বাংলার খবর
শ্রীরামপুরের আটচালা মন্দিরের আদলে তৈরি হেনরি মার্টিন প্যাগোডা
বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: ঐতিহ্য ও ইতিহাসের মেলবন্ধনের শহর শ্রীরামপুর। এই শহরের আনাচে কানাচে লুকিয়ে আছে অতীতের বিভিন্ন ইতিহাস। তেমনই একটি জায়গা হল হেনরি মার্টিন প্যাগোডা। গঙ্গার ধারে নিরালায় গাছগাছালিতে ঘেরা আটচালা এই প্যাগোডা প্রথমে ছিল রাধাবল্লব মন্দির। যা ১৬৭৭ সালে রুদ্ররাম পণ্ডিত দ্বারা নির্মাণ করা হয়।
নদী ক্ষয়ের কারণে এই রাধাবল্লব মন্দিরটি পরিত্যক্ত হয়েছিল। পরে ১৭৬৪ সালে কলকাতার নয়নচাঁদ মল্লিক দ্বারা একটু দূরে একটি নতুন ৬০ ফুট আটচালা মন্দির তৈরি করা হয়েছিল এবং তখন থেকে রাধাবল্লভ এবং রাধিকার দেবতাদের পূজা করা হয় সেই স্থানে।
অষ্টাদশ শতাব্দীর মাঝামাঝি থেকে যখন পুরানো আটচালা মন্দিরটি পরিত্যক্ত হয়েছিল, তখন এটি রেভ ডেভিড ব্রাউন কিনেছিলেন। সে সময় শ্রীরামপুর ড্যানিশদের শাসনাধীন ছিল। বিখ্যাত ধর্মপ্রচারক হেনরি মার্টিন কয়েক বছর সেখানে বসবাস করেন। তিনি এই মন্দিরটিকে খ্রিস্টান চ্যাপেলে রূপান্তরিত করেন। এরপর এটি হেনরি মার্টিনের প্যাগোডা নামে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। পরবর্তীতে বেশ কয়েকটি গির্জা প্রতিষ্ঠার ফলে এই কাঠামোটি তার গুরুত্ব হারায় এবং এটি আবার নির্জন স্থানে পরিণত হয়।
এমনকি এই মন্দিরের উপর নেমে আসে ইংরেজদের অত্যাচারও। সেই সময় জেলেদের গঙ্গায় মাছ ধরতে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছিল ইংরেজদের তরফে। ইংরেজরা ক্ষুব্ধ হয়ে এই মন্দিরের উপরে কামানোর গোলা বর্ষণ করেন। সেই গোলাবর্ষণের দাগ এখনো বিদ্যমান এই মন্দিরের দেওয়ালে। দীর্ঘকাল ভগ্নদশায় থাকার পর বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ সরকার কর্তৃক এই প্যাগোডার সংরক্ষণ করা হয়েছে।