বাংলার খবর
ছাত্রীকে শাসন করায় স্কুলে ঢুকে শিক্ষিকার শ্লীলতাহানি! হিলিতে হুলস্থুল
বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: এক ছাত্রীকে শাসন করেছিলেন শিক্ষিকা। তাই তাঁকে বিবস্ত্র করে মারধরের অভিযোগ উঠল একদল দুষ্কৃতীর বিরুদ্ধে! শুক্রবার দুপুরে দক্ষিণ দিনাজপুরের হিলি থানার ত্রিমোহিনী প্রতাপ চন্দ্র হাইস্কুলের এই শিক্ষিকা নিগ্রহের প্রতিবাদে শনিবার সকাল থেকেই উত্তপ্ত হয়ে উঠল ত্রিমোহিনী।
জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার ডাবরা এলাকার এক ছাত্রী ক্লাস না করে মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত থাকায় শাসন করেছিলেন শিক্ষিকা। সেই কারণে শুক্রবার দুপুরে স্কুল চলাকালীন ওই ছাত্রীর পরিবার ও এক দল দুষ্কৃতী প্রথমে স্কুলের প্রধান শিক্ষককে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখায়। অভিযোগ, তখনই কয়েকজন শিক্ষিকাদের কমনরুমে ঢুকে অন্যান্য শিক্ষিকাদের সামনেই ওই শিক্ষিকার শাড়ি টেনে খুলে শ্লীলতাহানি করে এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে।
খবর পেয়েই স্কুলে পৌঁছায় বিশাল পুলিশ বাহিনী। এবং ঘটনাস্থল থেকে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেয় পুলিশ। খবর পেয়ে স্কুলে হাজির হন জয়েন্ট বিডিও ও স্কুল পরিদর্শক। ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে শিক্ষিকাদের নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা হয়। এই ঘটনায় রীতিমতো ক্ষোভ ফেটে পড়েন এলাকার বাসিন্দারা। নিন্দার ঝড় ওঠে সর্বত্র। প্রশাসনের পক্ষ থেকে যতই নিরাপত্তার আশ্বাস দেওয়া হোক এদিকে এই ঘটনার পর থেকেই আতঙ্কে রয়েছে নির্যাতিতা ওই স্কুল শিক্ষিকা সহ অন্যান্য শিক্ষিকারাও।
এদিকে এই ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার হিলি-বালুরঘাট জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায় স্থানীয় বাসিন্দারা। বিক্ষোভে শামিল হন স্কুল পড়ুয়ারা, অভিভাবকরাও। প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে বিক্ষোভ ও পথ অবরোধ চলে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক স্কুলে প্রবেশ করলে তাঁর গাড়ির উপরও চড়াও হয় উত্তেজিত জনতা। অবরোধের জেরে আটকে পরে পণ্যবাহী ট্রাক সহ হিলি রুটের সমস্ত যানবাহন। বিক্ষোভ সামলাতে প্রথমে ঘটনা স্থলে পৌঁছায় হিলি থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী! পরে বালুরঘাট থেকে আসে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, ডিএসপি সদর সোমনাথ ঝাঁ সহ বিশাল কমব্যাট ফোর্স। পরে স্কুলের তরফে হিলি থানায় ও জেলা শাসকের কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ জানানো হয়।
বিক্ষোভকারীদের দাবি, রাজনৈতিক চাপে পড়েই প্রধান শিক্ষক অভিযোগ জানাতে দেরি করেন। বিক্ষোভ চলাকালীন প্রধান শিক্ষককের গাড়ি ঘটনাস্থলে আসতেই বিক্ষোভ ফেটে পড়েন অবরোধ কারীরা। ভাঙচুর করা হয় তাঁর গাড়িতে। বিক্ষোভ সামলাতে পুলিশ হিমশিম খেয়ে যায়। এর পরই ঘটনা স্থলে আসেন ডিএসপি সদর সোমনাথ ঝাঁ। শেষে পুলিশি মধ্যস্থতায় প্রধান শিক্ষককে স্কুলে ঢোকানো হলেও বিক্ষোভ বাড়তে থাকে। পুলিশ, প্রশাসন গোটা ঘটনায় তদন্তের আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
এই ঘটনা নিয়ে শনিবার বিকেলে বালুরঘাটে জেলা পুলিশ সুপারের কাছে লিখিতভাবে বিষয়টি জানান বালুরঘাটের বিধায়ক তথা বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অশোক লাহিড়ী। দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তিনি। এই ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার বালুরঘাট নালন্দা বিদ্যাপীঠের শিক্ষক-শিক্ষিকারাও মৌন মিছিল করেন। গোটা ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে এভিবিপি।