা, অপমানের সঙ্গে ঝাঁটা, জুতো, লাথি, গালিগালাজ- কোনও কিছুই বাদ পড়ল না। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে মুর্শিদাবাদের সুতি থানার বংশবাটী গ্রামে। এই ঘটনার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যেতেই সর্বত্র তীব্র নিন্দার ঝড় উঠেছে।
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, ওই দুই গৃহবধূর সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরেই একাধিক পুরুষের সম্পর্ক ছিল। দু’জনকেই একাধিক পুরুষের সঙ্গে মেলামেশা করতে দেখা যেত। এমনকি, গ্রামবাসীদের অভিযোগ ওই দুই গৃহবধূ নাকি সমকামীও ছিলেন। মঙ্গলবার রাতে ওই দুই গৃহবধূ বাড়ির বাইরে এসে যোগাযোগ করে বলে অভিযোগ। শুধু তাই নয়, গ্রামবাসীদের আরও অভিযোগ, তাঁরা ঘনিষ্ঠ অবস্থায় দেখেন ওই দুই গৃহবধূকে। তখনই তাঁদের হাতেনাতে ধরে ফেলেন গ্রামবাসীরা। এরপরেই তাঁদের ল্যাম্পপোস্টে বেঁধে চলে বেধড়ক মারধর। শুধু তাই নয়, ঘটনার ভিডিও করে পোস্ট করা হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়।
এই খবর জানাজানি হতেই ঘটনাস্থলে ছুটে আসে সুতি থানার অন্তর্গত আহিরণ ফাঁড়ি পুলিশ। তারাই উত্তেজিত জনতার হাত থেকে ওই দুই গৃহবধূকে উদ্ধার করে। যদিও এই ঘটনায় কাউকেই গ্রেফতার করেনি পুলিশ।
গোটা ঘটনায় গ্রামবাসীদের একাংশের বিরুদ্ধে নীতি পুলিশের অভিযোগ উঠেছে। গ্রামবাসীরা অভিযোগ করেছেন, এই দুই গৃহবধূর জন্যই গ্রামের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। আবার দু’জনকে লাইট পোস্টে বেঁধে যেভাবে মারধর করার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করা হয়েছে, তার সমালোচনায় সরব হয়েছেন বিশিষ্টজনেরাও। তাঁদের দাবি, দুই মহিলাকে এইভাবে প্রকাশ্য দিবালোকে বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে মারধর করা কখনওই সভ্য সমাজের কাজ নয়। যদি কোনও অভিযোগ থেকে থাকে, তাহলে তাঁদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ জানানো উচিত ছিল বলেই দাবি করেছেন তাঁরা। যদিও এই ঘটনার প্রেক্ষিতে ওই দুই গৃহবধূ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন কিনা তা জানা যায়নি। তবে শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। ঘটনায় গ্রামে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।