বাংলার খবর
জিরাটের সেই স্কুল পরিদর্শন করল হাইকোর্ট নিযুক্ত প্রতিনিধি দল
বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: গঙ্গার পার ভাঙনে বিপজ্জনক হয়ে পড়া জিরাটের চর খয়রামারি প্রাথমিক স্কুল সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।বিচারপতির নির্দেশে শনিবার, খয়রামারি স্কুল পরিদর্শনে যান স্পেশাল অফিসার সুদীপ্ত দাশগুপ্ত। স্কুল ও গঙ্গার পার পরিদর্শনের পর স্থানীয় প্রশাসন ও গ্রামবাসীদের সঙ্গেও বৈঠক করেন তিনি।
প্রসঙ্গত গত সপ্তাহে, হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় আদালতে বলেন, ‘জিরাটের স্কুলের খবর সংবাদ মাধ্যমে জানতে পেরেছি। এভাবে একটি স্কুল চলতে দেওয়া যায় না। যেখানে পড়ুয়া ও শিক্ষকদের জীবন বিপন্ন।’ তারপরই তিনি হাইকোর্টের রেজিস্টারকে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করার নির্দেশ দেন। হুগলি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের প্রধান এবং জিরাট গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানকে হাইকোর্টে হাজির হয়ে জবাব দিতেও নির্দেশ দেন।
গত ২০ জুলাই হুগলি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি শিল্পা নন্দী এবং জিরাট গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সুচন্দ্রা রায় হাইকোর্টে হাজির হয়ে স্কুলের জন্য কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে জানান। সেইদিনই বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দেন, একজন স্পেশাল অফিসার স্কুল পরিদর্শন করে রিপোর্ট দেবেন। এবং এক সপ্তাহের মধ্যে স্কুল পড়ুয়াদের অন্যত্র নিয়ে গিয়ে ক্লাস করাতে হবে।বিপজ্জনক ওই স্কুল বাড়িতে কোনও ক্লাস করা যাবে না। দ্রুত নতুন স্কুল বাড়ি তৈরির কাজও শুরু করতে হবে।
দালতের এই নির্দেশের পর শনিবার হাইকোর্টের প্রতিনিধি দল আসেন হুগলির বলাগড়ে জিরাট গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার চর খয়রামারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। সুদীপ্ত দাসগুপ্তর নেতৃত্বে র্পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দল স্কুল ঘুরে দেখেন। কথা বলেন স্কুলের শিক্ষক থেকে শুরু করে আভিভাবকদের সঙ্গেও।পাশাপাশি গ্রামের মানুষদের সঙ্গেও কথা বলে জানার চেষ্টা করেন তাঁদের মতামত। সকলের মতামত লিখিত ভাবে নিয়ে তাঁদের দিয়ে স্বাক্ষর করিয়ে নেওয়া হয়।
জিরাট গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান সুচন্দ্রা রায় বলেন, ‘আদালতের নির্দেশে শনিবার এক প্রতিনিধি দল স্কুল পরিদর্শনএ এসেছিল। তাঁরা সকলের সঙ্গে কথা বলেছেন।আদালতে আমি যা বলেছিলাম, সেটা ওনারাও দেখলেন। আদালত যেমন বলেছে সেই মতো স্কুল থেকে বাচ্চাদের অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য একটি অস্থায়ী জায়গা তৈরি করা হচ্ছে। দু-চার দিনের মধ্যেই সেটা তৈরি হয়ে যাবে। পাকাপাকি ভাবে নতুন স্কুল বাড়ি তৈরি করতে সাত-আট মাস সময় লাগবে। তারপরই সেখানে পড়ুয়াদের নিয়ে স্কুল চলবে।’
বর্তমান স্কুল থেকে প্রায় তিনশো মিটার দূরে ১৩ বাই ৩০ ফুট এর একটি অস্থায়ী টিনের ঘর তৈরি হচ্ছে। প্রতিনিধি দল নতুন স্কুল বাড়ি যেখানে তৈরি হবে সেই জমিও ঘুরে দেখেন। তাঁরা জানিয়েছেন, সমস্ত তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। রিপোর্ট আদালতে পেশ করা হবে।
উল্লেখ্য, জিরাটের চর খয়রামারি প্রাথমিক স্কুলের ভয়ানক পরিস্থিতির কথা কিছুদিন আগেই বেঙ্গল এক্সপ্রেসে প্রকাশিত হয়েছিল। গঙ্গার পাড় ভাঙতে ভাঙতে একদম স্কুলের দরজায় চলে এসেছে। স্কুলের জানালা দিয়ে উঁকি মারলেই দেখা যায় গঙ্গা। যে কোনও দিন গঙ্গায় তলিয়ে যেতে পারে এই স্কুল। এই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির মধ্যেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলছিল স্কুল। এই খবর আদালতের কাছে পৌঁছতেই যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারপতি।